চুলে রং করলে যে ক্ষতি

ফিচার ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১২:৫৩

চুল রং করা এখন একটা ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে। বয়স কমানো বা লুক পরিবর্তনের জন্য অনেকে চুলে রং করেন। চুল পাকলে চিন্তার শেষ নেই। দোকানে গিয়ে অনেকেই কিনে নিয়ে আসেন পার্মানেন্ট কালার। বিজ্ঞাপনের মতোই নিমিষে সাদা চুল লুকিয়ে পড়ে কালো রঙের আবরণে। কিন্তু এতেই আপনার মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। সে খবর কি রাখেন? না রাখলে রাখতে শুরু করুন। কারণ যে পার্মানেন্ট রংটি আপনার চুলের রং পালটে দিচ্ছে। তা আপনাকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে। এই রঙের জন্যই আপনার শরীরে থাবা বসাতে পারে মারণ রোগ ক্যানসার। এমনটাই বলছেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা।

কলব বা হেয়ার কালার যে চুলের স্বাস্থ্যের পক্ষে কতটা খারাপ তা অল্পস্বল্প সবাই জানি। তবুও সেই দিকে কেউ গুরুত্বই দেয় না। কিন্তু নিয়মিত চুলে রং করার ফলেও হতে পারে ক্যানসার। তাই হেয়ার কালার থেকে দূরে থাকার কথাই বলেছেন বিজ্ঞানীরা।

যদিও বা ব্যবহার করতে হয় তাহলে সেক্ষেত্রে টেম্পোরারি হেয়ার কালার ব্যবহার করা উচিত। যে রংগুলো এক বা দুবার শ্যাম্পু করার পর চলে যায়। কারণ, হেয়ার কালারের মধ্যে এমন কিছু কেমিক্যাল থাকে যা ক্যানসারের ঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। প্যারাবেন, অ্যামোনিয়ার মতো ক্ষতিকারক রাসায়নিক মেশানো থাকে হেয়ার ডাই। কিন্তু সংস্থাগুলো সব সময় বলে এই রাসায়নিকগুলো কম মাত্রায় ব্যবহার করা হয়।

সাধারণত তিন রকমের হেয়ার কালার ব্যবহার করা হয়। যার মধ্যে সব থেকে বেশি ব্যবহার করা হয় টেম্পোরারি হেয়ার কালারে। এই রংগুলো বেশি দিন থাকে না। এক থেকে দু’বার শ্যাম্পু করার পরই চলে যায়। টেম্পোরারি হেয়ার কালার কিছুটা হলেও নিরাপদ। কারণ এতে রাসায়নিকের পরিমাণ কম থাকে।

কিন্তু যে হেয়ার কালারগুলো একটু বেশি দিন থাকে সেগুলো থেকেই প্রধানত ত্বকের ক্ষতি শুরু হয়। সাধারণত এই রং এক মাসেরও বেশি দিন পর্যন্ত থেকে যায়। আর যে কালারগুলো ‘পার্মানেন্ট’ হয় সেই রংগুলো সব থেকে বেশি ক্ষতিকারক হয়। এর মধ্যে রাসায়নিক বেশি মেশানো থাকে, যার থেকে শরীরে শুরু হয় বিভিন্ন রকমের সমস্যা।

চুল ঝরে যাওয়া, মাথার ত্বকে অ্যাল্যার্জি, গলা ও ফুসফুসের সমস্যা, চোখের সমস্যার মতো একাধিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই গবেষকরা জানিয়েছেন, খুব বেশি রং ব্যবহার করা উচিত না। আর ব্যবহার করলেও টেম্পোরারি ব্যবহার করা উচিত। এছাড়াও প্রাকৃতিক হেয়ার কালার ব্যবহার করা উচিত। যখন চুলে রং ব্যবহার করবেন, তখন হাতে গ্লাভস পরে নিয়ে ব্যবহার করা উচিত।

চুলে পার্মানেন্ট কালারের প্রভাব নিয়ে লক্ষাধিক মানুষের ওপর সমীক্ষা করেছিলেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। যাতে দেখা যায়, শতকরা চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ শতাংশ মহিলা চুলে রং ব্যবহার করেন। অনেকের চুল না পাকলেও শখের জন্য রং লাগান। চল্লিশ বছরের বেশি বয়সের পুরুষদের মধ্যে ১০ শতাংশ চুলে রং ব্যবহার করেন। আর এতে ক্যানসারের আশঙ্কা বেশি থাকে।

সাধারণত পার্মানেন্ট হেয়ার কালারে অ্যামোনিয়া, পাইরক্সাইডের মতো রাসায়নিকের প্রাধান্য থাকে। এগুলো চুলের সঙ্গে মিশে মানুষের শরীরে ঢুকে যায়। তাতেই ক্যানসারের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। বিশেষ করে মেয়েদের ক্ষেত্রে। চুলে নিয়মিত রং ব্যবহার করা মহিলাদের মধ্যে ব্রেস্ট ক্যানসার, ওভারিয়ান ক্যানসার, স্কিন ক্যানসারের মতো রোগের প্রাধান্য বেশি দেখা যায়।

তাহলে কী করবেন

চুলে বেশিরভাগ সময় ঘরে তৈরি রং ব্যবহার করুন।

বাইরের রং ব্যবহার করলে প্যাকেটে লেখা সময়ের বেশি মাথায় রাখবেন না।

সময় শেষ হয়ে গেলে খুব ভালো করে মাথা ধুয়ে নেবেন পানি দিয়ে।

চুলে রং লাগানোর সময় হাতে গ্লাভস ব্যবহার করবেন।

নির্দেশ না থাকলে দুই ধরনের রং মেশাবেন না।

প্যাকেটে লেখা প্রত্যেকটি নিয়ম খুব ভালো করে পড়ে নেবেন।

(ঢাকাটাইমস/৯ সেপ্টেম্বর/আরজেড/এজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

ফিচার এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :