ফরিদপুরে কালবৈশাখীর তাণ্ডবে বিধ্বস্ত তিন উপজেলা, বন্ধ বিদ্যুৎ সংযোগ

ফরিদপুর প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ১০ মে ২০২৪, ১২:০৮
অ- অ+

কালবৈশাখীর তাণ্ডবে ফরিদপুরের তিনটি উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের ১২ থেকে ১৪টি গ্রামে শতাধিক ঘরবাড়ি, দোকানপাট ও কয়েকশো গাছপালা বিধ্বস্ত হয়েছে। অনেক জায়গায় বাড়ির বিদ্যুতের মিটার ও চালের টিন উড়িয়ে নিয়ে গেছে ঝড়ে।

কয়েকটি এলাকায় আবার রাস্তায় গাছ পড়ে যান চলাচলও ব্যাহত হয়। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ভেঙে এবং উপড়ে পড়া গাছ সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করেছন।

এছাড়া ঝড়ের পর থেকে ফরিদপুর সদরের কানাইপুর, বোয়ালমারী ও আলফাডাঙ্গা উপজেলাসহ অনেক জায়গায় বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রয়েছে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে কালবৈশাখীর এ তাণ্ডবের ঘটনা ঘটে।

বোয়ালমারী উপজেলা চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন মুসা মিয়া জানান, এই উপজেলার শেখর ইউনিয়নের সহস্রাইল, ভুলবাড়িয়া, মাইটকুমরা, শেখপুর, ছত্তরকান্দা, রূপাপাত ইউনিয়নের কুমরাইল, কাটাগড়, কলিমাঝি, পরমেশ্বরদী ইউনিয়নের ময়েনদিয়া, জয়পাশা, তামারহাজি গ্রামে কালবৈশাখী ঝড় আঘাত হানে। এতে বেশকিছু বাড়িঘর ও বহু গাছপালা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

অন্যদিকে আলফাডাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান জাহিদ হাসান বলেন, বৃহস্পতিবারের ঝড়ে উপজেলার টাবনি, হেলেঞ্চা, পাড়াগ্রাম, বানা, বারাংকুলা, চরডাঙ্গা এলাকায় ঘরবাড়িসহ গাছপালার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী সহস্রাইল গ্রামের তারেক আব্দুল্লাহ নামে একজন জানান, ‘বাড়ি থেকে বাজারের দিকে জরুরি ওষুধ কিনতে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ বাতাসের সঙ্গে মেঘের গর্জন শুরু হয়। মুহূর্তের মধ্যে বাতাশের গতিবেগ ভয়াবহ রূপ নেয়। এ সময় সহস্রাইল স্কুল রোডে জামালের বাড়ির সামনে পঙ্কুজের আমগাছ, রেন্টিগাছ ভেঙে পড়ে। একটু হলেই আমার মাথার ওপরই গাছটা পড়তো। অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেছি। প্রায় ১৫ মিনিটের ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে ৫ শতাধিক বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা। অনেক ঘরবাড়িও ভেঙে গেছে।’

আলফাডাঙ্গার বুড়াইচ গ্রামের আমেনা বেগম বলেন, হঠাৎ করে বৃষ্টি ও প্রচন্ড বাতাসে গাছপালা উপড়ে পড়ে। গাছ পড়ে তার ঘর ভেঙে গেছে। টিনের আঘাতে হাত কেটে তিনি আহত হয়েছেন বলেও জানান।

আলফাডাঙ্গা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের টিম লিডার ওবায়দুর রহমান জানান, সন্ধ্যার কালবৈশাখীর ঝড়ে বোয়ালমারীর সহস্রাইল বাজার থেকে আলফাডাঙ্গা সড়কে বড় কয়েকটি গাছ ভেঙে পড়ে যান চলাচল ব্যাহত হয়। খবর পেয়ে আমরা গাছপালা সরিয়ে ফেলি। এখন ওই এলাকার যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। জানতে পেরেছি অনেক জায়গায় ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। ঝড়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ পরে জানাতে পারবো।

বোয়ালমারীর শেখর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ইস্রাফিল মোল্যা জানান, সহস্রাইল বাজারের প্রায় ১০টি ঘর উড়িয়ে নিয়ে গেছে ঝড়ে। বাজারের অনেক ঘরে ব্যবসায়ীর পেঁয়াজসহ রাখি মালামাল ছিল। শেখর ও রূপাপাত ইউনিয়নে শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে।

একই উপজেলার রূপাপাত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান বলেন, রূপাপাত ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রাম কালবৈশাখীর আঘাতে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। ঝড়ের পর থেকে বিদ্যুত সংযোগ বন্ধ রয়েছে।

ফরিদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মোর্শেদুর রহিম জানান, ঝড়ে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আমাদের মেইন লাইন কানাইপুরে ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার কারণে বিদ্যুৎ সংযোগ অনেক জায়গায় দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাছাড়া বোয়ালমারীর জয়পাশা, ময়েনদিয়া এলাকায় বিদ্যুতের পিলারও পড়ে গেছে। আলফাডাঙ্গারও কয়েকটি জায়গায় বেশ ক্ষতি হয়েছে। বিদ্যুতের কর্মীরা মাঠে কাজ করছে। গাছপালা পড়ে বিদ্যুতের লাইনের ক্ষতি হওয়ায় অনেক জায়গায় বিদ্যুৎ সংযোগ চালু করতে বিলম্ব হতে পারে।

এ ব্যাপারে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার বলেন, ‘আমরা এখনো ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত তথ্য পাইনি। প্রকৃত তথ্য সংগ্রহে কাজ করছি।’ ক্ষতিগ্রস্ত সবাইকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুনর্বাসন ও আর্থিক সহযোগিতা করা হবে বলেও তিনি জানান।

(ঢাকাটাইমস/১০মে/এজে)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
আধাঘণ্টার ব্যবধান: মোহাম্মদপুরে ফটোগ্রাফার, হাজারীবাগে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাতে খুন
বিচারপতি আবদুর রউফ স্মরণে জীবনালেখ্য ও দোআ অনুষ্ঠিত
ইয়েমেনের দুই বন্দরে ইসরায়েলের বিমান হামলা
চাঁদপুরে পুলিশ কর্মকর্তার চুরি যাওয়া অস্ত্র ঢাকায় উদ্ধার, আটক ২
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা