কোটাবিরোধীদের পুলিশের বাধা, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া

ঢাবি প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৪ মার্চ ২০১৮, ২১:২৫ | প্রকাশিত : ১৪ মার্চ ২০১৮, ১৫:২৭

সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচিতে বাধা দিয়েছে পুলিশ। এ সময় দুই পক্ষে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। আর তিনজনকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীটি।

বুধবার রাজধানীর হাইকোর্ট মোড় এই ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে মিছিলকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

সকালে রাজধানীর শাহবাগ এলাকায় ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’ এর ব্যানারে জড়ো হন একদল শিক্ষার্থী। বেলা পৌনে ১১টায় সময় তারা পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ঘেরাও করতে মিছিল নিয়ে বের হয়।

মিছিলটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, দোয়েল চত্বর হয়ে হাইকোর্ট চত্বরে গেলে আন্দোলনকারীদের আটকে দেয় পুলিশ। এ সময় সেখানেই রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে তারা। পরে পুলিশ তাদের ওপর কাঁদানে গ্যাস ছুড়লে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন আন্দোলনকারীরা। এ সময় দুই পক্ষে বেশ কিছু সময় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ সোহরাব, জাহির ও আরিফ নামের তিনজনকে আটক করেছে বলে জানিয়েছেন শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল হাসান।

বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে নিয়োগে ৩০ শতাংশ কোটা সংরক্ষিত আছে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জন্য। এর বাইরে ১০ শতাংশ নারী কোটা, পশ্চাদপদ জেলাগুলোর জন্য আরও ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য পাঁচ শতাংশ এবং এক শতাংশ কোটা আছে প্রতিবন্ধীদের জন্য।

এই কোটা ১০ শতাংশে নামিয়ে আনাসহ পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলন করছে শিক্ষার্থীরা। সরকারের শেষ বছরে প্রতিবারই এমন আন্দোলন হয়, যাতে মূলত মুক্তিযোদ্ধা কোটার বিষয়টি সামনে নিয়ে আসা হয়। আর এ কারণে এই দাবি নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়াও আছে।

এতদিন কোটায় যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে পদগুলো শূন্য রাখা হতো। তবে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে সম্প্রতি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় যোগ্য প্রার্থী না পেলে শূন্য পদে সাধারণ পরীক্ষার্থীদের থেকে নিয়োগের সিদ্ধান্তের কথা জানায়। এরপরও চাকরি প্রত্যাশীরা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়া হয়।

তাদের কর্মসূচি অনুযায়ী আজ সকাল সারা দেশে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে এবং ঢাকায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সামনে অবস্থানের ঘোষণা দেয়া হয়েছিল।

আন্দোলনকারীদের আহ্বায়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হাসান আল মামুন বলেন, ‘দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের আন্দোলন চলবে।’

আগামী ১৮ মার্চ সারা দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করবেন বলেও জানান আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

চাকরিতে কোটা সারা বিশ্বেই একটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য। কোনো কোনো দেশে বেসরকারি চাকরিতেও কোটা আছে। মূলত পিছিয়ে পড়া বা কোনো জনগোষ্ঠীকে বিশেষ সুবিধা দেয়ার জন্য এই নীতিমালা গ্রহণ করা হয়।

আন্দোলনকারীরা একে বৈষম্যমূলক দাবি করলেও জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞরা একে ‘পজিটিভি ডিসক্রিমিনেশন’ বা ইতিবাচক বৈষম্য আখ্যা দিয়ে থাকেন। সমাজে বিদ্যমান বৈষম্য দূর করার জন্যই এই পন্থা চালু থাকা উচিত বলে মত তাদের।

গত ৮ মার্চ সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোজাম্মেল হক খান জানান, কোটার শূন্যপদ সাধারণ পরীক্ষার্থীদের মধ্য থেকে পূরণ করার সিদ্ধান্ত এলেও কোটা বাতিল বা কমানোর পরিকল্পনা সরকারের নেই।

মিছিলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা কলেজ, ইডেন কলেজসহ বিভিন্ন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সহস্রাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন।

ঢাকাটাইমস/১৪মার্চ/এনএইচএস/ডিএম/ডব্লিউবি

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :