এলোরে আষাঢ়

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ১৫ জুন ২০১৭, ০৮:৪৮
অ- অ+

আজ পয়লা আষাঢ়। বাঙালি জাতির ঐতিহ্যবাহী ষড়ঋতুর প্রাণবন্ত আষাঢ় নিয়ে আসছে বর্ষাকাল। পঞ্জিকার পাতা উল্টিয়ে একই সঙ্গে আজ বর্ষার আগমন ঘটেছে।

চিরকালই আষাঢ সাজে নানা রূপে। বৃষ্টিরধারায় নবতর জীবন আসে পুষ্প-বৃক্ষে, পত্রপল্লবে, নতুন প্রাণের সঞ্চার করে প্রকৃতির অবয়বে। নতুন সুরের বার্তা নিয়ে সবুজের সমারোহে আসছে এই বর্ষা। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায় ‘ঐ আসে ঐ ঘন গৌরবে নবযৌবন বরষা, শ্যাম গম্ভীর সরসা...’।

আষাঢ়ের বৃষ্টিতে গ্রীষ্মের ধুলোমলিন জীর্ণতাকে ধুয়ে ফেলে গাঢ় সবুজের সমারোহে প্রকৃতি সেজেছে পূর্ণতায়। নদীতে উপচেপড়া জল, আকাশেও ঘন মেঘের ঘনঘটা। কেউ কারো চেয়ে পিছিয়ে নেই। গ্রীষ্মের দাবদাহে মানুষ যখন পুড়ছে তখন ব্যাপক আয়োজনে বর্ষার এই ঝুমঝুম বৃষ্টির বরণডালা মাঝে মাঝেই মনে করিয়ে দিচ্ছে বর্ষাতো এসেই গেছে।

বর্ষার সতেজ বাতাসে জুঁই, কামিনি, বেলি, রজনীগন্ধা, দোলনচাঁপা আরো কত ফুলের সুবাস। লেবু পাতার বনেও যেন অন্য আয়োজন। উপচেপড়া পদ্মপুকুর রঙিন হয়ে ফোঁটে বর্ষাকে পাওয়ার জন্য। কেয়ার বনেও কেতকীর মাতামাতি। রবি ঠাকুরের ভাষায়, ‘আবার এসেছে আষাঢ় আকাশও ছেয়ে... আসে বৃষ্টিরও সুবাস ও বাতাসও বেয়ে...’

বর্ষাকে বরণের জন্য নানা আয়োজনে মেতেছে বাঙালি। যে কথাটি বলি বলি করেও তাকে বলা হয়নি, বাদল দিনের প্রথম কদম ফুল নিয়ে যেন তারই আসার অপেক্ষা। মনের কথাটি বলার এইতো সময়। রবীন্দ্রনাথের ভাষায়, ‘এমনও দিনে তারে বলা যায়, এমনও ঘনঘোর বরষায়...’। বর্ষাবরণে আয়োজন করছে সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং গানের দলগুলোও। বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীসহ বিভিন্ন সংগঠন আয়োজন করেছে বর্ষাবরণ উৎসবের। কবিতা, গান ও নাচের মাধ্যমে বর্ষাকে বরণ করবেন তারা। টেলিভিশন চ্যানেলগুলোও সারাদিন নানা আয়োজনে গাইবে বর্ষার গান। বর্ষা নিয়ে থাকবে আলোচনা-স্মৃতিচারণ।

দেশের নৃতাত্বিক গোষ্ঠীর বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে রয়েছে বর্ষাকে নিয়ে নানা মিথ। কক্সবাজারের রাখাইন সম্প্রদায় বর্ষাকে বরণ করে ভিন্ন মাত্রায়। প্রতিবছর তারা কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে মাসব্যাপী বর্ষাবরণ উৎসবের আয়োজন করে। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে রাখাইন সম্প্রদায়ের লোকেরা এ বর্ষা বরণ উৎসবে যোগ দেয়।

হঠাৎ বর্ষা যেমন আনন্দের, বর্ষার নির্মম নৃত্য তেমনি হঠাৎ বিষাদে ভরিয়ে তোলে জনপদ। তবুও বর্ষা বাঙালি জীবনে নতুনের আবাহন। সবুজের সমারোহে, মাটিতে নতুন পল্লীর আস্তরণে আনে জীবনেরই বারতা। সুজলা, সুফলা, শস্য-শ্যামলা বাঙলা মায়ের নবজন্ম এই বর্ষাতেই। সারা বছরের খাদ্য-শস্য-বীজের উন্মেষতো ঘটবে বর্ষার ফেলে যাওয়া অফুরন্ত সম্ভাবনার পলিমাটি থেকে।

(ঢাকাটাইমস/১৫জুন/জেবি)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
মালয়েশিয়া ফেরত ৩ প্রবাসী জঙ্গি নয়: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
মুক্তি পাচ্ছে সাংবাদিক দম্পতির গল্পে নির্মিত রায়হান রাফির ‘অমীমাংসিত’
নোয়াখালীতে ছুরিকাঘাতে আহত আ. লীগ নেতার মায়ের মৃত্যু  
ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাতের পর প্রথমবার জনসমক্ষে এলেন আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা