সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আর গাছ কাটা হবে না: মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ২৪ জুন ২০২১, ২০:৪১
অ- অ+

স্বাধীনতা স্তম্ভ প্রকল্প বাস্তবায়নে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আর গাছ কাটা হবে না বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। সেই সঙ্গে উদ্যান রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বিশেষ একটি কর্তৃপক্ষ তৈরির কথাও জানিয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার গণপূর্ত ভবনের সম্মেলন কক্ষে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত প্রকল্প নিয়ে এক মতবিনিময় কর্মশালায় তিনি একথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, সর্বমোট ১০০টি গাছ কাটার কথা ছিল। ৬০ থেকে ৭০টি গাছ কাটা হয়েছে। আর বৃক্ষনিধন হবে না। হয়তো ৫ থেকে ১০টি গাছ কাটার প্রয়োজন হতে পারে। তবে প্রচুর বৃক্ষ লাগানো হবে।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণে স্বাধীনতা স্তম্ভ নির্মাণ (৩য় পর্যায়) প্রকল্পের কাজ চলছে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে গণপূর্ত অধিদপ্তর।

প্রকল্প বাস্তবায়নে বেশ কিছু গাছ কাটা পড়ায় পরিবেশবাদী সংগঠনসহ বিভিন্ন জন সরব হয়। বিষয়টি আদালতে গড়ালে আপাতত গাছ কাটা বন্ধ রাখতে বলে হাই কোর্ট। কীভাবে সেই কাজ আবারও শুরু করা যায়, তার পরামর্শ নিতে বিশিষ্ট নাগরিকদের নিয়ে কর্মশালার আয়োজন করে গণপূর্ত অধিদপ্তর ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এসময় ত্রিমাত্রিক উপস্থাপনার মাধ্যমে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রকল্পের তৃতীয় পর্যায়ের অগ্রগতির খুঁটিনাটি তুলে ধরা হয়।

এ সময় বিশিষ্টজনেরা বিনোদন কেন্দ্রের পরিবর্তে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত উদ্যানের প্রাকৃতিক পরিবেশ অক্ষুণ্ন রাখার আহ্বান জানান।

সভায় ন্যাশনাল হারবেরিয়ামের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. নাসির উদ্দিন বলেন, উদ্যানে আরও কীভাবে গাছপালা বাড়ানো যায় এবং সেখানে যাতে বিদেশি কোনো গাছ লাগানো না হয় সেদিক খেয়াল রাখতে হবে। বিশেষ করে বিলুপ্ত প্রজাতির দেশীয় গাছ লাগাতে যেতে পারে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হারুনুর রশিদ বলেন, নকশায় বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণসহ মুক্তিযুদ্ধের স্থাপনাগুলো ফুটে ওঠেনি। আর রেস্টুরেন্টসহ এ ধরনের যা কিছু মাটির নিচেই হওয়া উচিত।

অধ্যাপক জসীম উদ্দিন বলেন, প্রকল্প হওয়ার বিষয়ে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু স্থাপনা যাতে কম থাকে সেদিকে ও পরিবেশের দিকে নজর দিতে হবে।

অধ্যাপক ড. মো. আজমল হোসেন ভুইয়া বলেন, নকশা দেখে মনে হচ্ছে এটি পার্কেরই পরিবর্তিত রূপ। এটি বিনোদন কেন্দ্র হওয়া উচিত নয়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকে পরিবেশ ঠিক রেখে নকশা সংশোধন করা প্রয়োজন। আমরা স্বাধীনতা স্তম্ভ চাই, তবে সেটা পরিবেশ ও প্রতিবেশ ধ্বংস করে নয়।

সভায় ২০২১ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত কাজের অগ্রগতি জানানো হয়। সভায় জানানো হয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের স্থান ও ১৬ ডিসেম্বরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের স্থানে ভাস্কর্য নির্মাণের জন্য দ্বিতীয় দফায় দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে প্রাপ্ত ভাস্কর্যের মডেলগুলো থেকে চূড়ান্ত বাছাই সম্পন্ন হয়েছে।

সভায় ৫০০ গাড়ির ধারণক্ষমতাসম্পন্ন ভূগর্ভস্থ কার পার্কিংয়ের ভৌত অগ্রগতি ৮০ শতাংশ, ওয়াটার ফাউন্টেইন নির্মাণের ভৌত অগ্রগতি ৮০ শতাংশ, সাতটি ফুড কিয়স্ক, নারী ও পুরুষ প্রতিবন্ধীদের জন্য আলাদা টয়লেট ফ্যাসিলিটিসহ নির্মাণের ভৌত অগ্রগতি ৭৫ শতাংশ ওয়াকওয়ে নির্মাণের ভৌত অগ্রগতি ২৫ শতাংশ এবং মসজিদ নির্মাণের ভৌত অগ্রগতি ৮০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/২৪জুন/আরকে/ইএস)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
"হাতে হারিকেন ধরিয়ে জাহান্নামে পাঠানো হবে!" — চাঁদাবাজি নিয়ে পুলিশ কর্মকর্তার হুঁশিয়ারি
মিডফোর্ডের ঘটনায় ব্যবস্থা নেওয়ার পরও বিএনপিকে দায় চাপানো অপরাজনীতি: সালাহউদ্দিন
মিডফোর্টে পাথর মেরে হত্যা আইয়ামে জাহেলিয়াতকেও হার মানিয়েছে: জামায়াত
মিটফোর্ড হত্যার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি বিএনপি মহাসচিবের
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা