কুমিল্লায় বিএনপি কার্যালয়ে হামলা ও আগুন দেওয়ার ঘটনায় মামলা 

জাহিদ হাসান নাইম, কুমিল্লা
  প্রকাশিত : ২০ মে ২০২৫, ০৯:৩২| আপডেট : ২০ মে ২০২৫, ১১:২১
অ- অ+

সম্প্রতি কুমিল্লা মহানগর ও জেলা বিএনপির কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। মামলায় পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে আরও ২০-৩০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। কুমিল্লা কোতোয়ালি থানায় মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ মোল্লা টিপু এ মামলা করেন।

সোমবার সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইউসুফ মোল্লা টিপু।

কুমিল্লা মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. ইউসুফ মোল্লা মামলার লিখিত অভিযোগে দাবি করেছেন, শহরের কান্দিরপাড় এলাকায় দলীয় কার্যালয়ে সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়েছে। এতে বিএনপির পদবঞ্চিত দাবি করা কিছু সন্ত্রাসী জড়িত রয়েছে যারা বিএনপির গায়ে দাগ লাগাতে চায়।

মামলার আসামিরা হলেন— কুমিল্লা নগরীর পশ্চিম ধর্মসাগর পাড় এলাকার রশিদ মিয়ার ছেলে মো. মহসিন (৩২), আশ্রাফপুর ইয়াসিন মার্কেট এলাকার অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির ছেলে সালাহ উদ্দিন ওরফে রকি (৩০), শাসনগাছা দফাদার বাড়ি এলাকার অজ্ঞাত পিতার ছেলে মো. সোহাগ হোসেন (৩০), কালিয়াজুড়ি এলাকার সাইফুল ইসলাম (২৫), এবং পাঁচথুবী ইউনিয়নের শ্রীপুর এলাকার মারুফ আহমেদ (২৪)সহ আরো অজ্ঞাতনামা ২০/৩০ জন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ১৭ মে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ রোডে অবস্থিত বিএনপির কার্যালয়ের সামনে দলবদ্ধভাবে হামলা চালায় অভিযুক্তরা। তারা অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র, লোহার রড, লাঠি, চাপাতিসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে কার্যালয়ের সামনে এসে উত্তেজনাকর ও উসকানিমূলক স্লোগান দেয়। এরপর একপর্যায়ে তারা দলীয় কার্যালয়ের ভিতরে ঢুকে ভাঙচুর ও তাণ্ডব চালায়।

হামলাকারীরা দলীয় অফিসের দেয়ালে ঝুলানো শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি নামিয়ে এনে মাটিতে ফেলে দেয়। তারা অফিসের চেয়ার-টেবিল, দরজা-জানালা ভেঙে ফেলে এবং গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ছিঁড়ে ফেলে দেয়। অভিযোগে বলা হয়, তারা কার্যালয়ের আসবাবপত্রে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। তবে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও পথচারীদের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

এ সময় হামলাকারীরা ককটেল বিস্ফোরণের মাধ্যমে ভয় ও আতঙ্ক সৃষ্টি করে। বিস্ফোরণের শব্দে আশপাশের এলাকা কেঁপে ওঠে এবং সাধারণ মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় পড়ে। হামলাকারীরা পরে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। পুরো ঘটনায় বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

মো. ইউসুফ মোল্লা জানান, ১৫ মে কুমিল্লা মহানগর ও দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের নতুন কমিটি ঘোষণার পর থেকেই কিছু স্বার্থান্বেষী মহল এই কমিটি বাতিলের দাবিতে অপতৎপরতা চালিয়ে আসছিল। অভিযুক্তরা নিজেদের পুরোনো ত্যাগী ও পদবঞ্চিত কর্মী দাবি করে শহরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা চালায়। তিনি অভিযোগ করেন, এই হামলা ছিল পূর্বপরিকল্পিত এবং দলের অভ্যন্তরে বিভ্রান্তি তৈরির গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ।

তিনি আরও জানান, ঘটনার পরপরই তিনি কার্যালয়ে ছুটে যান এবং উপস্থিত প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করেন। পাশের দোকানগুলোর সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে হামলাকারীদের শনাক্ত করেন। এরপর দলীয় ঊর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দের পরামর্শে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।

অভিযোগটি কুমিল্লা মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি নাহিদ রানার মাধ্যমে থানায় জমা দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ মোল্লা টিপু মুঠোফোনে বলেন, “দলের ভিতরে কোন্দল সৃষ্টি করার জন্য যারা এমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করেছে তারা আমাদের দলের কেউ না। তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি আইনি ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হবে।”

কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মহিনুল ইসলাম বলেন, “আমরা মামলাটি গ্রহণ করেছি। ইতিমধ্যেই আসামিদের ধরতে অভিযান পরিচালনা করছি। আশা করছি অতি দ্রুতই আসামিরা ধরা পড়বে।”

(ঢাকাটাইমস/২০মে/এফএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
সং‌র‌ক্ষিত নারী আসনের সাবেক এম‌পি লায়লা পারভীন‌ গ্রেপ্তার 
সৌদি আরবে আরও এক হজযাত্রীর মৃত্যু
বেনাপোল সীমান্ত থেকে ২ কোটি  টাকার ভারতীয় চোরাই পণ্য জব্দ
নারী নির্যাতনের মামলায় কণ্ঠশিল্পী নোবেল গ্রেপ্তার
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা