ঈদ ঘিরে জমে উঠেছে বাবুরহাটের কাপড়ের ব্যবসা

নাজমুল হাসান, নরসিংদী
 | প্রকাশিত : ২১ এপ্রিল ২০২২, ১১:০১

ঈদকে ঘিরে পাইকারি ক্রেতায় মুখর হয়ে উঠেছে দেশের অন্যতম কাপড়ের বাজার নরসিংদীর শেখেরচর-বাবুরহাট। রোজার দুই সপ্তাহ আগে থেকেই দেশের নানা প্রান্তের খুচরা কাপড় বিক্রেতারা আসছেন এই হাটে। প্রতি বছরের মতো এবারও দোকানে দোকানে নিত্য নতুন কাপড়ের পসরা সাজিয়েছেন বিক্রেতারা। করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় এই ঈদে কাক্সিক্ষত বেচাকেনা হবে বলে আশা ব্যবসায়ীদের।

সরেজমিন দেখা গেছে, ঈদকে ঘিরে দেশের নানা প্রান্তের পাইকারি ক্রেতায় মুখর হয়ে উঠেছে দেশের অন্যতম পাইকারি কাপড়ের বাজার নরসিংদীর শেখেরচর-বাবুরহাট। বিভিন্ন জেলার খুচরা বিক্রেতারা কিনতে আসছেন শাড়ি, লুঙ্গি, থ্রি-পিস, শার্ট পিস, প্যান্ট পিস, পাঞ্জাবির কাপড়, থান কাপড়সহ দেশীয় তৈরি প্রায় সব ধরনের কাপড়। ঈদ উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো এবারও কাপড়ে আনা হয়েছে নতুন ডিজাইন।

সপ্তাহের শুক্রবার থেকে রবিবার পর্যন্ত রাজশাহী, বগুড়া, কুড়িগ্রাম, সিলেট, ফেনী, বরিশাল, পিরোজপুর, জামালপুর, ভোলা, সিরাজগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোণা, কুমিল্লা, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জসহ দেশের প্রায় সব জেলার পাইকারি ক্রেতার ভিড়ে মুখরিত হয়ে উঠছে বাজারটি। বাজারের প্রতিটি অলিগলিতে হাটের দিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলছে পাইকারি কাপড় বিক্রি। কেনা শেষ হলে শ্রমিকরা কাপড়ের গাইট বেঁধে তুলে দিচ্ছেন ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে রাখা ট্রাক ও অন্যান্য যানবাহনে। প্রতিদিন এখান থেকে পাঁচ শতাধিক ট্রাকবোঝাই কাপড় যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলাতে। অনেকে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পেয়ে যাচ্ছেন কাপড়।

যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হওয়াসহ একই সঙ্গে সবধরনের দেশীয় কাপড়ের বিপুল সমাহার থাকায় এই বাজার থেকে কাপড় কিনতে আসেন ক্রেতারা। ঈদের আগে পছন্দ অনুযায়ী পোশাক তৈরি করে নিতে গজ কাপড়ের বেচাকেনা শুরু হয় আগেভাগেই। অনেকে পাইকারি দামে কিনতে আসছেন জাকাতের কাপড়ও। তবে এই বছর সবধরনের কাপড়ের দাম বেড়েছে বলে জানান ক্রেতারা। অব্যাহতভাবে সুতার দাম বাড়ার কারণে উৎপাদন খরচ বাড়ার কারণে এই বছর কাপড়ের দাম বেশি বলে জানান পাইকারি বিক্রেতারা।

ঢাকার কাপড় ব্যবসায়ী ইমাম হোসেন বলেন, একমাত্র এই হাটেই পাইকারি দামে দেশীয় সবধরনের কাপড় একই সঙ্গে পাওয়া যায়। রোজার আগেই দোকান সাজাতে কাপড় কিনতে এখানে আসা। তবে এ বছর কাপড়ের দাম বেশি।

কুড়িগ্রামের উলিপুর থেকে আসা কাপড় ব্যবসায়ী মনিরুজ্জামান বলেন, পাইকারি দামে কাপড় কিনতে সবসময়ই এই হাটে আসতে হয়। ঈদকে ঘিরে খুচরা বাজারে বেচাকেনা শুরু না হলেও কাপড় সংগ্রহ করতে হচ্ছে আগেই। খুচরা বাজারে পুরোদমে বেচাকেনা শুরু হলে এই হাটের বেচাকেনা আরও বাড়বে।

পাইকারিী কাপড় বিক্রেতা সত্যরঞ্জন দাস বলেন, এবছর রোজার আগে থেকেই সন্তোষজনক বেচাকেনা শুরু হয়েছে। দেশের বিভিন্ন জেলার পাইকারি ক্রেতারা আসতে শুরু করেছেন। সুতার দাম বাড়ার কারণে সবধরনের কাপড়ের দাম কিছুটা বেড়েছে।

আমির হোসেন নামে অপর বিক্রেতা বলেন, প্রতি বছরই ঈদে সবধরনের কাপড়ের গুণগত মানসহ নিত্যনতুন ডিজাইন করা হয়। খুচরা বাজারে পুরোদমে বেচাকেনা শুরু না হলেও বিক্রেতারা আগেই কাপড় কিনতে আসছেন। সামনে বেচাকেনা আরও বাড়বে।

শেখেরচর-বাবুরহাট বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান ভুঁইয়া বলেন, করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় এ বছর সন্তোষজনক বেচাকেনায় লোকসান কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যাশা ব্যবসায়ীদের। ঈদের বেচাকেনাকে ঘিরে ৪৬টি সিসি ক্যামেরা স্থাপনসহ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে এই হাটে।

ছোটবড় প্রায় ৫ হাজার দোকানে সপ্তাহের শুক্রবার থেকে রবিবার পর্যন্ত টানা চারদিন চলে এই হাটের বেচাকেনা।

(ঢাকাটাইমস/২১এপ্রিল/এলএ/এসএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :