‘মাস্ক পরলে হয়ত আমার স্ত্রীকে মরতে হতো না’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ২৫ জুলাই ২০২০, ২০:৫৪
অ- অ+
সচিব ও তার প্রয়াত স্ত্রী (ফাইল ছবি)

করোনার হাত থেকে বাঁচতে মাস্ক পরার গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে নিজের স্ত্রীর করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার কথা স্মরণ করে আক্ষেপ জানালেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নান।

গত ২৪ জুন স্ত্রীর মারা যাওয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘এখন আমার কাছে বারবার মনে হয় মাস্ক পরিহিত থাকলে হয়তো আমার স্ত্রীকে মরতে হতো না। আমরা মানুষকে সচেতন করছি। কোনো অবস্থাতেই ব্যর্থ হলে চলবে না। প্রয়োজনে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হবে।’

শনিবার দুপুরে কিশোরগঞ্জে ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল পরিদর্শন ও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়ের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সচিব এসব কথা বলেন।

করোনাকালে সরকারের পক্ষ থেকে মাস্ক পরা ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে বারবার তাগিদ দিলেও খুব বেশি আমলে নেয়নি সাধারণ মানুষ। সম্প্রতি ঘরে বাইরে বের হলে এবং অফিস-আদালতে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করে পরিপত্র জারি করে সরকার। তবুও খুব বেশি সাড়া নেই জনসাধারণের।

পরিপত্রের কথা তুলে ধরে সচিব মো. আবদুল মান্নান বলেন, এটি নিশ্চিত করতে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে টাক্সফোর্স গঠন করা হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ এ ব্যাপারে কঠোর ভূমিকা পালন করবে।

মাস্ক পরার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে স্বাস্থ্য সচিব বলেন, ‘আমি আমার স্ত্রীকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে যাই, সেখানে একজন নিকটাত্মীয়ের মাধ্যমে আমার স্ত্রী কোভিড আক্রান্ত হয়ে মারা যান। সেখানে ওই নারী এবং আমার স্ত্রী দুজনই মাস্ক ছাড়া ছিলেন। যার কাছ থেকে আমার স্ত্রী সংক্রমিত হয়েছিলেন, তিনি এখন সুস্থ। তাই এখন আমার কাছে বারবার মনে হয় মাস্ক পরিহিত থাকলে হয়তো আমার স্ত্রীকে মরতে হতো না।’

গত ২৪ জুন করোনায় আক্রান্ত হয়ে ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে মারা যান স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আব্দুল মান্নানের স্ত্রী কামরুন নাহার।

সচিব বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক পরিবর্তনসহ একটি বিব্রতকর ও কঠিন সময়ে নতুন দায়িত্ব পেয়েছি। আশা করি সততা ও দেশপ্রেম নিয়ে এ দায়িত্ব পালন করতে পারবো।’

জেলার হাসপাতালে ডাক্তার ও নার্স সংকটের সমাধান করা হবে উল্লেখ করে সচিব আবদুল মান্নান বলেন, সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে ব্যাপক কাজ করছে। গত তিন মাসে ১০ হাজার ডাক্তার নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

মাঠ প্রশাসনে পদায়নে সুষম বণ্টন হচ্ছে না বলে চিকিৎসক সংকট আছে এমন মন্তব্যও করেন তিনি।

জেলার বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে মানুষ যেন স্বাস্থ্যসেবা নিতে গিয়ে হয়রানির শিকার না হন, এ বিষয়টি নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসক ও সিভিল সার্জনকে নির্দেশ দেন তিনি।

পরে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শন ও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন সচিব আবদুল মান্নান।

জেলা প্রশাসক সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী, পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ, স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক ডা. মো. হাবিবুর রহমান, সিভিল সার্জন ডা. মুজিবুর রহমান, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম, উপ-পরিচালক ডা. মো. হেলাল উদ্দিন, ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. মো. হিবরুল বারী, জেলা বিএমএ-এর সাধারণ সম্পাদক ডা. আব্দুল ওয়াহাব বাদল প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

(ঢাকাটাইমস/২৫জুলাই/বিইউ/জেবি)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অবদান ৫০ শতাংশ: ভিসি আমানুল্লাহ
পাকিস্তানকে বিধ্বস্ত করে সিরিজ শুরু বাংলাদেশের
কোনো অপশক্তির জায়গা আর বাংলাদেশে হবে না: ডা. হারুন
জুলাই শহীদরা জানত না তাদের আত্মত্যাগে কারো মাঝে ক্ষমতার লোভ জাগবে : ইশরাক
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা