ঢাকার ৭০ শতাংশ বস্তিতে বৈধ পানি যাচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৬ অক্টোবর ২০২০, ১৫:৫৫ | প্রকাশিত : ১৬ অক্টোবর ২০২০, ১৫:৩৩

ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান বলেছেন, পার্শবর্তী দেশ ভারত এবং পাকিস্তানের মেগা শহরগুলোর বস্তিতে পানি ব্যবস্থাপনা খুব একটা বৈধ নয়। তবে ঢাকার ৭০ শতাংশ বস্তিকে বৈধ পানির আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। শতভাগ বস্তিকে বৈধ পানির আওতায় নিয়ে আসতে কাজ করছে ঢাকা ওয়াসা।

শুক্রবার বেলা ১২টায় ‘বিগত ১০ বছরে ঢাকা ওয়াসার অর্জন ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা’ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। ওয়াসা ভবনের বুড়িগঙ্গা হলে এ সংবাদ সম্মেলন হয়।

ওয়াসা পরিচালক বলেন, ‘আমাদের মতো শহর। যেমন নয়াদিল্লি, মুম্বাই, করাচি যারা মেগা সিটি, তাদের একটি অংশ বস্তিতে বসবাস করে। এই বস্তি এলাকায় পানি ব্যবস্থাপনা খুব একটা বৈধ না। কিন্তু ২০১২ সালে আমরা সিদ্ধান্ত নেই, ঢাকা শহরে যে বস্তিগুলো আছে, সেগুলোকে আমরা বৈধ পানির আওতায় আনব এবং আমরা প্রায় ৭০ ভাগ বস্তি এলাকাকে বৈধ পানির আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছি। আমরা সেটাকে শতভাগ করতে চাই। ইনশাআল্লাহ আমরা এতে সফল হব।‘

২০১০ সালে ওয়াসার সিস্টেম লসের পরিমাণ ছিল ৪০ শতাংশ। গত ১০ বছরে তা ২০ শতাংশে নামিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে বলেও জানান ওয়াসা পরিচালক তাকসিম এ খান।

বর্তমানে রাজধানীতে দৈনিক পানির চাহিদা ২৪৫ থেকে ২৫০ কোটি লিটার। আর ওয়সার উৎপাদন ও সরবরাহ ২৬০ থেকে ২৬৫ কোটি লিটার উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘২০০৯-১০ সালে ডিজিটাল ওয়াসা গড়ার লক্ষ্যে আমরা কাজ শুরু করি। ১১ বছর পর আমরা নির্দ্বিধায় বলতে পারি, যে অবস্থায় আমরা ছিলাম, তার চাইতে অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছি। আমাদের উৎপাদন প্রতিদিন ২৬০ থেকে ২৬৫ কোটি লিটার। যা চাহিদার তুলনায় বেশি। দুই কোটি মানুষকে পানির সুবিধা দেওয়া পাহাড় সমান কাজ।‘

ওয়াসার পাইপ লাইন এবং বাসা-বাড়ির পানির রিজার্ভ ট্যাঙ্ককে পানি দূষণের কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেন তাকসিম এ খান। তিনি বলেন, সমস্যা সমাধানে নেটওয়ার্ক ডিস্ট্রিবিউশন এড়িয়া গড়ে তোলা হচ্ছে। আমরা নেটওয়ার্ক ডিস্ট্রিবিউশন এড়িয়া বা ডিএমএ গড়ে তুলছি। ঢাকা শহরে মোট ১৪৫টি ডিএমএ হবে। যার মধ্যে ৬৪টি ডিএমএ এরইমধ্যে তৈরি করা হয়েছে। বাকিগুলোর কাজ চলছে। ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে পুরো ঢাকা ডিএমএ’র আওতায় আসবে। এ ধরনের নেটওয়ার্ক দক্ষিণ এশিয়াতে নেই।‘

‘একটা সময় ছিল মাত্র ৪০ মিলিয়ন ডলার আমাদের সহযোগিতা ছিল। বর্তমানে সেটা ২ বিলিয়ন। আমরা শুধু ঋণ নিচ্ছি সেটা না, আমাদের দেয়ার যে সক্ষমতা, সে সক্ষমতা আমরা অর্জন করেছি।‘

তিনি জানান, ২০০৯-১০ সালে ওয়াসার আয়-ব্যয়ের অনুপাত ছিল দশমিক ৯৫। অর্থাৎ ১০০ টাকা আয় হলে তার ৯৫ টাকা খরচ হয়ে যেত। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত পদ্ধতি অনুযায়ী ১০০ টাকা আয়ের বিপরীতে খরচ ৬৫ টাকা। ওয়াসা বর্তমানে প্রতি ১০০ টাকা আয়ের বিপরীতে খরচ করছে ৬৬ থেকে ৬৮ টাকা।

মিটার রিডিং দেখতে বাসায়-বাসায় লোক পাঠাতে হবে না- এমন প্রযুক্তি নিয়ে আসতে চায় ওয়াসা। তাকসিম এ খান বলেন, ‘আমরা স্মার্ট ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট করেছি এবং করছি। আমরা সে পথেই যাচ্ছি। মানুষের বাসায় যে মিটার সেটা মানুষের বাসায় বাসায় গিয়ে দেখে আসতে হয়। আমরা সেটাকে ডিজিটাল করার চেষ্টা করছি। যাতে মিটার রিডিংটা ওয়েবের মাধ্যমে পাই। তাহলে এটাই হবে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে প্রথম ডিজিটার মিটার রিডিং পদ্ধতি। ওয়েবের মাধ্যমে মিটার রিডিং আমাদের আশেপাশে কোনো শহরেই নেই। এটা যদি আমরা করতে পারি, তাহলে এটা হবে আমাদের বড় একটি অর্জন।‘

রাজধানীর বিতর্কের বিষয় জলাবদ্ধতার বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের ড্রেনিজ ব্যবস্থাপনা একক হাতে, একটি সংস্থার কাছে থাকতে হবে। আমরা বলেছিলাম, এটা সিটি করপোরেশনের কাছে থাকতে হবে। অন্যান্য দেশেও এটা সিটি করপোরেশনের কাছে থাকে। সিটি করপোরেশনের সক্ষমতার অভাব ছিল। এখন নিশ্চয়ই সিটি করপোরেশনের সক্ষমতা অর্জন হয়েছে। ২০১২ সাল থেকে আমরা এটিকে হস্তান্তর করতে মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়ে আসছি। যে দায়িত্ব আমাদের ছিল যে, ঢাকা শহরে জলাবদ্ধতা হয়নি, হয়েছে জলজট। আমরা পাম্পিং করে পানি বের করে দিয়েছি।‘

ওয়াসার এমডি হিসেবে নানা বিতর্কের বিষয়ে সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে তাকসিম খান বলেন, ‘গত দশ বছরে যে অর্জনটা হয়েছে, নিশ্চয়ই সরকার চায় সাফল্য। সাফল্য হয়েছে। এই আলোচনা-সমাচলনা কারণ হচ্ছে যাদের স্বার্থে আঘাত লাগছে, আমাদের কর্মকাণ্ডের দ্বারা যাদের অনৈতিক কর্মকান্ড, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি বাধা গ্রস্থ হয়েছে তারা সামগ্রীকভাবে এই সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। গত দশ বছরে আমার যে কার্যক্রম সেখানে কোথাও অস্বচ্ছলতা আছে কি-না বলুন।‘

ঢাকাটাইমস/১৬অক্টোবর/কারই/ইএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :