ভোলাহাট খাটালে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ

জহিরুল ইসলাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ
 | প্রকাশিত : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৬:৫২

চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাটের চরধরমপুর বিট খাটালে গবাদি পশুর ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বাড়তি টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। এখানকার ব্যবসায়ীদের জোড়াপ্রতি গবাদি পশুর বিক্রিতে ১১০০ টাকা দেবার কথা থাকলেও তাদের কাছ থেকে জোর জবরদস্তি করে ৯ হাজার টাকা আদায় করা হচ্ছে। এই বিটে নিরাপত্তার অভাবে প্রায়ই গরু চুরির ঘটনা ঘটে। তার উপর এই বাড়তি অর্থ আদায় নিয়ে চরমউত্তেজনা বিরাজ করায় আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি হবে বলে আশংকা করছেন।

যদিও এ অভিযোগ নিয়ে কথা বললে অতিরিক্ত টাকা নেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন বিট মালিকরা। আর অতিরিক্ত টাকা নেয়ার অভিযোগের সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার কথা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন স্থানীয় জেলা প্রশাসন।

জানা গেছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সীমান্তে গরু আনতে গিয়ে হতাহতের সংখ্যা রোধ এবং শুল্ক ফাঁকি কমানোর জন্যে বিট/খাটাল প্রথা চালু করে। এর মাধ্যমে সীমান্তে বাংলাদেশি রাখাল হত্যার সংখ্যা কমে আসবে এবং অবৈধপথে গরু আমদানি হ্রাস পাবে এমনটাই আশা করছে সরকার। খাটালের মাধ্যমে গবাদি পশুর কেনাবেচা করায় সরকারের শুল্ক আদায়ের হারও বেড়ে গেছে বলে জানা গেছে। এরই অংশ মোঃ আশরাফুল ইসলাম চরধরমপুর বিওপি’র অধীনে বিট/খাটালের মালিক হিসেবে উচ্চ আদালতের এক রিট পিটিশনের আদেশের বলে গত ২৭ আগস্ট থেকে এ বিটে ভারতীয় গরু-মহিষ আনা শুরু করেন।

গরু ব্যবসায়ী সোনা মিয়া, সাইফুল ইসলাম ও সাদিকুল ইসলাম অভিযোগ করেন, ‘এ বিটের মালিক সরকারি নিয়ম উপেক্ষা করে পেশীশক্তি ব্যবহার করে বিভিন্ন খরচের নামে গরু-মহিষের জোড়াপ্রতি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে জোর জবরদস্তি করে ৯ হাজার টাকা করে আদায় করছে।’

অতিরিক্ত টাকা না দিলে তাদের বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি ও হয়রানিরও অভিযোগ করেছেন ব্যবসায়ীরা। এতে করে তারা অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখেও পড়ছেন।

গরু ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম জানান, চরধরমপুর বিটের জায়গায় গরুর জোড়াপ্রতি কাষ্টমসের ছাড়পত্র বাবদ ৫০০+৫০০=১০০০ টাকা এবং বিটের খরচ বাবদ ৫০+৫০=১০০ টাকা পরিশোধের পর একটি টোকেনের মাধ্যমে বাকি আটহাজার নয়শ টাকা পরিশোধের পর গরুর ছাড়পত্র দেয়া হচ্ছে তাদের। আর প্রতিদিন দুই হাজার গরু মহিষের জন্য বিট থেকে ৮ কোটি ৯০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বিট মালিকদের সিন্ডিকেট।

ভোলাহাট উপজেলা প্রশাসনের কাছ থেকে জানা যায়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিট-খাটালের শর্তানুযায়ী একজন বিট মালিক গরু প্রতি ৩০ টাকা সার্ভিস চার্জ ও বিটে গরু থাকা বাবদ ২০ টাকা করে পাবে এবং কাস্টমসের ছাড়পত্র বাবদ একটি গরুতে ৫শ টাকা রাজস্ব পাবে সরকার।

চরধরমপুর বিট-খাটালের পরিচালক আল-মামুন হক জানান, সদ্য চালু হওয়া এ বিটে কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি রয়েছে- এটা তিনি স্বীকার করেন। তবে অতিরিক্ত টাকা নেয়ার অভিযোগ তিনি পুরোপুরি অস্বীকার করেন।

এদিকে, চলতি মাসের জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় ভোলাহাট উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আনায়ারুল ইসলাম ওই বিটে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের বিষয়টি উত্থাপন করলেও অজ্ঞাত কারণে এখন পর্যন্ত নেয়া হয়নি কোন ব্যবস্থা।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মো. এরশাদ হোসেন খান জানান, ওই বিটে কোন ধরনের অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগের সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(ঢাকাটাইমস/১৫সেপ্টেম্বর/প্রতিনিধি/কেএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :