কানাডিয়ান ইমিগ্রেশন, একটি প্রসেস, প্রোডাক্ট নয়

মাহমুদা নাসরিন
 | প্রকাশিত : ০৩ আগস্ট ২০১৭, ১২:০৪

৩০৯৮, ডানফোর্থ এভিনিউ, রুম নাম্বার ২০৫ এর ক্যানবাংলা ইমিগ্রেশন সার্ভিসেস এর অফিসে বসলাম। অনেক ক্লায়েন্ট এর মাঝে দুই জনের মধ্যে একটা যোগসূত্র পেলাম। একজন তাঁর বাবা মায়ের জন্য সুপারভিসার আবেদন করতে চান এবং আরেকজন তাঁর বাবা মাকে স্পন্সর করতে চান।

: ‘দুইলাখ কানাডিয়ান ডলার তো আমার নেই, আমিতো তাহলে আমার বাবা মাকে সুপারভিসায় কানাডায় আনতে পারবো না তাই না আপা?’

:‘আপা আমি তো স্পনসরশিপ এর লটারিতে জিতেছি, আমার মাকে এখন আমি স্পন্সর করতে চাই, কিন্তু আমার ইনকাম তো অনেক কম তাহলে কীভাবে উনাকে আনব?’।

এ প্রসঙ্গে বলে রাখি, এ বছর জানুয়ারি মাসে বাবা-মা অথবা দাদা-দাদীকে স্পনসর করার জন্য আইআরসিসি এক্সপ্রেশন অফ ইন্টারেস্ট কল করেছিল। ওই ফ্রি ফর্মে আয় সংক্রান্ত কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য চাওয়া হয়নি: ফলে অনেকেই আবেদন করেছিলেন এবং লটারিতেও জিতে গেছেন। লটারিতে ১০ হাজার আবেদনকারীকে নির্বাচিত করা হয়েছে। এখন যখন ফিসহ মূল আবেদন করতে বলা হয়েছে, তখন অনেকেই বলছেন, আমি লটারিতে জিতলেও আমার তো অত ইনকাম নেই: আবার অনেকেই বলছেন আমার তো অনেক বেশি ইনকাম অথচ দেখেন আমি লটারিতে জিততে পারলাম না।

সুপারভিসার ব্যাপারে অনেকেই মনে করেন বোধ হয় এক লক্ষ ডলার দিয়েই ইন্সুরেন্স কিনতে হবে কিন্তু ধারণাটা আসলে ঠিক নয়। ইন্সুরেন্স আসলে এক লক্ষ ডলারের: কিন্তু তাই বলে এক লক্ষ ডলার খরচ করতে হয় না।

বাবা-মার স্পনসরশিপ আবেদনের প্রথম ধাপ এক্সপ্রেশন অফ ইন্টারেস্ট পূরণ মানেই আবেদন কমপ্লিট হয় না। কানাডার ইমিগ্রেশন একটি প্রসেস, কোনো প্রোডাক্ট নয়। অনেক দেশেই ফ্রি ভিসা বিক্রি হয়, কফিল বা মালিক প্রতিবছর কমপক্ষে কুড়ি জন আমেল বা কর্মী আনতে পারে। এইসব কফিলরা আমেলদের সঙ্গে কী করে সে ব্যাপারে রাষ্ট্র কোনো তদারকি করে না। আপনারা সবাই জানেন এইসব আমেলদের সঙ্গে কী আচরণ করা হয়। যুগের পর যুগ ওইসব দেশে থাকলেও তারা কখনো নাগরিক হতে পারে না, ভোট ও দিতে পারে না। এইসব লোকের অধিকার কখনোই নাগরিকদের মতো হয় না।

কানাডায় ইমিগ্রেশন এমন নয়। কানাডায় যে ঢুকতে পারবে তার সমস্ত দায়-দায়িত্ব সরকারের। সহজলভ্য ভিসার চেয়ে কষ্টে পাওয়া ভিসা টেকসই এবং মজবুত। তাই কানাডিয়ান ইমিগ্রেশন একটা প্রসেস, হঠাৎ পাওয়া প্রোডাক্ট নয়। কানাডিয়ান ইমিগ্রেশন বা ভিসার জন্য জেনে বুঝে সময় নিয়ে তৈরি হতে হয় বা তৈরি করতে হয়। এ প্রসঙ্গে আরো জানতে চাইলে আমাকে ইমেইল করুন

[email protected]

লেখক: মাহমুদা নাসরিন, রেগুলেটেড কানাডিয়ান ইমিগ্রেশন কনসালট্যান্ট এবং কমিশনার অফ ওথস, ক্যানবাংলা ইমিগ্রেশন সার্ভিসেস, ডানফোর্থ এভিনিউ, টরেন্টো, কানাডা

সংবাদটি শেয়ার করুন

মতামত বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :