চালের বদলে ধান কেনার দাবি সুনামগঞ্জের কৃষকদের

জাহাঙ্গীর আলম ভূঁইয়া, সুনামগঞ্জ
 | প্রকাশিত : ২৯ মে ২০১৯, ২০:২৬

কৃষকদের দাবি চালের বদলে ধান। কিন্তু সরকার চাল কেনার এই সিদ্ধান্ত বদল না করলে এটি হবে কৃষকঘাতী সিদ্ধান্ত এমনটাই দাবি সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলের ১১টি উপজেলার সাড়ে তিন লাখ কৃষকের। ধান না কিনলে কৃষক সর্বশান্ত হয়ে যাবে বলে মনে করেন তারা। তাদের দাবির সাথে একাত্ম পোষণ করেছেন জনপ্রতিনিধি, কৃষক নেতাসহ সর্বস্তরের জনসাধারণ। তারাও দাবি করেন চালের বদলে ধান কেনার।

সরকার সুনামগঞ্জ থেকে যে পরিমাণ চাল কিনছে এই চালের বদলে ধান কিনে সরকারি উদ্যোগে চাল বানানো হলে ধানের দাম বেড়ে যেত। লাভবান হতো কৃষকরাও। আর যেসব মিলার চাল দেবে তাদের কাছে ভাটি অঞ্চলের কৃষকরা ধান বিক্রির সুযোগই নেই। অনেক মিল মালিক দিনাজপুর-আশুগঞ্জসহ বিভিন্ন মোকাম থেকে চাল এনে সরকারি গোদামে সরবরাহ করবে।

জানা যায়, জেলার এবার দুই লাখ ২৪ হাজার ৪০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। উৎপাদন হয়েছে ১৩ লাখ ১২ হাজার ৫০০ মেট্রিকটন ধান। সরকার এই জেলার কৃষকদের কাছ থেকে ৬৫০৮ মেট্রিকটন ধান কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অথচ চাল কিনবে আতব ১৭ হাজার ৭৯৮ মেট্রিকটন এবং সিদ্ধ ১৪ হাজার ১৭৮ মেট্রিকটন। এই চাল কেনা হবে জেলার ৩০০ মিলারের কাছ থেকে। সরকার সাড়ে তিন লাখ কৃষকের কাছ থেকে ধান কিনলে প্রতি কৃষকের কাছ থেকে ১৮.৫৯ কেজি ধান কেনা যেত। এই অবস্থায় জেলা ধান ক্রয় কমিটি কেবল প্রান্তিক কৃষকদের কাছ থেকেই ধান কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

জেলায় ১২ হাজার প্রান্তিক কৃষকদের কাছ থেকে তারা ধান কিনবেন। সরকারি ব্যবস্থায় ধান বিক্রির বাইরে থাকা তিন লাখ ৩৮ হাজার কৃষকই এখন চিন্তিত।

জেলার তাহিরপুর উপজেলার শনির হাওর পাড়ের কৃষক শফিক, সাদেক, আলীসহ অনেকই বলেন, সিদ্ধ চালের কোনো মিলই এ উপজেলায় নেই। যেসব মিল মালিক আতব চাল বরাদ্দ পেয়েছেন তারা বড় মিল মালিকদের কাছে বরাদ্দ বিক্রয় করবে না হয় বিভিন্ন বড় মোকাম থেকে চাল এনে গোদামে সরবরাহ করবে। তারা কৃষকের কাছ থেকে এক মণ ধানের দাম দিয়ে দুই মণ ধান কিনছে কিন্তু সেই ধান তারা ভাঙাবে না। চাল কেনায় কৃষকদের কোনো লাভ হবে না। অনেক চালকল মালিক ধানই কিনবে না আমদানি করা চাল মিলাররা তাদের গুদামে ঢোকাবে। পরে এই চালই বস্তা পরিবর্তন হয়ে গোদামে যাবে। তাই চালের বদলে ধান কেনার দাবি করেন তারা।

সরকারিভাবে ধান কেনার বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি করে সুনামগঞ্জের মিল মালিক সমিতির নেতারা বলেন, আমরা ধান কেনায় ধানের দাম বাজার বেড়েছে। এখন সরকার কেনা শুরু করায় ধানের দাম আরও বাড়বে। জেলার ৩০০ মিলের মধ্যে ১০-১৫টি মিল ছাড়া সবাই এলাকার কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনে তা ভাঙিয়ে বরাদ্দের চাল গোদামে দেবে বলে দাবি করেন। তারা চালের বদলে ধান কেনার পক্ষে রয়েছেন।

চালের বদলে ধান কেনার বরাদ্দ বাড়াতে উচিত বলে মনে করেন তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য করুণা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল। তিনি বলেন, চাল কেনার ক্ষেত্রেও নীতিমালা যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে। সুনামগঞ্জ থেকে সরকার ৩২ হাজার মেট্রিকটন চাল মিল মালিকদের কাছ থেকে না কিনে কৃষকদের কাছ থেকে এই পরিমাণ ধান কিনলে কৃষকরা লাভবান হতো।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জাকারিয়া মোস্তফা বলেন, আমরা সরকারের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করি। যে মিলের বিরুদ্ধে অনিয়মের খবর পাওয়া যাবে সেই মিলে পরিদর্শনে যাবে খাদ্য অফিসের বিশেষ টিম। তিনি বলেন, সুনামগঞ্জে ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানো হলে আমিও খুশি হবো। কোনো মিল বরাদ্দকৃত চাল ধান কিনে নীতিমালা মোতাবেক ভাঙিয়ে সরবরাহ না করলে সেই মিল কালো তালিকাভুক্ত হবে।

(ঢাকাটাইমস/২৯মে/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

উপজেলা নির্বাচন: মির্জাপুরে ১২ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র দাখিল

চিরনিদ্রায় শায়িত পাইলট আসিম জাওয়াদ

বরিশালে মাদকসহ চার নারী-পুরুষ গ্রেপ্তার 

স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের লড়াইয়ে ছাত্রলীগ সর্বতোভাবে পাশে থাকবে: গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী

দিনাজপুরে যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা: আহত ২৫

উপজেলা নির্বাচন: চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ ২৬ জনের বিরুদ্ধে সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা

চাঁদপুরে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে পুড়িয়ে হত্যা, বেনাপোলে আটক

মানিকগঞ্জে পৌঁছেছে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত পাইলট আসিম জাওয়াদের মরদেহ

মেহেরপুরে অপরিপক্ব লিচুতে বাজার সয়লাব

সরাইলে আগুনে পুড়ল ১২ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :