প্রশ্নফাঁসে অসাধু কর্মকর্তারাই দায়ী: দুদক

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৫:১৫ | প্রকাশিত : ১৭ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৩:৪৮

পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের জন্য শিক্ষাবোর্ড, সরকারি বিজি প্রেস, ট্রেজারি এবং পরীক্ষা কেন্দ্রের অসাধু কর্মকর্তারাই দায়ী বলে মনে করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ড. নাসির উদ্দিন আহমেদ।

রবিবার সকালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে মন্ত্রী, সচিব, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন সংস্থার প্রধানদের সঙ্গে দুদকের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

সভা শেষে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রশ্নপত্র ফাঁসের জন্য শিক্ষকরাই দায়ী। কারণ তারা নৈতিকতা বিবর্জিত, কোচিং বাণিজ্যে মনোনিবেশ করেন, ক্লাসে পড়ান না, কম সময় দেন।’

মন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষা মন্ত্রণালয়ও যে শতভাগ দুর্নীতিমুক্ত তা আমি বলবো না। তবে দুর্নীতি কমাতে আমরা চেষ্টা করছি।’

এদিকে প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধ করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আট দফা সুপারিশ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে- ১. প্রশ্নপত্র প্রণয়ন কমিটিতে মেধাবী, সৎ ও মূল্যবোধসম্পন্ন শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে। ২. প্রতিটি প্রশ্নপত্র প্রণয়ন কমিটিতে ইংরেজি অনুবাদের জন্য একজন অনুবাদক নিয়োগ দিতে হবে। ৩. প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও বিতরণের দায়িত্বে যারা থাকবেন তাদের কাছ থেকে পরীক্ষায় নিজের সন্তান বা সংশ্লিষ্ট কেউ অংশ নেবে না মর্মে লিখিত নিতে হবে। ৪. প্রশ্নপত্র প্রণয়ন সংক্রান্ত কাজে নিয়োজিত মডারেটরসহ সংশ্লিষ্টদের কঠোর নজরদারিতে রাখতে হবে।

৫. প্রশ্নপত্র বিশেষ লগ সম্বলিত বাক্সের মাধ্যমে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও শিক্ষা কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রতিটি ট্রেজারিতে পাঠাতে হবে এবং ওই লগ জেলা প্রশাসকের উপস্থিতিতে খুলতে হবে। একই প্রক্রিয়া অনুসরণ করে তা উপজেলা পর্যায়ে পাঠাতে হবে। ৬. পরীক্ষা কেন্দ্রের সংখ্যা কমিয়ে আনতে হবে। একটি উপজেলায় দুটির বেশি কেন্দ্র রাখা ঠিক হবে না। পরীক্ষা কেন্দ্র উপজেলা শহরে থাকতে হবে। ৭. প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে যাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে পাবলিক পরীক্ষা আইনে মামলাসহ মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন অথবা তথ্য প্রযুক্তি আইনের মামলা করতে হবে। এসব অপরাধের সঙ্গে জড়িত সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অপরাধজনক বিশ্বাস ভঙ্গের অভিযোগে দুদক আইনে মামলা করতে পারবে দুদক। ৮. শিক্ষা সংক্রান্ত সব কাজ অনলাইন সার্ভিসের আওতায় আনতে হবে।

দুদক কমিশনার ড. নাছির বলেন, ‘শিক্ষামন্ত্রীকে আমি অনুরোধ করি ‘আমি এবং আমার বিদ্যালয় দুর্নীতি মুক্ত’ কথাটা প্রতিটি বিদ্যালয় ও কলেজে প্রতিষ্ঠান প্রধান সই করে টাঙ্গিয়ে রাখতে ব্যবস্থা করুন। আমরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে যোগাযোগ করে দেখেছি শিক্ষকদের সাথে সরকারি লোকদের মিটিং হচ্ছে না। এ বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া দরকার।’

বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, সমস্যা হচ্ছে আমাদের একশটি অর্জনে কোনো কথা নাই। একটি ছোট সমস্যার জন্য মনে হয় দেশ উল্টে যায়। দুদকের পর্যবেক্ষণ ভালো। আমরা বিষয়গুলো বাস্তবায়নে চেষ্টা করবো।

সভায় দুদক পরিচালক মীর মো. জয়নুল আবেদিন শিবলি বলেন, দেশের ২৪টি স্কুলে ৫৫২ জন শিক্ষক ১০ থেকে ৩৩ বছর পর্যন্ত একই স্কুলে আছেন। এ তথ্য মাউশির তথ্য থেকেও পাওয়া যায়। এমনকি যারা বদলি হোন তারা অধিকাংশই একই এলাকায় বা মহানগরীতেই থাকেন। এ ধরনের সমস্যার কারণে শিক্ষকরা দুর্নীতির সাথে যুক্ত হচ্ছেন।

সভায়, শিক্ষামন্ত্রণালয়ের সচিব, বিভাগীয় ঊধ্বতন কর্মকর্তা ও দুদকের ১৫ সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

(ঢাকাটাইমস/১৭ডিসেম্বর/এমএম/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :