পোল্ট্রিখাদ্যে ট্যানারি বর্জ্য নয়: আপিল বিভাগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ০৯ এপ্রিল ২০১৭, ১১:৩২| আপডেট : ০৯ এপ্রিল ২০১৭, ১২:৫৪
অ- অ+

মাছ, মুরগি ও পশু-পাখির খাবার তৈরিতে ট্যানারি শিল্পের বর্জ্য ব্যবহার বন্ধে হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছিল, আপিল বিভাগও সেই রায় বহাল রেখেছে। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ বুধবার এ রায় ঘোষণা করে।

রিটকারী আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

২০১১ সালের ২১ জুলাই হাইকোর্ট ট্যানারি বর্জ্য দিয়ে মাছ-মুরগির খাবার তৈরির কারখানা এক মাসের মধ্যে বন্ধের দিয়েছিল। পাশাপাশি এ কাজের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে মৎস্য ও পশু খাদ্য আইনে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ফিশ মিট ও অ্যানিমেল গ্লু প্রস্তুতকারক বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সাধারণ সম্পাদক গোলাম সারওয়ার এই লিভ টু আপিলটি করেন। ২০১৬ সালের ৭ ডিসেম্বর আপিল বিভাগ তাদের ওই আবেদন খারিজ করে দেন। তবে খারিজ করা ওই আবেদন পুনরুজ্জীবিত করার জন্য আবারও আবেদন করা হয়। ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ বুধবার তা খারিজ করে দেয়া হয়। ফলে ট্যানারি বর্জ্য দিয়ে মাছ-মুরগির খাবার তৈরি বন্ধই রইল।

ট্যানারি বর্জ্য দিয়ে তৈরি করা খাদ্য মুরগি ও মাছ উভয়ের জন্যই অস্বাস্থ্যকর দাবি করে ২০১০ সালের ২৬ জুলাই জনস্বার্থে একটি রিট করেন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে মনজিল মোরসেদ।

আবেদনে বলা হয়, ট্যানারি বর্জ্য ব্যবহার করে তৈরি করা খাদ্য মুরগি ও মাছ উভয়ের জন্যই অস্বাস্থ্যকর। এইসব অস্বাস্থ্যকর খাদ্য দিয়ে চাষ করা মুরগি ও মাছ খেলে মানুষের জন্যও মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে।

পোল্ট্রিখাদ্যে ট্যানারির বর্জ্য জনস্বাস্থ্যের হুমকি

ট্যানারির বিষাক্ত বর্জ্য দিয়ে তৈরি মাছ, মুরগি ও পশু-পাখির খাবারে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের কেমিকেল। এ ধরনের খাবারে মাত্রাতিরিক্ত ক্রোমিয়াম রয়েছে। এটি মানবদেহের জন্য অনেক ক্ষতিকর। আর এ খাবার মুরগি খেলে তা মুরগির মাধ্যমে ঢুকে পড়ে মানবদেহে।

গবেষণায় দেখা গেছে, ট্যানারির বর্জ্য দিয়ে তৈরি খাবার থেকে ক্রোমিয়াম মাছ ও মুরগির দেহের বিভিন্ন অংশে যেমন চামড়া, মাংস, যকৃৎ, হৃদপিণ্ড, মস্তিষ্ক ও হাড়ের ভেতরে জমা হয়। দুই মাস এ বিষাক্ত খাবার খাওয়ানোর পর মাছ ও মুরগিতে ০.৩২ মিলিগ্রাম থেকে ৪ দশমিক ৫৬ মিলিগ্রাম পর্যন্ত ক্রোমিয়াম জমা হয়। যা মানবদেহের সহনীয় মাত্রার চেয়ে কয়েকশ গুণ বেশি।

আন্তর্জাতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, মাত্রাতিরিক্ত ক্রোমিয়াম মানবদেহের বিভিন্ন অঙ্গ বিশেষ করে লিভার, কিডনি ও মস্তিষ্কে জমা থাকে এবং ধীরে ধীরে ওইসব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ অকার্যকর করে ফেলে। এছাড়া ক্যান্সার, হৃদরোগ, গ্যাসট্রিক আলসারে হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। কিডনি ও লিভার বিকল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। শেষ পরিণতি হিসেবে মানুষ ঢলে পড়ে মৃত্যুর কোলে।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, ক্রোমিয়াম থেকে কেবল ক্যান্সার, হৃদরোগ, আলসার, কিডনির রোগই নয়, মানবদেহে অতিরিক্ত ক্রোমিয়াম প্রবেশ করলে পুরুষত্বহীনতা, অকাল প্রসব, বিকলাঙ্গ শিশুর জন্ম, অ্যাজমা, শ্বাসকষ্ট, চর্মরোগও হয়ে থাকে।

(ঢাকাটাইমস/০৯ এপ্রিল/এমএবি/জেডএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
মোহাম্মদপুরে ৩৮০০ পিস ইয়াবাসহ মাদক কারবারি গ্রেপ্তার
সাংবাদিক সাইদুরের প্রাণনাশের হুমকির প্রতিবাদে সাতক্ষীরায় বিক্ষোভ 
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জুলাই গণহত্যার তদন্ত রিপোর্ট দাখিল সোমবার
এবার বাংলাদেশের চার টিভি চ্যানেল ইউটিউবে বন্ধ করল ভারত
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা