কুড়িগ্রামে সবজির চড়া দামে বিপর্যস্ত সাধারণ মানুষ

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০২ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৫:০৩

বন্যায় কুড়িগ্রামের চাষ করা সবজির বেশিরভাগ নষ্ট হওয়ায় জেলার বাজারগুলোতে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সবজিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য। জেলার বাইরে থেতে আসা এসব সবজির চড়া দামে নিম্ন-মধ্যম আয়ের মানুষের জীবন এখন বিপর্যস্ত। লাগামহীন মূল্যের এসব সবজি কিনতে না পেরে পুরো সপ্তাহ ডাল আর ডিম খেয়েই চলছে খেটে খাওয়া অনেক পরিবার।

বন্যা শুরু থেকেই সবজির দাম বাড়তে শুরু করে। কিন্তু গত দু’সপ্তাহ ধরে সবজির দাম লাগামহীন হয়ে পড়ে। বর্তমানে প্রতিটি সবজি কিনতে কেজি প্রতি দুই থেকে চার গুণ দাম গুনতে হচ্ছে সাধারণ মানুষদের।

জেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কাঁচা মরিচ ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকা, পেঁয়াজ ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, বেগুন ৫০ টাকা, আলু ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, ছোট করলা ১২০ টাকা, বড় করলা ৬০ থেকে ৭০ টাকা, মুলা এবং লাল শাক ৩০ থেকে ৪০ টাকা, কলমির শাক ৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। প্রতিটি মিষ্টি কুমড়া ৮০ থেকে ১০০ টাকা, চাল কুমড়া ৪০ থেকে ৫০ টাকা, লাউ ৫০ থেকে ৬০ টাকা ও প্রতি হালি কাঁচাকলা ৪০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে প্রকারভেদে কেজি প্রতি চালের দামও বেড়েছে তিন থেকে পাঁচ টাকা করে।

বাজার করতে আসা প্রভাষক আতাউর রহমান জানান, বাজারগুলোতে সবধরনের সবজির সরবরাহ নেই। যা আছে সেগুলোর দাম চারগুণ বেশি। যার কারণে আগে এক কেজি কিনলে এখন কিনতে হচ্ছে এক পোয়া।

ক্রেতা রফিকুল ইসলাম জানান, নিম্ন-মধ্যম আয়ের মানুষের পক্ষে এখন সবজি কিনে খাওয়া স্বপ্নের ব্যাপার। তাই ডিম ডালে দিন চলে যাচ্ছে।

গৃহিনী ঝরণা রানী জানান, আলু ভর্তা আর ডিম ভাজি দিয়ে সপ্তাহের বেশিরভাগ সময় পার করতে হচ্ছে তার। সবজির বাজারে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। আর কাঁচা মরিচ কিনে খাওয়ার কথা তো চিন্তাই করা যায় না।

এদিকে সবজি বিক্রেতা আব্দুল জলিল জানান, বন্যায় কুড়িগ্রামের অধিকাংশ সবজির আবাদ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় জেলার বাইরে থেকে সবজি আনতে হচ্ছে। ফলে দাম একটু বেশি।

সবজি চাষি মমিনুর রহমান জানান, একবিঘা উঁচু জমিতে লাউ, করলা আবাদ করেছিলাম। বন্যার পানিতে না ডুবলেও বৃষ্টিতে প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। অনেক করলা নষ্ট হয়ে গেছে। আর লাউয়ের ফলন কিছুটা হলেও মূলধন উঠবে না। তিনি ক্ষেত থেকে প্রতিটি লাউ ৪০ টাকায় বিক্রি করছেন।

এ বিষয়ে কুড়িগ্রামের কচাকাটা ইউনিয়নের চেয়াম্যান আব্দুল আউয়াল জানান, এবারের বন্যায় তার ইউনিয়নের ৯৫ ভাগ সবজি ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে বাইরে থেকে সবজি আমদানি করছে ব্যবসায়ীরা। সেগুলোর দাম চড়া হওয়ায় সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছে। বন্যার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে প্রান্তিক চাষিদের জন্য সরকারের বিশেষ প্রণোদনার দাবি জানান তিনি।

অন্যদিকে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এবারে দীর্ঘস্থায়ী বন্যায় কুড়িগ্রামে ১৭ হাজার হেক্টর বিভিন্ন ফসলি জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ১ লাখ ৩৫ হাজার কৃষক। ফলে সরকারিভাবে কৃষিতে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৪০ কোটি টাকা।

(ঢাকাটাইমস/২সেপ্টেম্বর/পিএল)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :