রাঙ্গাবালীর অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি ‘হেয়ার আইল্যান্ড’

ঝাউবাগান, বিস্তীর্ণ জলরাশি, রং-বেরঙের অতিথি পাখির কোলাহল, পাখা মেলে মুক্ত আকাশে ওড়াউড়ি আর সমুদ্রের জলে খুনসুটি। সাদা বক, বালিহাঁস, পানকৌড়ি ও গাঙচিলসহ নানা পাখির অবাধ বিচরণ। গর্ত থেকে বের হয়ে আবার ঢুকে পড়া, এমন লুকোচুরিতে ব্যস্ত লাল কাঁকড়া। কখনো আবার দল বেঁধে বালুময় দ্বীপে ছুটোছুটি। এসবের পাশাপাশি সৈকতে দাঁড়িয়ে দেখা যায় সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত। প্রকৃতির এমন মনোমুগ্ধকর দৃশ্যের দেখা মেলে পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীর চর হেয়ার তথা অপরূপ সৌন্দযের্র লীলাভূমি ‘হেয়ার আইল্যান্ড’। তিনদিকে নদী ও একদিকে বঙ্গোপসাগরের কোলঘেঁষা এই দ্বীপ স্থানীয়দের কাছে পরিচিত ‘চর হেয়ার’ নামে।। গুগল ম্যাপে যার নাম ‘হেয়ার আইল্যান্ড’।
রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে এর অবস্থান। ডিম্বাকৃতির এই দ্বীপের সৌন্দর্য আকৃষ্ট করবে যেকোনো পর্যটককে।
বঙ্গোপসাগরের বুক চিরে জেগে ওঠা পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার এই দ্বীপের সৌন্দর্য যেকোনো ভ্রমণপিপাসু, পর্যটকের নজর কাড়বে। সূর্যোদয়-সূর্যাস্ত, সবুজ বনায়ন, দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত, অতিথি পাখির কোলাহলসহ নৈসর্গিক সৌন্দর্যে ভরপুর দ্বীপটিতে যেন কমতি নেই কোনোকিছুর। এটা হতে পারে পর্যটনের নতুন আকর্ষণীয় স্পট।
পর্যটকরা বলছেন, পরিকল্পিত উন্নয়নে দক্ষিণাঞ্চলের পর্যটন শিল্পে ‘হেয়ার আইল্যান্ড’ নতুন দিগন্তের সূচনা করতে পারে। বিদেশি পর্যটকদের জন্য থাইল্যান্ডের ফিফি আইল্যান্ড কিংবা ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপের মতো করে সাজানো যায় এই দ্বীপকে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে কক্সবাজার, কুয়াকাটা কিংবা সুন্দরবনের চেয়ে কোনো অংশেই কমতি নেই এই দ্বীপের। এ দ্বীপে আসলে বিশেষ সময়ে দেখা মিলতে পারে বন্য হরিণেরও।
হেয়ার আইল্যান্ড ছাড়াও নয়নাভিরাম সৌন্দর্যে ঘেরা এই উপজেলার সোনারচর, জাহাজমারা ও তুফানিয়া নিয়ে পর্যটন জোন করা হলে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে পারবে। দক্ষিণাঞ্চলে পর্যটন শিল্পে যুক্ত হবে নতুন এক দিগন্ত।
এখানে ঘুরতে এসে মুগ্ধ পর্যটকরা বলেন, এখানের প্রকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে ভালো লাগছে। ঘুরে দেখার মতো অনেক কিছু রয়েছে এখানে। প্রকৃতিও দেখতে বেশ সুন্দর। এখানকার অতিথি পাখি, লাল কাঁকড়া আমাদের মুগ্ধ করেছে। এখানে সূর্যাস্ত ও সূর্যোদয় এক সঙ্গে দেখা যায়। এছাড়া চর হেয়ার হচ্ছে বনাঞ্চলে ঘেরা খুবই অনিন্দ্য সুন্দর একটি এলাকা।
বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের জানান, উপকূলীয় এলাকার পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে মাস্টারপ্লান হাতে নেওয়া হয়েছে। জলপথে বেসরকারি উদ্যোগে কক্সবাজার থেকে শুরু করে সুন্দরবন পর্যন্ত পর্যটকদের আসা-যাওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
রাঙ্গাবালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইকবাল হাসান বলেন, এ অঞ্চলের পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।
(ঢাকা টাইমস/০৯জানুয়ারি/এসএ)

মন্তব্য করুন