কয়েকটি সংবাদমাধ্যম নেতিবাচক প্রচারণা চালাচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ১৩ এপ্রিল ২০২২, ২১:০৯| আপডেট : ১৩ এপ্রিল ২০২২, ২২:৩৪
অ- অ+

সাশ্রয়ী দামে পণ্য কিনতে টিসিবির দোকানে মানুষের ভিড় লাগাকে স্বাভাবিক বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই বিষয়টি কিছু কিছু সংবাদমাধ্যম নেতিবাচকভাবে কেন তুলে ধরছে সেই প্রশ্নও রেখেছেন সরকারপ্রধান।

নববর্ষের প্রাক্কালে বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণে শেখ হাসিনা বৈশ্বিক সংকট ও মানুষের জীবনমান উন্নয়নে তার সরকারের তৎপরতা তুলে ধরতে গিয়ে একথা বলেন।

সাশ্রয়ী দামে পণ্য কেনার জন্য টিসিবির দোকানে মানুষ ভিড় করবে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটাই স্বাভাবিক। এটাকে নেতিবাচকভাবে তুলে ধরার কী কারণ থাকতে পারে? আমি দৃঢ়ভাবে আপনাদের জানাতে চাই যে দেশে চালসহ কোনো পণ্যের ঘাটতি নেই।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘বৈশ্বিক সংকটের কথা বিবেচনা না করে দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে কয়েকটি সংবাদমাধ্যম নেতিবাচক প্রচারণা চালাচ্ছে। এমনভাবে প্রচারণা চালানো হচ্ছে যেন দেশে দুর্ভিক্ষ অবস্থা বিরাজ করছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনা মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং এই যুদ্ধের ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে বিশ্ববাজারে পণ্যের দামে অস্থিতিশীলতা দেখা দিয়েছে। বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়ায় পণ্য পরিবহন ব্যয়ও ব্যাপক ভাবে বেড়ে গেছে। এর ফলে দেশেও কিছু কিছু পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা কিন্তু চুপচাপ বসে নেই। আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করছি সাধারণ মানুষের জীবনযাপনে স্বস্তি নিয়ে আসার।’

সরকারপ্রধান জানান, রমজানে মানুষের জীবনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে সরকার নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। টিসিবির মাধ্যমে ভর্তুকি দিয়ে প্রায় এক কোটি পরিবারকে কয়েকটি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সাশ্রয়ী দামে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।

ঢাকায় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মাধ্যমে প্রতিদিন ১৫টি ফ্রিজার ভ্যানে করে সাশ্রয়ী দামে মাংস, ডিম ও দুধ বিক্রি করা হচ্ছে। ঈদ উপলক্ষে এক কোটি ৩৩ হাজার ৫৪টি ভিজিএফ কার্ডের বিপরীতে এক লাখ ৩৩০ মেট্রিক টনের বেশি চাল বিশেষ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।

দেশি-বিদেশি ঋণ যাতে বোঝা হয়ে না উঠে সে দিকে সরকারের সতর্ক দৃষ্টি রয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের মূল লক্ষ্য অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে গতিশীলতা আনা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, সম্পদ বৃদ্ধি এবং মানুষের জীবনযাত্রা সহজ করা।’

‘পদ্মা সেতু নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত হচ্ছে। কোনো ঋণ নেওয়া হয়নি। দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের দ্বারা অর্থনৈতিক সমীক্ষার মাধ্যমে আমরা অন্যান্য মেগা প্রকল্পগুলো গ্রহণ করেছি। আর শুধু ঋণ নয়, বিদেশি অংশীদারত্বের ভিত্তিতে অনেক প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে আমাদের অর্থনীতির চেহারা বদলে যাবে।’

দেশের অর্থনীতি সংকটে নেই বলে ভাষণে জাতিকে আশ্বস্ত করেন প্রধানমন্ত্রী। ভাষণে তিনি দেশের অর্থনীতির মূল শক্তি কৃষি ক্ষেত্রে উন্নতির চিত্রও তুলে ধরেন।

দেশের অর্থনীতি বিগত ১৩ বছরে যে শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়েছে তা অর্থনীতির সামস্টিক সূচকগুলো বিবেচনা করলেই স্পষ্ট উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘২০০৯ সালে জিডিপির আকার ছিল মাত্র ১০২ বিলিয়ন ডলার। ২০২১ সালে তা ৪১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। মাথাপিছু আয় ৭০২ মার্কিন ডলার থেকে বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে ২৫৯১ ডলারে দাঁড়িয়েছে।’

সুদূরপ্রসারী রাজনৈতিক ভাবনা এবং দূরদৃষ্টি-সম্পন্ন অর্থনৈতিক কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়নের ফলে এসব অর্জন সম্ভব হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গণতান্ত্রিক ধারা সমুন্নত রেখে মানুষের অংশগ্রহণের মাধ্যমে দেশ পরিচালনার ফলেই আজ বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে প্রতিভাত হয়েছে।’

দেশের উন্নয়নের জন্য কাজ করা সরকারের দায়িত্ব বলে মনে করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। জাতির পিতা সুখী-সমৃদ্ধ যে সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখতেন তা বাস্তবায়নে অবদান রাখতে পারায় নিজে গর্বিত বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।

(ঢাকাটাইমস/১৩এপ্রিল/ডিএম)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
মিটফোর্ডের ঘটনায় ভাষা হারিয়ে ফেলিছি, আমরা লজ্জিত: জামায়াত আমির
গাজায় খাবারের অভাবে মানুষের জীবন হুমকির মুখে, ডব্লিউএফপি’র সতর্কবার্তা
এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার কারণ জানালো তদন্তকারী সংস্থা
ফিরে দেখা ১২ জুলাই: ছুটির দিনের বিকালে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে উত্তাল সারা দেশ
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা