‘ক্ষমার চিঠি আমি আনতে যাব কেন?’ ঢাকা টাইমসকে ডা. মুরাদ
অডিও কেলেঙ্কারিতে মন্ত্রিত্ব ও দলীয় পদ হারানো ডা. মুরাদ হাসান আওয়ামী লীগের ‘সাধারণ ক্ষমা’ পাওয়ার চিঠি গিয়ে কেন আনবেন প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ক্ষমা করে দিয়েছেন। শুনেছি, চিঠি হয়েছে। আনতে যাইনি, যাব কেন? চিঠি নিয়ে আমার কোনো মাথা ব্যথা নেই। এটা নিয়ে এত আগ্রহী নই।’
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ময়মনসিংহ বিভাগের প্রতিনিধি সভা শুরুর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে দলের সাধারণ ক্ষমার চিঠির বিষয়ে ঢাকা টাইমসের প্রশ্নের জবাবে এমন প্রতিক্রিয়া জানান মুরাদ হাসান।
দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে এই সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও তার অনেক আগেই তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে উপস্থিত হন মুরাদ হাসান। সেসময় ঢাকা টাইমস প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় সাবেক এই প্রতিমন্ত্রীর।
গত ডিসেম্বরের শেষ দিকে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ‘সাধারণ ক্ষমার’ আবেদন করেন জামালপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য ডা. মুরাদ হাসান।
আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলনের আগে অনুষ্ঠিত জাতীয় কমিটির সভায় সাংগঠনিক শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডের কারণে অব্যাহতিপ্রাপ্তদের ক্ষমা করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
দলীয় ক্ষমার চিঠি পেয়েছেন কি না প্রশ্নের জবাবে ঢাকা টাইমসকে মুরাদ হাসান বলেন, ‘চিঠি নিয়ে আমার কোনো মাথা ব্যথা নেই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমা করে দিয়েছেন। তাই এটা নিয়ে এত আগ্রহী না। চিঠি হয়েছে শুনেছি। কিন্তু আনতে যাইনি। যাব কেন?’
২০২১ সালের ৭ ডিসেম্বর ‘দলীয় ভাবমূর্তি বিনষ্ট, অগঠনতান্ত্রিক ও শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ততার অভিযোগে’ জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদকের পদ থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
এর আগে একটি অডিও কেলেঙ্কারির ঘটনায় তুমুল আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে তিনি পদত্যাগ করেন।
মুরাদের মতোই অডিও কেলেঙ্কারির জেরে দল থেকে বহিষ্কার হওয়া গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বরখাস্ত মেয়র মো. জাহাঙ্গীর আলম সম্প্রতি দল থেকে ক্ষমার চিঠি পেয়েছেন।
এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মুরাদ হাসান ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের চাচার সঙ্গে তার (জাহাঙ্গীর) ভালো সম্পর্ক। তাই জাহাঙ্গীর আলমের চিঠির ওইভাবে দরকার ছিল। কারণ তিনি বেশি আলোচিত ছিলেন।’
ময়মনসিংহ বিভাগের প্রতিনিধি সভায় উপস্থিত আছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, জাতীয় সংসদের উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, শফিকুল ইসলাম চৌধুরী নাদেল, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, কার্যনির্বাহী সদস্য মারুফা আক্তার পপি, সংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ, ধর্মপ্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খানসহ ময়মনসিংহ বিভাগের প্রমুখ নেতাকর্মী।
প্রসঙ্গত, চিকিৎসাবিদ্যার ডিগ্রিধারী ডা. মুরাদ হাসান ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টিকেটে জামালপুর-৪ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ২০১৮ সালে তিনি দ্বিতীয়বার সংসদ সদস্য হন। ২০১৯ সালে শেখ হাসিনা টানা তৃতীয়বার সরকার গঠন করলে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান মুরাদ। ওই বছরই তাকে স্বাস্থ্য থেকে সরিয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।
(ঢাকাটাইমস/২৬জানুয়ারি/জেএ/ডিএম)