পিবিআই প্রধানের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন, যা বললেন বনজ কুমার

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২২, ২১:৫৯ | প্রকাশিত : ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২২, ২১:৫০

জিজ্ঞাসাবাদের নামে শারীরিক নির্যাতন ও জোরপূর্বক মিথ্যা স্বীকারোক্তি আদায়ের অভিযোগে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) প্রধান বনজ কুমার মজুমদারের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করেছেন সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার।

বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ ড. বেগম জেবুন্নেছারের আদালতে এই আবেদন করেন। আবেদনে পিবিআই প্রধান ছাড়াও আরও পাঁচজনের নাম রয়েছে।

২০১৬ সালের ৫ জুন খুন হন চট্টগ্রামের তৎকালীন পুলিশ সুপার-এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা মিতু। এ ঘটনায় প্রথম মামলার বাদী ছিলেন বাদী বাবুল আক্তার। পরে তাকে আসামি করে মামলা হলে পিবিআই সেটির তদন্তের দায়িত্ব পায়। পরে বাবুলকে আটক করে পিবিআই।

এদিকে হঠাৎ করেই বাবুল আক্তারের মামলার আবেদনকে তদন্তে বাধা দেয়ার চেষ্টা হিসেবে দেখছেন পিবিআই কর্মকর্তারা। সংস্থাটির একাধিক কর্মকর্তা ঢাকাটাইমসকে বলেছেন, বাবুল আক্তারের বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত গুছিয়ে আনা হয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যে চার্জশিট দেওয়া হবে। তাতে বাবুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ চূড়ান্ত পর্যায়ে। সেটা জানতে পেরেই তদন্ত বাধাগ্রস্ত করতেই এই আবেদন করা হয়েছে।

একই কথা বলছেন পিবিআইপ্রধান বনজ কুমার মজুমদার। মামলার আবেদন প্রসঙ্গে ঢাকাটাইমসকে তিনি বলেন, ‘তদন্ত বিলম্ব করানোর জন্য এই ধরনের কাজ করা হয়েছে। আর মামলা তদন্তে পিবিআইয়ের ব্যাপক সুনাম আছে। এই সুনাম আমরা সব সময় ধরে রেখেছি।’

স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গতবছরের ১১ মে বাবুল আক্তারকে ডাকে পিবিআই। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে তার কথা বার্তায় সন্দেহ হলে বাবুলকে আটক দেখানো হয়। এরপর থেকে বাবুল আক্তার স্ত্রী হত্যা মামলায় কারাগারে রয়েছেন।

এদিকে রিমান্ডে নির্যাতনের অভিযোগ এনে বাবুলের পক্ষে আদালত মামলার আবেদনটি করেন তার আইনজীবী গোলাম মাওলা মুরাদ। আদালত আবেদনটি গ্রহণ করে আদেশের জন্য অপেক্ষামান রেখেছেন।

মহানগর দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট মো. ফখরুদ্দিন চৌধুরী জানান, বাবুল আক্তার একটি মামলার আবেদন করেছেন। মামলার আবেদনের শুনানি হয়েছে। আদালত আদেশের জন্য ১৯ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছেন।

মামলার আবেদনে নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন, ২০১৩ এর ১৫ (১) ধারা এবং সংশ্লিষ্ট আইনের ৫ (২) ধারা আনা হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়- ২০২১ সালের ১০ মে থেকে ১৭ মে পর্যন্ত সময়ে পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো ও জেলা অফিসে বাবুল আক্তারের উপর নির্যাতন করা হয়। স্ত্রী হত্যার ঘটনায় মিথ্যা স্বীকারোক্তি দেওয়ার জন্য বাবুল আক্তারের সঙ্গে নিষ্ঠুর আচরণ করা হয় বলেও অভিযোগ করেন আইনজীবীরা।

বাবুলের মামলা আবেদনে যাদের নাম

পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার ছাড়াও সংস্থাটির চট্টগ্রাম জেলা ইউনিটের এসপি নাজমুল হাসান, চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিটের এসপি নাঈমা সুলতানা, পিবিআইয়ের সাবেক পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা ও এ কে এম মহিউদ্দিন সেলিম এবং সংস্থাটির চট্টগ্রাম জেলা ইউনিটের পুলিশ পরিদর্শক কাজী এনায়েত কবিরকে আসামি করা হয়েছে।

২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে নগরীর পাঁচলাইশ থানার ও আর নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে বাসার কাছে গুলি ও ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয় মাহমুদা খানম মিতুকে। স্ত্রীকে খুনের ঘটনায় পুলিশ সদর দপ্তরের তৎকালীন এসপি বাবুল আক্তার বাদী হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। গোয়েন্দা কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদসহ নানা নাটকীয়তার পর ওই বছরের আগস্টে বাবুল আক্তারকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

পিবিআই সূত্রে জানা যায়, বাবুলের করা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়ে তার শ্বশুরের করা মামলার অভিযোগপত্রে তাকে (বাবুল আক্তারকে) প্রধান আসামি করা হচ্ছে।

ঢাকাটাইমস/০৯সেপ্টম্বর/এসএস/ইএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :