সুনসান আদালত চত্বর
বেলা সাড়ে ১১টা। সুপ্রিম কোর্টের মাজার গেট দিয়ে ভেতরে প্রবেশ। এরপর আইনজীবী সমিতি ভবন, আদালত চত্বর, কোর্ট ভবনসহ সংশ্লিষ্ট জায়গায় ঘুরে দেখা গেল সুনসান নীরবতা। আইনজীবী নেই, মক্কেল নেই, আইনজীবী সহকারী নেই। নেই সেকশনের দায়িত্বে থাকা অনেকেই। খোলা নেই ছোটখাটো দোকানগুলো। ফাঁকা পড়ে আছে আইনজীবীদের গাড়ি রাখার জায়গা। যেখানে প্রতিদিন শত শত প্রাইভেট কার, মোটর সাইকেলসহ অন্যান্য গাড়ির জট লেগে থাকে। আজ তার উল্টো চিত্র।
সুপ্রিম কোর্টের এনেক্স ভবনের সামনে গিয়ে দেখা গেল তালা ঝোলানো। একই চিত্র সুপ্রিম কোর্টের মূল ভবনেরও। এমনকি আদালত প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে যে কয়টি গেট রয়েছে তার একটি বাদে সব বন্ধ। খোলা রাখা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের মাজার গেট। সাধারণত সুপ্রিম কোর্টে প্রবেশ করতে বার কাউন্সিল ভবন সংলগ্ন গেটটি খোলা থাকে। আজকে সেটিও বন্ধ। এনেক্স ৫নং কোর্টের সামনে পেছনে গিয়ে দেখা গেল একজন পুলিশ বসে আছেন। কিন্তু গেট তালা দেয়া।
জানতে চাইলে তিনি বলেন, আজকে এখন পর্যন্ত কেউ আসেননি এই কোর্টে। কালকে আসলে হয়তো পাবেন।
আইনজীবী সমিতির ভেতরে প্রবেশ করে সাধারণ বিচারপ্রার্থী ও কিছু কিছু আইনজীবী মোটরসাইকেল রাখেন। এই গ্যারেজে শত শত মোটরসাইকেল রাখা হয়। কিন্তু আজকে দেখা গেল মাত্র দুটি মোটর সাইকেল। মোটরসাইকেল গ্যারেজে থাকা একজনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোর্ট বন্ধ। তাই কেউ আসেননি। শত শত গাড়ি রাখা হয় প্রতিদিন। জায়গা দিতে পারি না। কিন্তু আজকে মাত্র দুজন গাড়ি রেখেছেন। চিন্তায় আছি কবে কোর্ট পুরোপুরি খুলবে। সবাই আসবে। আমাদের গ্যারেজের ব্যস্ততা বাড়বে।
পাশেই দুটি ফ্ল্যাক্সিলোডের দোকান। তার একটি বন্ধ। আরেকটিতে একজন বসে আছেন। মন ভার করে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, আমাদের এখানে লোকজনের যাতায়াত নেই, ব্যবসাও নেই। আছি চিন্তায়। কোর্ট খোলা থাকলে লোকের সমাগম হবে, আমাদের ব্যবসাও হবে।
আর একটু পাশেই ফাস্টফুডের দোকান, কফির দোকানেও তালা। আইনজীবী বিচারপ্রার্থীর আনাগোনা নেই। বিক্রিও নেই। দোকান বন্ধ করে সবাই চলে গেছেন বাসায়। পাশের মুচিদের বসার জায়গাতেও নেই কেউ।
এবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনের ভেতরে প্রবেশ করে দেখা গেল দু-একটি রুম খোলা। সেটি হচ্ছে ক্যান্টিন ও সাংবাদিকদের বসার জায়গা।
গত ঈদুল আজহার আগে যেসব আসামির জামিন হয়েছে তাদের আদেশের কপি সংশ্লিষ্ট কারাগারে না পৌঁছালে মুক্ত হতে পারছেন না তারা।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ঢাকাটাইমসকে বলেন, বিভিন্ন মামলায় অনেকেরই জামিন হয়েছে। আদেশের কপি অবশ্যই পাঠানো দরকার। এটি তো সুপ্রিম কোর্টের প্রশাসনিক কাজ। এর আগেও এ বিষয়ে প্রধান বিচারপতিকে বলেছিলাম। উনি সেকশন খুলে দিয়েছিলেন। এবার আবার এ বিষয়ে প্রধান বিচারপতি মহোদয়কে বলবো।
করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় মানুষের চলাচলের সরকারের দেয়া বিধিনিষেধে সীমিত আকারে খোলা আছে সুপ্রিম কোর্টের তিনটি বেঞ্চ। এসব বেঞ্চে অতীব জরুরি বিছু বিষয় শুনানি করা হচ্ছে। ভার্চুয়ালি শুনানি করতে গত শুক্রবার এ বিষয়ে আদেশ জারি করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।
(ঢাকাটাইমস/২৫জুলাই/এআইএম/কেআর)