সকালে খালি পেটে কাঁচা রসুন অব্যর্থ ওষুধ!

ফিচার ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৯:৪৮

খ্রিস্টপূর্ব ১৫০০ শতকে চীন ও ভারতে রক্ত পাতলা রাখার জন্য রসুনের প্রচলন ছিল ৷ আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের জনক হিপোক্রেটিস রসনুকে ব্যবহার করেছিলেন সারভাইকাল ক্যানসারের চিকিৎসায়৷ লুই পাস্তুর রসুনের অ্যান্টিফাংগাল ও অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল গুণের খবর জানান৷ হৃদরোগ প্রতিরোধে ইউনিভার্সিটি অব কানেক্টিকাট স্কুল অব মেডিসিন–এর কার্ডিওভাসকুলার রিসার্চ টিমের মতে, কাঁচা রসুন খেলে হার্ট অনেক বেশি সুস্থ থাকে ৷

রসুন শুধু রান্নার স্বাদ বাড়ায় না, রসুনের স্বাস্থ্যগুণ আপনাকে অবাক করবে। কয়েকশো রোগ সারিয়ে তুলতে পারে রসুন। রোজ সকালে খালি পেটে যদি দুই কোয়া কাঁচা রসুন চিবিয়ে খেয়ে এক গ্লাস হালকা গরম পানি খেতে পারেন, তবে জানবেন আপনি নানা রোগ থেকে মুক্তি পাবেন। জেনে নেওয়া যাক বিশদে।

রসুনের সবচেয়ে শক্তিশালী যৌগ হল অ্যালিসিন। অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য রয়েছে রসুনে।

১০০ গ্রাম রসুনে আপনি প্রায় ১৫০ ক্যালোরি, ৩৩ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ৬.৩৬ গ্রাম প্রোটিন পান। এছাড়াও রসুন ভিটামিন বি১, বি২, বি৩, বি৬, ফোলেট, ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, ফসফরাস, পটাসিয়াম, সোডিয়াম এবং জিঙ্কও পাওয়া যায়।

হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য রসুনের চেয়ে ভালো আর কিছুই নেই। এটি রক্ত ​​সঞ্চালন এবং কম কোলেস্টেরল বজায় রাখতে সহায়ক। এই বৈশিষ্ট্যগুলোর কারণে অনেক হৃদরোগ নিজেরাই দূরে থাকে। হার্টকে সুস্থ রাখতে প্রতিদিন সকালে একটি কাঁচা রসুনের কোয়া খেলে উপকার পাওয়া যায়। উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেও রসুনের ব্যবহার খুবই উপকারী। এটি উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। বিশেষ করে সিস্টোলিক রক্তচাপ। উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের অবশ্যই রসুন খাওয়া উচিত।

খালি পেটে রসুন খেলে লিভার এবং মূত্রাশয়ের কার্য ক্ষমতা বাড়ে। রসুন খেলে হজমশক্তি বাড়ে। পাচনতন্ত্র ঠিক থাকে।

রসুন এলডিএল অর্থাৎ খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। যাদের হাই কোলেস্টেরল, তারা নিয়মিত সকালে রসুন খেতে পারেন। ফল পাবেন নিজেই। সুস্থ থাকবে হৃদযন্ত্র। রসুন লিভারকেও ভাল রাখে। অতএব রসুনের কিন্তু অনেক গুণ। সুস্থ থাকতে খাওয়া যেতেই পারে। তবে যেকোনও অসুখে আগে ডাক্তারের পরামর্শ অবশ্যই নেবেন।

বিপাকীয় ক্রিয়া ও পরিবেশ দূষণের ফলে যে ফ্রি র‌্যাডিক্যালস তৈরি হয় তা হার্ট তথা সমস্ত শরীরের জন্য ক্ষতিকর৷ রসুনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সেই ক্ষতি খুব ভাল ভাবে ঠেকাতে পারে৷

অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের দৌলতে কমে অ্যালঝাইমার ও ডিমেনসিয়ার প্রকোপ৷ সংক্রমণজনিত অসুখবিসুখ কম হয়, বাড়ে আয়ু৷

রসুনের গুণের শেষ নেই। পুরুষদের যৌন ক্ষমতা বাড়াতে সেই কোন প্রাচীনকাল থেকেই ব্যবহার করা হয় রসুন। পেনিসে রক্তপ্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে রসুনের তুলনা নেই।

ইরেকশনজনিত কোনও সমস্যা থাকলে রোজ তিন-চার কোয়া কাঁচা রসুন খেলে কাজ হবে ম্যাজিকের মত। এক মাস এই রুটিন মেনে চলার পর ইচ্ছা হলে সপ্তাহে তিন দিন এই নিয়ম মেনে চলুন। রান্নাতেও অনেক বেশি রসুন ব্যবহার করুন। কয়েক মাসের মধ্যেই আপনার ইরেকশনজনিত সমস্যা অনেকাংশে কমে যেতে বাধ্য।

রসুন সঠিক রক্ত ​​প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানোর মাধ্যমে হৃদপিণ্ডের স্বাস্থ্যকে উন্নত করে। প্রতিদিন সকালে ১ থেকে ২ কোয়া রসুন খেলে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা কমে।

রসুনে ‘অ্যাজোইন’ নামক এক রাসায়নিক পদার্থ রয়েছে। এ পদার্থ নির্বিঘ্নে রক্ত চলাচলে সহায়তা করে। পাশাপাশি রক্ত জমাট বাঁধা প্রতিরোধ করে। একই সঙ্গে রক্তের কোলেস্টরেল কমাতে বিশেষ ভূমিকা রাখে।

গবেষণায় দেখা গেছে, খালি পেটে রসুন খাওয়া হলে একটি শক্তিশালীঅ্যান্টিবায়োটিক এর মত কাজ করে। সকালে নাস্তার পূর্বে রসুন খেলে এটি আরও উপকারিভাবে কাজ করে। বিশেষ করে খালি পেটে রসুন খাওয়ার ফলে ব্যাকটেরিয়াগুলো উন্মুক্ত হয় এবং তখন রসুনের ক্ষমতার কাছে ব্যাকটেরিয়াগুলো হেরে যায়। ফলে শরীরের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াসমূহ আর রক্ষা পায় না।

শরীরকে ডি-টক্সিফাই করে। অন্যান্য ঔষধের তুলনায় শরীরকে ডি-টক্সিফাই করতে রসুন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। বিশেষজ্ঞদের মতে, রসুন প্যারাসাইট, কৃমি পরিত্রাণ, স্ট্রেস, মানসিক রোগ, ডায়াবেটিস, বিষণ্ণতা এবং ক্যানসারের মত বড় বড় রোগ প্রতিরোধ করতে অনেক উপকারি।

তবে কোনও কিছু অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকদের সঙ্গে পরামর্শ করে নেওয়া প্রয়োজন।

(ঢাকাটাইমস/২৯ সেপ্টেম্বর/আরজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :