সর্বাত্মক লকডাউনেও অলি-গলিতে মানুষের আনাগোনা
করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ ঠেকাতে সরকারের দেয়া সর্বাত্মক লকডাউনের মধ্যেও অলিতে-গলিতে কমছে না মানুষের আনাগোনা। বাইরে বের হয়ে নানান প্রয়োজনের কথা জানাচ্ছেন তারা।
বুধবার রাজধানীর শ্যামলী ও এর আশপাশের এলাকা ঘুরে এমনই চিত্র দেখা গেছে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বাড়তে থাকায় আজ থেকে এক সপ্তাহের জন্য দেশজুড়ে সর্বাত্মক লকডাউন শুরু হয়েছে। ভোর ৬টা থেকে শুরু হওয়া বিধিনিষেধ আগামী ২১ এপ্রিল মধ্যরাত পর্যন্ত বহাল থাকবে। সরকারের দেয়া প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি কেনা, চিকিৎসাসেবা, মৃতদেহ দাফন বা সৎকার ইত্যাদি অতি জরুরি প্রয়োজনীয় কাজে বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে। রাজধানীর মূল সড়কগুলোতে মানুষের তেমন দেখা না পেলেও অলি-গলিতে ছিল জনসাধারণের পদচারণা।
এদিকে লকডাউন নিশ্চিতে সড়কে পুলিশের গাড়ি টহল দিতে দেখা গেছে। পুলিশ এলে মানুষজন দৌড়ে নিরাপদ স্থানে চলে যাচ্ছেন। গাড়ি চলে গেলে আবার বের হচ্ছেন।
নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও বাইরে বের হওয়ার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে পথচারীরা কেউ বললেন ওষুধ কিনতে গিয়েছিলাম, কেউ বললেন বাসায় বাজার নাই ভাই, বাজার করতে যাচ্ছি। আবার কেউবা বলছেন মোবাইলে লোড দিতে বের হয়েছি। এভাবেই ঘরের বাইরে বের হয়ে নানা প্রয়োজনের কথা জানাচ্ছেন তারা। এদের অনেকের কাছে মুভমেন্ট পাসও নেই।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ার পর ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এরপর ধারাবাহিকভাবে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছিল। গত বছরের ৩০ জুন দিনে মৃতের সংখ্যা ৬৪ জনে ওঠে, যা ছিল ওই বছরের সর্বোচ্চ সংখ্যা।
এরপর ধীরে ধীরে সংক্রমণ কমতে থাকে, নভেম্বর ডিসেম্বরে মৃত্যুর সংখ্যা কিছুটা বাড়লেও জানুয়ারি থেকে তা কমতে কমতে মার্চের শুরুতে তা ৫ জনেও নেমে এসেছিল। কিন্তু এরপর আবার বাড়তে থাকে সংক্রমণ, সেই সঙ্গে মৃত্যুও। কয়েকদিনের মধ্যেই দৈনিক মৃত্যু ৫০ ছাড়িয়ে যায়। ১ এপ্রিল ৫৯ জনের মৃত্যুর খবর দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, ৬ এপ্রিল আগের রেকর্ড ভেঙে ৬৬ জনের মৃত্যু হয়। তারপর থেকে এই সংখ্যা ৬০ এর নিচে আর নামেনি। গত ১২ এপ্রিল তার আগে ২৪ ঘণ্টায় ৮৩ জনের মৃত্যু হয়, যা একদিনে মৃত্যুর সর্বোচ্চ রেকর্ড।
এ অবস্থার মধ্যেই ৫ এপ্রিল থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত কঠোর লকডাউন ঘোষণা করে সরকার। তবে, এতে মানুষের বের হওয়া আটকাতে না পেরে ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল সর্বাত্মক লকডাউন ঘোষণা করা হয়।
(ঢাকাটাইমস/১৪এপ্রিল/ আরকে/ইএস)