‘অমিতাভের অভিযোগ বানোয়াট, ৭ লাখে বইটি সম্পাদনা করেন’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ২৬ আগস্ট ২০২০, ১৫:০৪| আপডেট : ২৬ আগস্ট ২০২০, ১৫:১২
অ- অ+

‘বঙ্গবন্ধু মানেই স্বাধীনতা’ শীর্ষক বইটির মেধাসত্ব নিয়ে যে অভিযোগ লেখক অমিতাভ দেউরী তুলেছেন, সেই সংকলিত বইটিতে তার নিজের কোনো লেখা নেই। বঙ্গবন্ধুর দুর্লভ আলোকচিত্র সাজানো পিক্টোরিয়া বইটি মূলত ছবি নির্ভর। এই বইয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এবং প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেনের প্রবন্ধ রয়েছে।

বইটির তৃতীয় সংস্করণে মেধাসত্ব নিয়ে অমিতাভ দেউরী জার্নি মাল্টিমিডিয়ার প্রধান নির্বাহী ও সাংবাদিক নাজমুল হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন। তবে ৬৫ হাজার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য ‘বঙ্গবন্ধু বুক কর্ণার’ উদ্যোগকে প্রশ্নবিদ্ধ করতেই অমিতাভ এমন অভিযোগ তুলেছেন বলে পাল্টা অভিযোগ নাজমুলের।

জানা যায়, ২০১৮ সালের মার্চ মাসে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়কে সচিত্র পিক্টোরিয়াল বই প্রকাশের প্রস্তাব দেন জার্নি মাল্টিমিডিয়ার স্বত্ত্বাধীকারী নাজমুল হোসেন। মন্ত্রীর আগ্রহের পর অমিতাভ দেউরী এককালীন ৭ লক্ষ টাকার বিনিময়ে বইটি সম্পাদনার দায়িত্ব নেন। বঙ্গবন্ধু বুক কর্ণারে সরবরাহ করা বইটিতে তার নামই সম্পাদক হিসেবে প্রিন্টার্স লাইন ছাপানো হয়েছে।

‘বঙ্গবন্ধু মানেই স্বাধীনতা’ পান্ডুলিপি প্রণয়নে সম্পাদনা পর্ষদে ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, মাহফুজা খানম, ড. খন্দকার বজলুল হক, ড. নাসরীন আহমাদ, মাহবুব উদ্দীন আহমেদ, বীরবিক্রম এবং সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের ট্রাস্টি তারিক হাসান শমীকে যুক্ত করেন জার্নির কর্ণধার নাজমুল হোসেন।

সম্পাদনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বইটির প্রুফ, কম্পোজ এবং কালার কারেকশনের কাজ করেন সম্পাদক অমিতাভ দেউরী। বইটির নামকরণ, গবেষণা এবং সমন্বয়ের দায়িত্বে পালন করেন নাজমুল হোসেন। বঙ্গবন্ধুর ছবির ক্যাপশন লেখা এবং সম্পাদনা পর্ষদের মাধ্যমে যাচাইবাছাইয়ের কাজও করেছেন তিনি। বইটির প্রচ্ছদ ও ডিজাইন করেছেন সব্যসাচী হাজরা।

জানা যায়, ‘বঙ্গবন্ধু মানেই স্বাধীনতা’ বইটির প্রথম সংস্করণে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নাম ছিলো। কিন্তু বইটি ছাপাতে মন্ত্রণালয় কোনও অর্থব্যয় করেনি। তাই জার্নির উদ্যোগে স্পন্সর জোগাড় করে বইটির দ্বিতীয় সংস্করণ ছাপানো হয়। এবার প্রকাশনায় জার্নির নাম যুক্ত হয়।

২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে বইটির আনুষ্ঠানিক মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরবর্তীতে কপিরাইট অফিসে আবেদন করলে যাচাইবাছাইয়ের পর বইটির স্বত্ত্ব জার্নিকে প্রদান করে কপিরাইট অফিস।

রেজিস্টার অব কপিরাইট জাফর রাজা চৌধুরী জানান, কপিরাইট আইনের ১৭ ধারা অনুযায়ী প্রণেতাই সৃজিত কর্মের প্রথম স্বত্ত্বের অধিকারী। যেহেতু মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় কোনও অর্থব্যয় করেনি এবং কোনও চুক্তি সম্পাদন করেনি তাই আবেদনকারী কপিরাইট পেয়েছেন।

অমিতাভ দেউরীর অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘সম্পাদকের অধিকার কপিরাইট অফিস ভালো বলতে পারবে। জার্নির পক্ষ থেকেই মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়কে বইটির পান্ডুলিপি তৈরি করে দেওয়া হয়। কিন্তু ফান্ডের অভাবে আমরা বইটি ছাপাতে পারি নাই।’

‘বইটির উদ্যোক্তা জার্নি অর্থ জোগাড় করে ছাপানোর কাজ সম্পন্ন করে। পরবর্তীতে বই বিক্রির ২৩ শতাংশ অর্থ মন্ত্রণালয় পাবে তাদের সঙ্গে এমন চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। আর কোনও অর্থব্যয় না করেই মন্ত্রণালয় আড়াই কোটির টাকার বেশি রয়্যালিটি পাচ্ছে।’

‘বঙ্গবন্ধু মানেই স্বাধীনতা’ বইটির সম্পাদক অমিতাভ দেড়রীর সঙ্গে এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে এর আগে তিনি গণমাধ্যমকে ‘হারানো মেধাস্বত্ত্ব’ ফিরে পেতে তিনি আইনের দারস্থ হবেন বলে জানিয়েছিলেন।

জার্নি মাল্টিমিডিয়ার প্রধান নির্বাহী নাজমুল হোসেন জানান, অমিতাভ দেউরীকে ৭ লক্ষ টাকার বিনিময়ে ‘ওয়ার্ক ফর হায়ার’ ভিত্তিতে সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।

নাজমুল বলেন, ‘বইটি মৌলিক কোনও সাহিত্য নয়। আমাকে টিম লিডার মেনেই অমিতাভ কাজ করেছিলেন। এসংক্রান্ত সব প্রমাণ আছে। কিন্তু হীন স্বার্থ চরিতার্থ করতে তিনি মেধাস্বত্ত্ব হারিয়েছেন বলে বানোয়াট অভিযোগ করছেন। বঙ্গবন্ধু বুক কর্ণারকে বানচাল করতেই এই কাজ করছেন।’

(ঢাকাটাইমস/২৬আগস্ট/ডিএম)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
সব দেশের সার্বভৌমত্বকে সম্মান করে বাংলাদেশ: প্রেস সচিব
মে দিবস ২০২৫-এ বয়ে আনুক কর্মজীবীদের আশার আলো
৩২ বছর পর ৩১ জুলাই হতে যাচ্ছে জাকসু নির্বাচন
আজ  মহান মে দিবস
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা