রাজউকের একই ভুল বারবার

খালের পরিবর্তে ধানি জমিতে ব্রিজ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০৫ মার্চ ২০২০, ১৪:১৫ | প্রকাশিত : ০৫ মার্চ ২০২০, ১৩:৫৯

মাদানী এভিনিউখ্যাত ১০০ ফুট রোডের পাঁচখোলা খালের ওপর ব্রিজ নির্মাণের নামে বারবার তুঘলকি কান্ড ঘটে চলেছে। সেখানে স্রোতোবাহী খালটির পানিপ্রবাহ পুরোপুরি বন্ধ করে সড়ক নির্মিত হয়েছে, আবার অদূরেই ফসলি জমির ওপর নির্মাণ করা হয়েছে বেরাইদের তিন নম্বর ব্রিজটি।

রাজউক সূত্র জানায়, ২০১০ সালে প্রগতি সরণি থেকে বালুনদী পর্যন্ত ৬.৭১ কিলোমিটার ইন্টারসেকশন সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ২৩১ কোটি পাঁচ লাখ টাকা ব্যয়ের এ প্রকল্প ২০১৩ সাল নাগাদ সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে প্রকল্পটি সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

সম্প্রসারিত পরিকল্পনা অনুযায়ী মাদানী এভিনিউ থেকে বালু নদী পর্যন্ত সড়ক ও ব্রিজগুলো প্রশস্তকরণ এবং বালু নদী থেকে শীতলক্ষ্যা নদী পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ (প্রথম পর্ব) প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় নির্ধারণ হয় এক হাজার ২৫৯ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। সম্প্রসারিত এ প্রকল্পের আওতায় ১০০ ফুটের মাদানী এভিনিউয়ে তিন নম্বর ব্রিজ নির্মাণের ক্ষেত্রেই বাধে জটিলতা। সেখানে পাঁচখোলা খালের ওপর ব্রিজ নির্মাণের কথা থাকলেও অজ্ঞাত কারণে খালটি ভরাট করে ১০০ ফুট প্রশস্ত রোড নির্মাণ করা হয়েছে। পরবর্তীতে খাল পেরিয়ে অন্তত দেড়শ গজ পূর্ব দিকের ফসলি জমিতে খাদ খনন করা হয় এবং এ খাদের ওপরেই চলে ব্রিজ নির্মাণের কাজ।

সম্প্রতি পাঁচখোলা খালের সঙ্গে ঘুরপথে খননকৃত খাদের সংযুক্তি ঘটানো হয়েছে- এক্ষেত্রেও ব্যক্তি মালিকানার ফসলি জমি অবৈধভাবে ব্যবহার করা হয়েছে বলে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন। ভুক্তভোগী একরাম আলী, আবদুর রহমান, মাজম আলীসহ কয়েকজন জানান, সর্বশেষ সিটি জরিপ অনুযায়ী ৯০৮, ৯০৯ ও ৯২৪ নম্বর দাগেই তাদের পূর্বপুরুষের জায়গা-জমি। যুগ যুগ ধরেই এসব জমি চাষাবাদের মাধ্যমে তাদের জীবিকা নির্বাহ হয়। পাঁচখোলা খালসংলগ্ন থাকায় এসব জমিতে প্রতি বছর দুই দফা ধান আবাদ এবং প্রচুর পরিমাণ সবজি উৎপন্ন হতো। কিন্তু রাজউকের সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় হঠাৎ করেই সেসব ফসলি জমিতে খাদ বানিয়ে তার ওপর ব্রিজ নির্মাণের বিশাল কর্মযজ্ঞ চলতে থাকে। এ ব্যাপারে রাজউকের কাছে বারবার অভিযোগ জানিয়েও সুরাহা মিলছে না।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঢাকা-১১ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম রহমতুল্লাহ সরাসরি রাজউক চেয়ারম্যানকে পাঠানো ডিও লেটারের মাধ্যমে সরকারি পাঁচখোলা খালের ওপরই ব্রিজ নির্মাণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেন। ২০১৬ সালের ১৩ মার্চ পাঠনো সংসদ সদস্যের পাঠনো ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রাজউকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের যৌথ উদ্যোগে সরেজমিন সার্ভে সম্পন্ন হলেও সে বিষয়ে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। এ চিঠির তাগিদের পরও পেরিয়ে গেছে চারটি বছর। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে এলাকাবাসীর ন্যায্য দাবি-দাওয়া ও স্থানীয় সংসদ সদস্যের তাগিদপূর্ণ নির্দেশনা মোটেও আমলে নেওয়া হয়নি। বরং তিন নম্বর ব্রিজটির সম্প্রসারিত নির্মাণ কাজও ফসলি জমিতে শুরুর উদ্যোগ নেওয়ায় সংসদ সদস্য পুনরায় চিঠির মাধ্যমে রাজউক চেয়ারম্যানকে জরুরি পদক্ষেপ নিতে বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন। গত ২০ ফেব্রুয়ারি চিঠি পাঠানোর পরও ব্যক্তিমালিকানার জমিতেই ব্রিজ নির্মাণ কর্মকান্ড পরিচালনা করতে দেখা গেছে। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে বলে জানা গেছে।

এদিকে এ ব্যাপারে গতকালও স্থানীয় সংসদ সদস্য আরেকটি চিঠি দিয়েছেন রাজউককে। এ ছাড়া ওয়ার্ড কাউন্সিলরসহ এলাকাবাসী বলছেন, রাজউককে অবশ্যই জন দাবি মানতে হবে।

(ঢাকাটাইমস/৫মার্চ/এজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

বাংলাদেশ-মিয়ানমারের একটি অংশ নিয়ে খ্রিস্টান দেশ বানানোর চক্রান্ত চলছে: প্রধানমন্ত্রী

প্লাস্টিক ও পলিথিন বর্জন করতে হবে: পাটমন্ত্রী

আনার হত্যা: ঢাকায় ডিবির সঙ্গে বৈঠকে ভারতীয় পুলিশ

প্রবাসে ও দেশে কর্মীদের সুরক্ষিত রাখতে কাজ করছে সরকার: প্রতিমন্ত্রী

নদীখেকো-বালুখেকোদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে বললেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

হত্যাকারীদের চিহ্নিত করা হয়েছে, ভারতের কেউ জড়িত কি না তথ্য নেই: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

এককভাবে মশা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী 

১১ দফা দাবি বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের 

আর্থিক আধিপত্যের বাহন হিসেবে ব্যাংকগুলোকে ব্যবহার করা হচ্ছে: সিপিডি

দুদেশের সমন্বয়ে এমপি আনার হত্যার তদন্ত চলছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :