কাউন্সিলর মিজানের ফাঁসির দাবিতে তার ওয়ার্ডে পোস্টার

কাজী রফিক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ১৭ অক্টোবর ২০১৯, ১৮:৩৬| আপডেট : ১৭ অক্টোবর ২০১৯, ২১:৩২
অ- অ+

চলমান ‘শুদ্ধি অভিযানের’ মধ্যে র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর মোহাম্মদপুর থানা আওয়ামী লীগের আলোচিত নেতা হাবিবুর রহমান মিজানের ফাঁসি চেয়ে পোস্টার সাঁটানো হয়েছে।

মিজান ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৩২ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। গত শুক্রবার ভারতের পালানোর চেষ্টার সময় শ্রীমঙ্গলের একটি বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।

মিজানের ওয়ার্ডেরই বিভিন্ন সড়কে তার ফাঁসির দাবিতে পোস্টারগুলো দেখা গেছে। তবে কে বা কারা এসব পোস্টার সাঁটিয়েছে বিস্তারিত জানা যায়নি।

পোস্টারে লেখা রয়েছে, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার চক্রান্তকারী, ফ্রিডম পার্টির কনভেনার, ঢাকা সিটির ম্যানহলের ঢাকনা চোর, কুখ্যাত সন্ত্রাসী, খুনী, চাঁদাবাজ, ভূমিদস্যু মোহাম্মদপুর ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান মিজার ওরফে পাগলা মিজানের বর্বর হামলার বিচার ও ফাঁসি চাই।’ আর পোস্টারে নিবেদক হিসেবে ‘বাংলাদেশের সাধারণ নাগরিকগণ’ উল্লেখ করা হয়েছে।

মোহাম্মদপুরের বেশ কয়েকটি সড়কে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কে বা কারা এই পোষ্টার সেঁটে গেছেন তা তারা জানেন না। রাতের আঁধারে পোষ্টার লাগানো হয়েছে। এদিকে মিজানের অনুসারীরা কোথাও কোথাও এই পোষ্টার তুলে ফেলছেন বলেও জানা গেছে।

উল্লেখ্য, কাউন্সিলর মিজান আটকের পর তার ওয়ার্ডের বেশ কয়েকটি এলাকায় তার ফাঁসির দাবিতে আন্দোলনও করেন স্থানীয়রা। মিজান গত ২৫ বছর ধরে ৩২ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। গ্রেপ্তারের পর মিজানকে নিয়ে তার অফিস ও বাসায় অভিযান চালায় র‌্যাবের একটি দল।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলমের নেতৃত্বে চালান এই অভিযানে তার বাসা থেকে মিজানের স্বাক্ষর সম্বলিত বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টের ৬ কোটি ৭৭ লাখ টাকার বেশ কয়েকটি চেক পাওয়া যায়। এছাড়া আটকের সময় তার কাছে পাওয়া যায় নগদ দুই লাখ টাকা, একটি পিস্তল ও চার রাউন্ড গুলি।

অভিযোগ আছে, কাউন্সিলর মিজান ১৯৮৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি। হত্যাচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর তিনি মিজানুর রহমান মিজান থেকে নাম বদলে বনে যান হাবিবুর রহমান মিজান। এছাড়া তার নামে মোহাম্মদপুর থানায় ১৯৯৬ সালে ইউনূস হত্যা, ২০১৬ সালে সাভার থানায় জোড়া হত্যা মামলা রয়েছে।

ওয়ার্ডের আওতাভুক্ত জেনেভা ক্যাম্পের মাদক নিয়ন্ত্রণকারী ও মাদক ব্যবসায়ী হিসেবেও তিনি পরিচিত। জেনেভা ক্যাম্পের বিদ্যুৎ সংযোগ থেকে ক্যাম্পের বাজারে বিদ্যুৎ সরবরাহ করেও মোটা অংকের টাকার মালিক হয়েছেন এই জনপ্রতিনিধি।

কাউন্সিলর মিজান ‘পাগলা’ উপাধি পাওয়ার কারণ হিসেবে জানা যায়, স্বাধীনতার পর মিজান মোহাম্মদপুরে এসে চাঁদাবাজি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৭৪-৭৫ সালে মিজানের পরিচিতি ছিল ছিনতাইকারী হিসেবেই।

১৯৭৫ সালের মাঝামাঝি সময়ে মানিক মিয়া এভিনিউয়ের খামারবাড়ি খেজুর বাগান এলাকায় ছিনতাই করতে গেলে পুলিশ তাকে ধাওয়া করে। এসময় লালমাটিয়া মসজিদের পাশের একটি পুকুরে নেমে পড়েন মিজান। পুলিশ তাকে বারবার পুকুর থেকে উঠে আসার নির্দেশ দিলেও তিনি পুকুর থেকে উঠে আসেননি। চার থেকে পাঁচ ঘন্টা পুকুরে অবস্থান করে কোনো ধরনের কাপড় ছাড়াই পুকুর থেকে উঠে আসেন তিনি। এ কাণ্ডের পর থেকেই স্থানীয়রা তাকে ‘পাগলা’ আখ্যা দেন।

ঢাকাটাইমস/১৭অক্টোবর/কারই

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
মায়ের লাশ বাড়িতে রেখে পরীক্ষা কেন্দ্রে দুই শিক্ষার্থী 
স্পেনে গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা গেলেন লিভারপুল তারকা দিয়োগো জোতা
নির্বাচন সামনে রেখে টেলিকম নীতিমালা প্রণয়ন সমীচীন নয়: মির্জা ফখরুল 
Navigating Complexity: The Role of Chaos Theory in Management Education
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা