উত্তর মেরুর সৌন্দর্য ‘মেরু ভাল্লুক’

আবুল কাশেম, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ১৪ নভেম্বর ২০১৯, ১৫:৩৭| আপডেট : ১৪ নভেম্বর ২০১৯, ১৫:৪২
অ- অ+

ভাল্লুক শ্বাপদ বর্গের স্তন্যপায়ী প্রাণী। পৃথিবীতে আট প্রজাতির ভাল্লুক পাওয়া যায়। তবে সবচেয়ে বড় ও আকর্ষণীয় হলো মেরু ভাল্লুক। হিমশীতল বরফে আচ্ছাদিত উত্তর মেরুতে বাস করে বিশালদেহী সাদা লোমের এই প্রাণী। শুভ্র বরফে ঢাকা উত্তর মেরুর সৌন্দর্য হাজারগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে এই মেরু ভাল্লুক। বরফের এই জনমানবহীন প্রান্তরে রাজ করছে তারা।

পুরু চামড়া এবং চামড়ার নিচে পুরু চর্বিস্তরের কারণে মেরু ভাল্লুক প্রচণ্ড ঠাণ্ডায়ও টিকে থাকতে পারে। শীতের শুরুতে এদের চামড়ার চর্বিস্তর আরও বেড়ে যায়। চমৎকার সাঁতারু হিসেবে মেরু ভাল্লুকের সুখ্যাতি রয়েছে।

অন্যান্য প্রজাতির ভাল্লুকের চেয়ে মেরু ভাল্লুকরা দেরিতে প্রজনন ক্ষমতা লাভ করে। প্রাকৃতিক পরিবেশে এদের আয়ুষ্কাল মোটামুটি ২৫-৩০ বছর হয়ে থাকে। এই সময়ের মধ্যে তারা খুব অল্প সংখ্যক বাচ্চার জন্ম দেয়। দেখতে সাদা হলেও এদের গায়ের রঙ মূলত কালো। সাদা লোমের নিচে কালো লোম রয়েছে। এদের গায়ের লোম স্বচ্ছ হওয়ায় সাদা রঙের প্রতিফলন বেশি হয়। এজন্য এদের শুভ্র দেখায়।

অবাক করার বিষয় হলো মেরু ভাল্লুক স্থলের কোনো প্রাণী নয় বরং এটিকে সামুদ্রিক প্রাণী হিসেবে গণ্য করা হয়। কেননা খাদ্য, প্রজনন, বাসস্থানের জন্য এরা সমুদ্রের বরফের ওপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীল। বিভিন্ন জলচর ও স্থলজ প্রানী মেরু ভাল্লুকের খাদ্যের উৎস। বিভিন্ন প্রজাতির সিল মাছ এদের প্রিয় খাদ্য। এছাড়াও মৃত তিমিসহ হরেক রকম মাংসাদি প্রাণী এরা খায়। এরা অন্যান্য ভাল্লুকদের মত আধা নিরামিষাশী নয়। এরা পুরোপুরি মাংসাশী।

মেরু অঞ্চলে তাপমাত্রা থাকে শূন্যের নিচে। ওই হিম ঠাণ্ডায় সারা বছর মেরুতে দাপিয়ে বেড়ায় মেরু ভাল্লুকরা। বাচ্চা ফোটানোর সময় হলে মা ভাল্লুক হন্যে হয়ে নিরাপদ জায়গা খুঁজতে থাকে। সমুদ্রতীর থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে পছন্দসই কোনো জায়গা পেলে বরফ খুঁড়তে আরম্ভ করে। তারপর কয়েক মাসের জন্য মা ভাল্লুক গর্তে ঢুকে যায়। সেখানে কয়েকদিনের মধ্যে জন্ম নেয় দুটি বাচ্চা। পৃথিবীতে ২৫-৩০ হাজার মেরু ভাল্লুক আছে। সবচেয়ে বেশি দেখা যায় পূর্ব গ্রিনল্যান্ডে।

অবৈধ শিকারের কারণে এরা প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছিল। ১৯৭০ সালে আইন করে এদের শিকার করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়। তবে বিশ্ব উষ্ণায়নের জেরে অদূর ভবিষ্যতে যেসব প্রজাতির প্রাণী পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাবে, সেই লাল তালিকায় প্রথমেই রয়েছে মেরু ভাল্লুক। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, গরমের জেরে সামুদ্রিক বরফ গলে যাচ্ছে দ্রুত হারে। ফলে মেরু ভাল্লুকদের বাঁচার আশা ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হচ্ছে।

উত্তর মেরুর বরফ গলতে শুরু করায় এদের বাসস্থান, প্রজনন স্থান ও শিকার করার ক্ষেত্র প্রতিনিয়ত ঝুঁকির মুখে পড়ছে। মেরু ভাল্লুকরা তাদের মাত্র দুই শতাংশ শিকারে সফল হয়। শিকারের পরিধি কমতে থাকায় শিকার ধরা আরও কঠিন হয়ে পড়ছে। ফলে খাদ্যাভাবে অনেক ভাল্লুকই মৃত্যুর মুখে পতিত হচ্ছে।

ঢাকা টাইমস/১৪নভেম্বর/একে

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
সুনামগঞ্জ সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত
মিটফোর্ড হত্যার বিচার দ্রুততম সময়ে হবে: আইন উপদেষ্টা
সিলেট বিভাগের ১৯ আসনে প্রার্থী ঘোষণা খেলাফত মজলিসের
সমুদ্র অভিযানে সাহসিকতার জন্য আইএমওর প্রশংসাপত্র পেল কোস্ট গার্ড
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা