প্রযুক্তি ও আধুনিকতায় পাল্টে গেছে পুলিশের পদোন্নতি পরীক্ষা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৭ অক্টোবর ২০২০, ১৯:৩১
পুলিশের বিভাগীয় পদোন্নতি পরীক্ষা (ফাইল ছবি)

পদোন্নতি প্রক্রিয়ায় কোনো বিচ্যুতি ও সীমাবদ্ধতার কারণে অযোগ্য লোক পদোন্নতি পেলে যোগ্য লোক কাজে উৎসাহ হারায়, সেবার মান কমে যায়। অধস্তন পু‌লিশ কর্মকর্তা ও সদস্য‌দের জন্য ব্রিটিশ আমল থেকে চলমান বিদ্যমান পদোন্নতি পরীক্ষায় বেশ কিছু সীমাবদ্ধতা ছিল। প্রচলিত এই পদ্ধতিতে ইউনিটভিত্তিক পরীক্ষা গ্রহণ করা হতো। ইউনিট অনুসারে ভিন্ন ভিন্নসংখ্যক শূন্য পদের বিপরীতে পরীক্ষার মাধ্যমে ইউ‌নিটভি‌ত্তিক পদোন্নতি দেয়া হতো।

নানা কারণে কোনো ইউনিটে কম, কোনো ইউনিটে বেশিসংখ্যক শূন্যপদ থাকতো। কোনো সদস্যের মৃত্যু হলে বা বদলিজনিত কারণে অবসর গ্রহণের ফ‌লে নতুন নতুন পদ শূন্য হতো, নতুন ইউনিট সৃষ্টির কারণেও হতো পার্থক্য। প্রার্থীর সংখ্যা হেরফেরের কারণে পদোন্নতির সুযোগ সবার জন্য সমান ছিল না। এছাড়া, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করা, অ‌বৈধ আর্থিক লেন‌দেন ইত্যাদি নানা প্রভাব‌কের কারণে প‌দোন্ন‌তি‌তে সুবিচার ব‌ঞ্চিত হওয়ার সু‌যোগ ছিল। এসব নানা কারণে পুলিশের অধস্তন সদস্যদের মধ্যে ছিল হতাশা ও অভিযোগ।

এসব বিষয় ভাবনায় নিয়ে বাংলাদেশের ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ ড. বেনজীর আহমেদের নির্দেশে অভ্যন্তরীণ সেবা সহজীকরণ ও প্রাতিষ্ঠানিক পেশাদারিত্বের ভিত্তিতে উত্তরণের উপায় হিসেবে নতুন একটি পরীক্ষা চালু করা হয়েছে। এই পদ্ধতিতে অধস্তন কর্মকর্তা ও সদস্য‌দের প‌দোন্ন‌তি পরীক্ষা হবে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স কর্তৃক কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রিত।

পুলিশ সদরদপ্তর জানায়, এরই ম‌ধ্যে সকল ইউনিটের পদোন্নতি পরীক্ষার্থীরা এই প্রথমবারের মতো সারা‌দে‌শে একই সময়ে, একই প্রশ্নে পরীক্ষা দিয়েছেন। এবারই প্রথম নৈব্যত্তিক প্রশ্ন পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীরা লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন। উভয় পরীক্ষার ক্ষেত্রে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স কর্তৃক প্রেরিত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা প্রতি ইউনিটে উপস্থিত থেকে পরীক্ষার মান নিয়ন্ত্রণে যথাযথ ভূমিকা রেখেছেন ও রাখবেন। পরীক্ষার উত্তরপত্র পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে বিশেষ নিরাপত্তার মাধ্যমে প্রেরিত হয়েছে। মানুষ নয়, কম্পিউটারের মাধ্যমে উত্তরপত্র মূল্যায়ন করা হয়ে‌ছে। লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে পুলিশের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসমূহে। স্বচ্ছতা, যোগ্যতা এবং মেধার যথাযথ মূল্যায়নের জন্য সর্বক্ষেত্রেই উপস্থিত থাকবেন পুলিশ হেড‌কোয়ার্টা‌র্স ও রেঞ্জ ডিআই‌জি কার্যাল‌য়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

ন্যায্যতা ও সমমানের মূল্যায়ন নিশ্চিতের জন্য সবশেষে ইন্টারভিউ/ভাইবা গ্রহণ করা হবে কেন্দ্রীয়ভাবে। কেন্দ্রীয়ভাবে ফলাফলের তালিকা প্রস্তুত করে তা থেকে শূন্য পদ পূরণ করা হবে। এর ফলে মেধার মূল্যায়ন ও ন্যায়বিচারের পথ সুগম হবে। পদোন্নতিতে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সঠিক ও যোগ্য ব্যক্তিকে পদোন্নতি দেয়া সম্ভব হবে। গতানুগতিক পদ্ধতির বিপরীতে প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক এই পদোন্নতি প্রক্রিয়া প্রচলনের ফলে নাগরিক সেবায় বাংলাদেশ পুলিশের সদস্যরা অধিকতর মনোযোগের সাথে সেবা নিশ্চিত করতে কার্যকরী ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

পুলিশের এআই‌জি (মি‌ডিয়া অ্যান্ড পিআর) মো. সো‌হেল রানা জানান, গত ২ অক্টোবর নতুন পদ্ধতি‌তে সারাদে‌শে এক‌যো‌গে নৈর্ব্য‌ত্তিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হ‌য়ে‌ছে। এর ফলাফল আজ বুধবার বাংলাদেশ পু‌লি‌শের কে‌ন্দ্রীয় ও‌য়েবসাইট এবং ফেসবুক পেই‌জে প্রকাশ করা হ‌য়ে‌ছে।

(ঢাকাটাইমস/০৭অক্টোবর/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :