কারাগারে থেকেও চাকরিতে বহাল পৌরসভার কর্মচারী

সোলায়মান হোসেন, জামালপুর
| আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২০, ১৫:০০ | প্রকাশিত : ১০ ডিসেম্বর ২০২০, ১৪:৩০

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন মামলায় কারাগারে থাকলেও জামালপুরের মেলান্দহ পৌরসভার অফিস সহায়ক (পিয়ন) সৈকত হোসেন আকাশের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ। সরকারি চাকরি বিধি অনুযায়ী কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী কারাগারে গেলে তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করার বিধান থাকলেও পৌর কর্তৃপক্ষ তা করছে না। অবশ্য পৌরসভার সচিব দাবি করেছেন, আকাশের কারাবাসের বিষয়টি তারা জানেন না।

জানা গেছে, আকাশ জেলার মাদারগঞ্জ উপজেলার গুনারীতলা গ্রামের হাফিজুর রহমানের মেয়ে হিমী আক্তার ছোঁয়াকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকে যৌতুকের জন্য হিমীকে নির্যাতন শুরু করেন। এক পর্যায়ে বাবার বাড়ি চলে যান হিমী। এক বছর আগে যৌতুক এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে পৃথক দুটি মামলা করেন হিমীর বাবা হাফিজুর। এসব মামলায় আদালত থেকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয় আকাশ ও তার বাবা-মা’র বিরুদ্ধে। পরে যৌতুক ও নারী নির্যাতন মামলা থেকে রক্ষা পেতে বিয়ে রেজিস্ট্রির সময় করা সাড়ে ৪ লাখ টাকার কাবিনকে রেখেই কাজীর যোগসাজশে জালিয়াতির মাধ্যমে ফের দেড় লাখ টাকার কাবিন করেন এবং আদালতে জমা দেন আকাশ। এই ঘটনায় কাজীসহ আকাশের বিরুদ্ধে আরো একটি জালিয়াতি মামলা করেন হাফিজুর রহমান। কিন্তু এসব মামলা তুলে নেয়ার জন্য আকাশ বারবার হুমকি দেয়। এছাড়াও আদালতে হাজিরা দিতে আসার সময় সন্ত্রাসীদের নিয়ে হাফিজুর তার মেয়ে ও সাক্ষীদের ওপর হামলা করেন। পরে এসব হুমকি-হামলা থেকে রক্ষা পেতে হাফিজুর জামালপুর সদর ও মাদারগঞ্জ থানায় দু’টি সাধারণ ডায়েরি করেন। তবে এ বিষয়ে পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে হাফিজুরের অভিযোগ। এমনকি আকাশের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পরও প্রকাশ্যে পৌরসভায় চাকরি করছে আকাশ। পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেনি।

হাফিজুর জানান, গত ১৭ নভেম্বর কাবিননামা জালিয়াতির মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জামালপুর জেলা রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে হাফিজুর, তার মেয়ে ও সাক্ষীরা সাক্ষ্য দিতে যাচ্ছিলেন। পথে শহরের ফৌজদারি মোড় এলাকায় তাদের ওপর হামলা চালিয়ে অপহরণের চেষ্টা করেন আকাশ ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী। এসময় তিনি আত্মরক্ষার জন্য পুলিশের জরুরি সেবা ৯৯৯ -এ কল করলে সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আকাশকে গ্রেপ্তার করে। পরে সদর থানা পুলিশ বিষয়টি মেলান্দহ থানা পুলিশকে জানায়। এরপর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিল দেখিয়ে ১৮ নভেম্বর আকাশকে আদালতে সোপর্দ করে। আদালতে বিজ্ঞ বিচারক আকাশের জামিন না মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠান।

পরে আকাশ নারী নির্যাতন মামলায় কারাগারে রয়েছে উল্লেখ করে হাফিজুর রহমান স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিবকে লিখিতভাবে বিষয়টি জানান এবং মেলান্দহ পৌরসভার সচিবকে অনুলিপি দেন। তার অভিযোগ, বিষয়টি জানার পরও পৌর কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। চাকরি বিধি অনুযায়ী আকাশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান তিনি।

তবে মেলান্দহ পৌরসভার সচিব শরিফুল ইসলাম ভুঞার সঙ্গে মোবাইলফোনে যোগাযোগ করলে তিনি এই প্রতিবেককে জানান, পৌর কর্মচারী আকাশ কারাগারে রয়েছে বিষয়টি তিনি জানেন না। তবে আদালত বা পুলিশের পক্ষ থেকে এমন তথ্য পেলে চাকরি বিধি অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(ঢাকাটাইমস/১০ডিসেম্বর/পিএল)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :