বিতাড়িত প্রধান শিক্ষককে পুনর্বহালে আ.লীগ-বিএনপির চেষ্টা রুখে দিল জনতা

গাজীপুর মহানগরের ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের পূবাইল উচ্চ বিদ্যালয়ে অনিয়ম-দুর্নীতিতে অভিযুক্ত সেই প্রধান শিক্ষক রুবীকে জোর করে পুনর্বহালের চেষ্টা করেছেন স্থানীয় কয়েকটি দলের নেতাকর্মীরা। তবে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা বিতাড়িত রুবী বেগমকে পুনর্বহালের চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়েছেন।
রোববার সকাল ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জানান, রুবী বেগম এর আগে তিন মাসের ছুটি কাটিয়ে আবার ছয় মাসের ছুটিতে আছেন। এই মুহূর্তে তার কর্মক্ষেত্রে ফিরে আসার ঘটনাকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত পরিস্থিতি নতুন বছরে শিক্ষার্থী ভর্তির কাজ ব্যাহত করবে।
সরেজমিনে জানা যায়, স্থানীয় বিএনপি ও আওয়ামী লীগের একটা অংশ পার্শ্ববর্তী বাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জামানের স্ত্রী রুবীকে বিদ্যালয়ে পুনর্বহালের ঘোষণা দেয় শনিবার বিকালে।
পূর্বঘোষণা অনুযায়ী রোববার সকালে তাকে জোরপূর্বক পুনর্বহাল করতে চেষ্টা করে তারা। খবর পেয়ে ছাত্র-জনতা, অভিভাবক, জামাত-শিবিরের নেতাকর্মীরা পূবাইল উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে এই চেষ্টা প্রতিহত করে দেয়।
স্কুলে প্রবেশ করতে না পেরে রুবী বেগম পূবাইল থানার ভেতরে গিয়ে অবস্থান নেন। পরে পুলিশের দুটি গাড়ি ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
এমন ঘটনা এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় ও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। বিতাড়িত পূবাইল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রুবী বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা। আমি বিদ্যালয়ে যোগ দিয়ে পুনর্বহালের আবেদন করলে পুনর্বহাল করে তেবে বলেছে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। তাই বিদ্যালয়ে প্রবেশের চেষ্টা করেছি।’
প্রতিবাদকারী শিক্ষার্থীরা জানায়, প্রধান শিক্ষক রবী বেগমের ব্যক্তিগত রোষানলে পড়ে খেলাধুলাসহ অনেক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছে তারা।
পূবাইল থানা জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট শামীম মৃধা জানান, ফ্যাসিবাদের দোসর, অযোগ্য, অনিয়ম-দুর্নীতিতে নিমজ্জিত রুবীকে ইতোমধ্যে ছাত্র-জনতা বিদ্যালয় থেকে অপসারণ করেছে। তার বিরুদ্ধে জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। বিতর্কিত রুবীকে পুনর্বহাল মেনে নেয়া হবে না।
৪১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আনোয়ার দেওয়ান জানান, বিএনপির নেতাকর্মীরা জোরপূর্বক কাউকে স্কুলে পুনর্বহাল করতে যায়নি। আইন অনুযায়ী যা হওয়ার হবে।
গাজীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রেভিনিউ সোহেল রানা জানান, ‘তিন মাসের বেশি বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত, তা বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জানালে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। তাছাড়া ওনার (রুবী) বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
উদ্ভুত পরিস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে পূবাইল থানার ওসি শেখ আমিরুল ইসলাম জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত। প্রধান শিক্ষককে বিদ্যালয়ে আইন অনুযায়ী ঢুকতে হবে, আবার তাকে বহিষ্কার করতে চাইলে আইনের মাধ্যমেই হতে হবে। শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে আমরা সচেষ্ট আছি।’গাজীপুর জেলা প্রশাসক নাফিসা আরেফিন জানান, তিনি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে (শিক্ষাকে) বিষয়টি দ্রুত সুরাহা করতে বলে দিচ্ছেন। (ঢাকাটাইমস/২৯ডিসিম্বর/মোআ)

মন্তব্য করুন