মৌলভীবাজারের লাঠি টিলায় হচ্ছে বঙ্গবন্ধু তৃতীয় সাফারি পার্ক

আব্দুল বাছিত বাচ্চু, মৌলভীবাজার
  প্রকাশিত : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৯:৫৯| আপডেট : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ২১:৩৬
অ- অ+

মৌলভীবাজারের জুড়ী সীমান্তের লাঠি টিলার সংরক্ষিত বনাঞ্চলে হচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক। কক্সবাজারের ডুলাহাজারা এবং গাজীপুর বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের পর এটি দেশের তৃতীয় সাফারি পার্ক। প্রায় সাড়ে ৮০০ কোটি টাকার প্রকল্পটি ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন লাভ করেছে । এখন জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় পাঠানোর অপেক্ষায় রয়েছে। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা দাবি করছেন, মৌলভীবাজার জেলায় পর্যটকদের সংখ্যা বাড়ানো এবং সংরক্ষিত বনাঞ্চলের বন্যপ্রাণী রক্ষা ও প্রকৃতি সংরক্ষণের এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে তাদের এই দাবি মানতে নারাজ পরিবেশবাদীরা। বেলা বাপাসহ বিভিন্ন পরিবেশ বাদী সংগঠনের যুক্তি দেশে এমনিতেই বনাঞ্চল ও বন্যপ্রাণীর সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। তার ওপর সংরক্ষিত বনাঞ্চলে সাফারি পার্ক করলে বন ও পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাবে।

বনবিভাগ সূত্রে জানা যায়, সিলেট বনবিভাগের আওতাধীন জুড়ী সীমান্তের লাঠি টিলা বন বিটে সংরক্ষিত বনাঞ্চলের পরিমাণ প্রায় ৫ হাজার ৬৩১ দশমিক ৪০ একর। এখানে সেগুন গামাই করই সহ বিভিন্ন প্রজাতির বনজ গাছ এবং অনেক বন্যপ্রাণী রয়েছে। এছাড়া সীমান্ত এলাকা হওয়ায় প্রায়ই এই বনে ভারতীয় বন্য হাতি নেমে আসে। রয়েছে বানর উল্লুক হনুমান সহ অনেক প্রজাতির বন মোরগ।এছাড়া সামাজিক বনায়নের বেশ কটি সমিতি ও বাগান আছে। এখানে হচ্ছে দেশের তৃতীয় বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক।এদিকে লাঠি টিলা সংরক্ষিত বনে সাফারি পার্ক করার খবরে প্রতিবাদী হয়ে উঠছেন পরিবেশবাদীরা। বাংলাদেশ এনভায়রনমেন্ট ল একটিভিস্ট (বেলা) এবং বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)-সহ বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন গত ১৭ ফেব্রুয়ারি সিলেটের একটি হোটেলে এ বিষয়ে এক সভা করে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন মানবাধিকার ও পরিবেশ বাদী নেত্রী অ্যাডভোকেট সুলতানা কামালসহ দেশের শীর্ষ পরিবেশবাদীরা। সভায় সংরক্ষিত বনাঞ্চলে সাফারি পার্ক না করার অনুরোধ করে কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়। সভায় অংশগ্রহণকারী বাপার মৌলভীবাজার জেলা সমন্বয়ক আ স ম সালেহ এবং বেলার সিলেট জেলা সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট শাহ সাহেদা অভিন্ন বক্তব্য দেন। তাদের দাবি দেশে এমনিতেই দিন দিন বনাঞ্চলের জমির পরিমাণ কমে যাচ্ছে। তার ওপর এখানে সাফারি পার্ক করলে সংরক্ষিত বন ও বন্য প্রাণী শেষ হয়ে যাবে। তবে এলাকায় কৃষি জমিতে সাফারি পার্ক করলে তাদের কোনো আপত্তি নেই বলে জানান।

বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ, মৌলভীবাজার এর বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ( ডিএফও) রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, লাঠি টিলা সংরক্ষিত বনে জমির পরিমাণ সাড়ে ৫ হাজার একররের বেশি । এখানে সড়কের পাশে ধান চাষ হয় এমন মাত্র ২৭০ একর জমিতে করা হচ্ছে সাফারি পার্ক। এতে আপত্তির কিছু দেখছি না। তিনি বলেন, যারা রাম পাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে উন্নয়ন কাজে বাধা দেয় এখনেও আমি তাদের দেখছি। এতে সংরক্ষিত বনাঞ্চল ধ্বংসকারীরা লাভমান হবে। দেশের তৃতীয় সাফারি পার্কের উদ্যোক্তা বন পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী শাহব উদ্দিন আহমেদ এমপি বলেন মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত, মাধবপুর লেক, হাম হাম জলপ্রপাত, হাকালুকি হাওর, অসংখ্য চা বাগানের এর পর এখন বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক হলে দেশি বিদেশি পর্যটকদের মনের খোরাক হবে।এছাড়া লাঠি টিলা বনাঞ্চলকে দখলদারদের হাত থেকে রক্ষা এবং পরিবেশের ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে ।

(ঢাকাটাইমস/২৩ফেব্রুয়ারি/এআর)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
ঢাকায় সবচেয়ে বড় ঈদ জামাত কোথায়? যা জানালেন ডিএনসিসি প্রশাসক
নাটোরে গাছের সঙ্গে প্রাইভেটকারের ধাক্কায় বাবা-মেয়ে নিহত
গার্মেন্টস শিল্পে নৈরাজ্য সৃষ্টি করলে কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে: স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে এশীয় নেতাদের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা