আদালতে ভাঙচুর: দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সুপ্রিম কোর্টের চিঠি

চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের এজলাস কক্ষে ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িত আইনজীবীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলকে চিঠি দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নির্দেশে সোমবার বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল বাসেত মজুমদার বরাবর এই চিঠি পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, আইনজীবীরা আইন পেশায় নিয়োজিত থাকলেও এজলাস ভাঙচুর ও মামলার মূল্যবান নথি তছনছের যে ঘটনা ঘটিয়েছেন তা কখনোই কাম্য নয়। নিঃসন্দেহে এই কর্মকাণ্ড নিন্দনীয় ও গুরুতর পেশাগত অসদাচরণের শামিল। এরূপ আচরণকারী আইনজীবীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ ব্যতীত অন্য কোনো বিকল্প নেই। এমতাবস্থায় আইনজীবীদের নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ হিসেবে বার কাউন্সিল এ ঘটনায় জড়িত আইনজীবীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
মানবপাচার মামলায় চট্টগ্রাম আদালতে এক আইনজীবী ও তার স্ত্রীকে জামিন নামঞ্জুর করায় চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের এজলাস কক্ষে ভাঙচুরের ঘটনায় গত ১৯ জানুয়ারি তদন্ত কমিটি গঠন করেন প্রধান বিচারপতি। সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল সৈয়দ আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার (প্রশাসন ও বিচার) সাব্বির ফয়েজকে সদস্য সচিব ও চট্টগ্রামের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হুসেইন মোহাম্মদ সাজ্জাদকে কমিটির সদস্য করা হয়েছে।
গত ১৮ জানুয়ারি মানবপাচার আইনের মামলার আসামি জামাল উদ্দিন নামের ওই আইনজীবীর জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর পর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট-১ এর আদালত কক্ষে ভাঙচুর চালান তার পক্ষের আইনজীবীরা। এ সময় বাধা দিতে গেলে তারা পুলিশের সঙ্গেও হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। এ পরিস্থিতিতে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মহানগর হাকিম সাহাদাৎ হোসেন ভূঁইয়া এজলাস ছেড়ে নিজের খাস কামরায় চলে যান। এরপর জেলা আইনজীবী সমিতির নেতা এবং জ্যেষ্ঠ আইনজীবীরা বিচারকের খাস কামরায় প্রবেশ করে মিটমাট করার চেষ্টা করেন। এরপর চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট-১ এর আদালতে পুনরায় শুনানি করার পর চার হাজার টাকা বন্ডে ওই আইনজীবীর জামিন মঞ্জুর করা হয় বলে জানান এক আইনজীবী।
ওই ঘটনার পর দেশের অধঃস্তন আদালত বা বিচার বিভাগীয় কার্যক্রমে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটলে তা তাৎক্ষণিকভাবে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল কার্যালয়কে জানাতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। গত ১৮ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার আবু সৈয়দ দিলজার হোসেন স্বাক্ষরিত সার্কুলারে এ নির্দেশ দেয়া হয়।
সম্প্রতি দেশের অধঃস্তন আদালত বা বিচার বিভাগীয় কার্যক্রম সংশ্লিষ্ট নানা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটার পরিপ্রেক্ষিতে এই সার্কুলার জারি করা হয়েছে।
(ঢাকাটাইমস/২৩জানুয়ারি/এমএবি/জেবি)

মন্তব্য করুন