সৌদি বৈঠকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি নিয়ে অগ্রগতি আশা করছে রাশিয়া

ইউক্রেনের সঙ্গে তিন বছরের সংঘাত বন্ধের লক্ষ্যে রাশিয়া সৌদি আরবে অনুষ্ঠেয় আলোচনায় কিছুটা অগ্রগতি আশা করছে বলে জানিয়েছে দেশটির একজন আলোচক। সোমবার অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই বৈঠকের আগে যুক্তরাষ্ট্র পৃথকভাবে ইউক্রেন ও রাশিয়ার প্রতিনিধিদের সঙ্গে সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।
রবিবার মস্কো থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
মস্কো যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের প্রস্তাবিত পূর্ণ ও নিঃশর্ত ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি প্রত্যাখ্যান করেছে। এর পরিবর্তে রাশিয়া শুধু জ্বালানি অবকাঠামোর ওপর বিমান হামলা বন্ধের প্রস্তাব দিয়েছে।
সেই প্রস্তাব সত্ত্বেও উভয় পক্ষই আলোচনার আগে বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। শুক্রবার রাতে দক্ষিণ ইউক্রেনের জাপোরিঝিয়া শহরে রাশিয়ার হামলায় একটি পরিবারের তিনজনের মৃত্যু হয়েছে, যা ইউক্রেনীয় কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
রবিবার ইউক্রেনের জরুরি পরিষেবা জানিয়েছে, রাশিয়া কিয়েভে ড্রোন হামলা চালিয়েছে। ফলে অ্যাপার্টমেন্ট ভবনগুলোতে আঘাত করেছে এবং আগুন লেগে কমপক্ষে দুইজন নিহত হয়েছে।
এদিন কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো বলেছেন, শত্রুদের বিশাল আক্রমণে শহরের বেশ কয়েকটি জেলায় ধ্বংসাবশেষ পড়ে আছে এবং সাতজন আহত হয়েছেন।
সোমবার সৌদি আরবে ইউক্রেনীয় এবং রাশিয়ান প্রতিনিধিদের সঙ্গে মার্কিন আলোচকরা আলাদাভাবে বৈঠক করবেন, যাকে মার্কিন রাষ্ট্রদূত কিথ কেলগ হোটেল কক্ষের মধ্যে ‘শাটল কূটনীতি’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন।
রাশিয়ান প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন দেশটির সিনেটর গ্রিগরি কারাসিন। তিনি বলেন, ‘আমরা অন্তত কিছুটা অগ্রগতি আশা করছি।’
এদিকে রাশিয়ার আলোচকদের নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ তারা সাধারণত কূটনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর অন্তর্ভুক্ত নন। আলোচক কারাসিন একজন পেশাদার কূটনীতিক, বর্তমানে তিনি রাশিয়ার উচ্চকক্ষ সংসদ সদস্য। আর দ্বিতীয় আলোচক সের্গেই বেসেদা রাশিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা এফএসবির একজন উপদেষ্টা।
একজন জ্যেষ্ঠ ইউক্রেনীয় কর্মকর্তা এক দিন আগে এএফপিকে বলেছিলেন, কিয়েভ আশা করছে, জ্বালানি, অবকাঠামো এবং সমুদ্রে আক্রমণের জন্য ‘অন্তত’ আংশিক যুদ্ধবিরতিতে চুক্তি হবে। কিয়েভ তার প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে আলোচনায় পাঠাচ্ছে বলে জানিয়েছে।
কারাসিন রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মালিকানাধীন জাভেজদাকে বলেন, ‘আমরা অন্তত একটি সমস্যার সমাধানের জন্য লড়াই করার মনোভাব নিয়ে যাচ্ছি।’ রবিবার রুশ প্রতিনিধিদল সৌদি আরবের উদ্দেশে রওনা দেবে এবং মঙ্গলবার দেশে ফিরে আসবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
২০১৪ সালে এফএসবি স্বীকার করে যে, দেশটির ইইউপন্থি বিপ্লবের মাঝামাঝি সময়ে ইউক্রেনের রাজধানীতে রক্তাক্ত অভিযানের সময় বেসেদা কিয়েভে ছিলেন।
ইউক্রেন রাশিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে, তারা সত্যিকার অর্থে শান্তি চায় না এবং তারা তাদের চলমান হামলার নিন্দা জানিয়েছে। যদিও গত মঙ্গলবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, তিনি তার সেনাবাহিনীকে ইউক্রেনীয় জ্বালানি কেন্দ্রগুলোকে লক্ষ্যবস্তু বানাতে নিষেধ করেছেন।
(ঢাকাটাইমস/২৩মার্চ/এজে)

মন্তব্য করুন