মিনুর সন্তানের পাশে দাঁড়াল কেএসআরএম

বিনা অপরাধে জেলখাটা এবং পরিবর্তীকালে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাওয়া মিনু আক্তারের অসহায় সন্তানের পাশে দাঁড়িয়েছে ইস্পাত নির্মাণ শিল্প প্রতিষ্ঠান কেএসআরএম। মিনু আক্তারের সন্তানের ভরণপোষণ এবং শিক্ষার জন্য ৫ লাখ টাকার চেক দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
সম্প্রতি চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমানের কাছে এই চেক হস্তান্তর করেন কেএসআরএমের গণমাধ্যম উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) সুমনী আক্তার।
শুক্রবার কেএসআরএমের গণমাধ্যম উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম ঢাকাটাইমসকে বলেন, মানবিক এবং সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে কেএসআরএম মিনু আক্তারের সন্তানের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছে।
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান বলেন, কেএসআরএম একটি মহৎ প্রতিষ্ঠান। তাদের এ সেবামূলককাজ অনুকরণীয়। মিনুর সন্তানদের তেমন কোনো অভিভাবক নেই। তাই বিষয়টা নিয়ে আমাদের সতর্কভাবে এগোতে হচ্ছে । আমরা চাই তারা যেন কোনোকিছু থেকে বঞ্চিত না হয়। এই টাকা তাদের নামে ফিক্সড ডিপোজিট করে রাখা হবে।
জানা যায়, স্বামী পরিত্যক্ত হতভাগ্য মিনু আক্তার তার তিন সন্তানের ভরণপোষণের আশ্বাসে অন্যের হয়ে কারাগারে যান। কথা ছিল অল্পদিনের মধ্যে মুক্তি পাবেন। কিন্তু প্রায় তিন বছর অতিবাহিত হলে বিষয়টি জানাজানি হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আইনজীবীসহ কিছু মহানুভব মানুষের প্রচেষ্টায় দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া শেষে মিনু গত বছরের ১৬ জুন কারাগার থেকে মুক্তি পান।
এরমধ্যে মারা যায় মিনুর কন্যসন্তান জান্নাত। কারামুক্তির ১৩ দিনের মাথায় রহস্যজনক সড়ক দুর্ঘটনায় জীবন থেকে মুক্তি পান মিনু। ২৮ জুন দিবাগত রাতে চট্টগ্রাম নগরের বায়েজিদ বোস্তামী ফৌজদারহাট সংযোগ সড়কের আরেফিন নগর এলাকায় মিনুকে গাড়ি চাপা দেওয়া হয়। এতে গুরুতর আহত হন তিনি। খবর পেয়ে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখানে ২৯ জুন ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মিনু।
কোনো পরিচয় না পাওয়ায় একদিন পরে অজ্ঞাত হিসেবে তার লাশ দাফন করে আঞ্জুমান মফিদুল ইসলাম। ৩ জুলাই রাতে পুলিশ ও পরিবার নিশ্চিত হয় যে অজ্ঞাত হিসেবে দাফন করা লাশটি মিনুর। এরই মধ্যে মিনুর বড় ছেলে অর্থাভাবে চাকরি নেয় ষোলশহর চায়ের দোকানে। মিনুর মৃত্যুর পর রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয় বড় ছেলে ইয়াসিন। বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে ফলাও করে সংবাদ প্রকাশ হয়। এতে টনক নড়ে প্রশাসনের। পুলিশের তৎপরতায় খোঁজ মেলে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ শিশু কিশোর সংশোধনাগারে।
(ঢাকাটাইমস/১১ফেব্রুয়ারি/এআর)

মন্তব্য করুন