টিলা কেটে রাস্তা যাচ্ছে এমপি সুলতান মনসুরের গ্রামে

আব্দুল বাছিত বাচ্চু, মৌলভীবাজার
  প্রকাশিত : ২০ জুলাই ২০২২, ১৮:০৬| আপডেট : ২০ জুলাই ২০২২, ১৮:২৭
অ- অ+

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নে বেশ কয়েকটি টিলা কেটে নতুন একটি রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে। রাস্তাটি বাস্তবায়িত হলে মৌলভীবাজার থেকে কুলাউড়ার স্থানীয় এমপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদের নিজ গ্রামসহ ওই এলাকায় যেতে সাড়ে ৩ কিলোমিটার পর্যন্ত পথ কমে যাবে। এমপির বিশেষ বরাদ্দ থেকে দেওয়া ৩৫ মেট্টিক টন চালের বিনিময়ে রাস্তাটি বাস্তবায়ন করছে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন বিভাগ। অবশ্য কাজের শেষ ভাগে এসে চা বাগানের টিলা কাটা নিয়ে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হলে চা বাগান কর্তৃপক্ষের বাধায় কাজ বন্ধ হয়ে গেছে।

পরিবেশ আইনের বিধান অনুযায়ী সরকারি-বেসরকারি টিলা বা পাহাড় কাটা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ হলেও রাস্তাটি নির্মাণে এই আইনের তোয়াক্কা করা হয়নি।

পরিবেশ অধিদপ্তর, মৌলভীবাজার জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক বদরুল হুদা ঢাকা টাইমসকে জানান, টিলা কাটার কারণে উক্ত প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে শোকজ করা হচ্ছে।

প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর এ কে এম শাহজালাল দৈনিক ঢাকা টাইমসকে জানান, মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া উপজেলা) আসনের সংসদ সদস্য সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদের ২০২১-২২ অর্থবছরের বিশেষ বরাদ্দ থেকে কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচির (কাবিখা) আওতায় লুয়াইউনি-হলিছড়া চা-বাগানের হলিছড়া ফাঁড়ির ১৭ নম্বর সেকশন এলাকায় একটি নতুন রাস্তা নির্মাণের জন্য প্রকল্প তৈরি করে ৩৫ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের মেম্বার আতাউর রহমানকে সভাপতি এবং আমাকে সম্পাদক করে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটিও গঠন করা হয়। রাস্তাটি হলে ৫টি গ্রামের ৪-৫ হাজার মানুষের উপকার হবে বলে জানিয়েছেন এ কে এম শাহজালাল।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে প্রায় ৩ হাজার ফুট লম্বা ও ১০ ফুট চওড়া রাস্তা হয়ে গেছে। আরও কিছু জায়গা বাকি আছে। রাস্তার কিছু স্থানে ইটও বিছানো হয়।

স্থানীয় পরিবেশ কর্মীরা জানান, এখানে মাস খানেক আগে থেকে রাস্তার কাজ শুরু হয়। রাস্তার দুই পাশে ছোট-বড় ১০-১২টি টিলা আছে। রাস্তার জন্য এক্সকাভেটর দিয়ে এসব টিলা কেটে ফেলা হয়।

হা-মীম গ্রুপকে মালিকানাধীন লোহাইউনি-হলিছড়া চা বাগানের মহা ব্যবস্থাপক (জি এম) মো. মাবুদ আলী ঢাকা টাইমসকে বলেন, গত মে মাসে আমাদের চা বাগানের ২৬০ ফুট জায়গা নিয়ে রাস্তাটি নির্মাণের জন্য আবেদন দিলে আমরা অনুমোদন দেই। কিন্তু এখন আমাদের ১ হাজার ১৬০ ফুট জায়গা নিয়ে রাস্তা করা হচ্ছে। আমাদের চা বাগানের ৬-৭টি টিলা কাটা হয়েছে। বাইরে বস্তি এলাকায় আরও কিছু টিলা কাটা পড়েছে। পরিবেশের পাশাপাশি এ রাস্তার সঙ্গে বাগানের নিরাপত্তার বিষয় জড়িত। অথচ এ বিষয়ে আগে কেউ আমাদের সঙ্গে আলোচনা করেনি। তাই শ্রমিকেরা বাধা দেন।এ নিয়ে গত ১৮ জুলাই সোমবার বিকেলে চা শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদুর রহমান খোন্দকার, কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি আবদুছ ছালেক ও স্থানীয় ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মমদুদ হোসেন ঘটনাস্থলে ছুটে যান।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদুর রহমান খন্দকার ঢাকা টাইমসকে জানান, চা বাগানের ম্যানেজার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে মর্মে খবর দিলে আমি এবং ওসি সাহেব সেখানে গিয়েছিলাম। আমি জানি সেখানে একটি সরকারি রাস্তা হচ্ছে। টিলা কাটার বিষয়ে ভালো করে না জেনে কিছু বলা যাবে না।

স্থানীয় সংসদ সদস্য সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ ঢাকা টাইমসকে বলেন, আমরা স্থানীয় জনগণ ও জনপ্রতিনিধিদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে কাজ দেই। কাজ করেন ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার চেয়ারম্যান তথা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সদস্যরা। এখানে টিলা না পাহাড় কেটে রাস্তা হচ্ছে সেটা তারা বলতে পারবে।

(ঢাকাটাইমস/২০জুলাই/এআর)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
বিএনপি মানবিক বাংলাদেশ গড়তে চায়: আমিনুল হক 
অভ্যুত্থানের পর সরকারের কর্তব্য ছিল শিক্ষাখাতের সংস্কারে মনোযোগ দেওয়া: সাকি
৫ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে পুশ-ইন করেছে বিএসএফ 
ইশরাকের বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত চাইল স্থানীয় সরকার বিভাগ
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা