ভাতের বিনিময়ে পড়াতে চাওয়া সেই আলমগীরের চাকরিতে বাবার আনন্দাশ্রু

পাঁচবিবি (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৮:৫১ | প্রকাশিত : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৮:৪৭

‘শুধু দু-বেলা ভাতের বিনিময়ে পড়াতে চাই’ পোস্টার লাগিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া শিক্ষিত বেকার যুবক আলমগীর কবির চাকরি পাওয়ায় তার বাবার চোখে আনন্দের অশ্রু।

গত ৩ ফেব্রুয়ারি বগুড়ায় দেশের অন্যতম সুপারশপ স্বপ্নর প্রধান কার্যালয়ে রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট হিসেবে তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়। আলমগীরের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন স্বপ্ন’র রিটেইল এক্সপেনশন পরিচালক মো. সামসুদ্দোহা শিমুল।

আলমগীরের জন্ম জয়পুরহাটের পাঁচবিবির মোহাম্মদপুর ইউপির নিভৃতপল্লী বরাইল গ্রাম। তার বাবা পল্লীচিকিৎসক কফিল উদ্দিন ও মা আম্বিয়া খাতুন একজন গৃহিণী। আলমগীর পড়ালেখা শেষ করে চাকরি না পেয়ে হতাশাগ্রস্ত হন। অভাবের সংসার ও বিধবা বড়বোনের দর্জির কাজে উপার্জনের টাকায় আর কতদিন চলে।

তিনি বাড়িতে ফিরতেও পারেন না। কোনো উপায় না পেয়ে অবশেষে খাওয়ার বিনিময়ে পড়িয়ে শহরে থেকে চাকরির খোঁজ করবে একারণেই পোস্টারটি লাগান কবির।

তার এমন অসহায়ত্বের খবর ফেসবুকসহ বিভিন্ন ইলেকট্রিক ও প্রিন্টমিডিয়ায় প্রকাশের পর দেশের বিভিন্ন স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান তার পাশে এগিয়ে আসে। বগুড়া জেলা পুলিশ সুপারের মাধ্যমে আলোচিত আলমগীর কবিরের চাকরি হয় সুপার শপ ’স্বপ্নতে’।

পড়াশোনা শেষ হওয়ার পরও ছেলের চাকরি না হওয়ায় আগে রাতে ঘুম হতো না। ছেলের চাকরি হওয়াতে রাতে এখন শান্তির ঘুম হয় বলে জানান আলমগীরের বাবা।

কবিরের গ্রামের বাড়িতে দেখাযায় গ্রামবাসীরা এসে ভির করছে তার বাড়িতে। তাদের সবার মুখে একই কথা এইবার ছেলেটার একটা সৎগতি হলো। কফিল উদ্দিন আরো বলেন, আমার বয়স হয়েছে ডাক্তারি পেশাও তেমন চলে না। বিধবা মেয়ের দর্জির উপার্জনে সংসার চলে। ছেলের সুখবরের কথা বলতে গিয়ে দু-চোখ দিয়ে আনন্দের অশ্রু ঝড়তে দেখাযায়। ছেলে চাকরির বেতনের টাকা দিক বা না দিক বাকি জীবন সে সুখে থাক এটাই আমাদের আনন্দ বলেও জানান তিনি।

নাটকীয়ভাবে এমন একটি প্রতিষ্ঠিত জায়গায় চাকরি পাওয়ার পর অনুভূতি ও বাবা-মার জন্য কী করবেন জানতে চাইলে আলমগীর মুঠোফোনে বলেন, যে বাবা-মা আমার জন্য এত কষ্ট করেছে তাদের সুখের জন্য আমি সবই করব।

আলমগীরের আরেক মায়ের এক ছেলেসহ দু-ভাই এবং ৪ বোন। সৎভাই শারীরিক প্রতিবন্ধী ও একবোন মারা গেছে। মেয়েদের বিয়ের খরচ যোগাতে এবং আলমগীরকে বগুড়ায় ম্যাচে রেখে পড়াশোনার খরচ চালাতে ৪ বিঘা জমির ৩ বিঘাই বিক্রয় করে তার বাবা। ১ বিঘা জমির ফসল, দর্জির কাজ, হাঁস-মুরগি ও কয়েকটা ছাগল লালন পালনের আয়ে সংসার চলে। বলেন ।আলমগীরের বোন নুরজাহান আক্তার মিষ্টি।

পাঁচবিবি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) পলাশ চন্দ্র দেব বলেন, পাঁচবিবির বরাইল গ্রামের শিক্ষিত বেকার যুবক আলমগীর বগুড়াতে ভাতের বিনিময়ে পড়াতে চাই পোস্টার লাগিয়ে ভাইরাল হলে থানা পুলিশ তার পরিবারের খোঁজ নেয়। তার বাবা-মা ও গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায় তারা প্রকৃত অভাবী।

(ঢাকাটাইমস/১১ফেব্রুয়ারি/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :