ভোটের আগে কঠোর নির্বাচনী আইন মিয়ানমার জান্তা সরকারের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৭ জানুয়ারি ২০২৩, ১৭:৩৪ | প্রকাশিত : ২৭ জানুয়ারি ২০২৩, ১৭:৩২

মিয়ানমারের ক্ষমতা দখলের পর পেরিয়েছে প্রায় দুবছর। এরই মধ্যে নানা বিতর্কের জন্ম দিয়েছে ক্ষমতাসীন জান্তা সরকার। আগামী আগস্টে দেশটিতে জাতীয় ‍নির্বাচর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এরই মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য নতুন নির্বাচনী আইন ঘোষণা করেছে জান্তা। নতুন এই নির্বাচনী আইন রাজনৈতিক দলগুলির জন্য মৃত্যুঘটিত বলেও নিন্দার ঝড় উঠেছে দেশটিতে।

জান্তা সরকারের নতুন নির্বাচনী আইন এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে কার্যত আগামী নির্বাচনে সামরিক সরকারের কোনো বিরোধী দল না থাকে। অর্থাৎ এই আইন দেশটির সামরিক সামরিক বাহিনীর প্রক্সি ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (ইউএসডিপি)-এর পক্ষে কাজ করবে।

দ্য ইরাবতীর প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২১ সালে নির্বাচিত ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) সরকারের কাছ থেকে ক্ষমতা দখলের পর এই বছরের শেষের দিকে সরকার একটি নির্বাচন করার পরিকল্পনা করছে। বৃহস্পতিবার ঘোষণা করা নতুন আইনের অধীনে রাজনৈতিক দলগুলিকে ৬০ দিনের মধ্যে পুনরায় নিবন্ধন করতে হবে বা বিলুপ্তির মুখোমুখি হতে হবে।

নতুন আইন অনুযায়ী ইউনিয়ন স্তরে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী রাজনৈতিক দলগুলিকে তাদের নিবন্ধন অনুমোদিত হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে কমপক্ষে ১ লাখ সদস্য নিয়োগ করতে হবে এবং ছয় মাসের মধ্যে দেশের ৩৩০টি টাউনশিপের মধ্যে কমপক্ষে ১৫০টিতে অফিস খুলতে হবে।

এছাড়াও দলগুলোকে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকে প্রায় ৩৫ হাজার মার্কিন ডলালের সম পরিমাণ অর্থ জমা করতে হবে। যে দলগুলি এই নতুন প্রয়োজনীয়তাগুলি পূরণ করতে অক্ষম তারা নিবন্ধন করার অযোগ্য বলে বিবেচিত হবে৷

নতুন আইনের প্রতিক্রিয়ায় রাজনৈতিক দলগুলি বলছে, নতুন আইনটি সামরিক-সমর্থিত ইউএসডিপির পক্ষে তৈরি করা হয়েছে এবং বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় অন্য দলগুলির পক্ষে তিন মাসের মধ্যে ১ লাখ সদস্য সংগ্রহ করা একেবারেই অসম্ভব।

নতুন আইনের অধীনে শুধু ইউএসডিপি এবং ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি)-এর ইউনিয়ন পর্যায়ে চালানোর জন্য সম্পদ এবং ক্ষমতা রয়েছে।

এনএলডি জান্তার প্রস্তাবিত ভোট প্রত্যাখ্যান করেছে এবং জান্তা-নিযুক্ত ইউনিয়ন নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কাজ করতে অস্বীকার করেছে। এই নিয়মকে জান্তার শাসনের মতোই অবৈধ বলে আখ্যা দিয়েছে তারা।

বিম্লেষকরা বলছেন নতুন আইনের মাধ্য এক ঢিলে দুই পাখি মারার চেষ্টা করছে জান্তা। কারণ পুনরায় নিবন্ধন করতে ব্যর্থ হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিলুপ্ত হয়ে যাবে এনএলডি। ফলে বিনাপ্রতিদ্বন্দীতায় ফের ক্ষমতায় আসার সুযোগ পাবে জান্তা।

নতুন আইন বলছে, একটি একক অঞ্চল বা রাজ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী রাজনৈতিক দলগুলিকে তিন মাসের মধ্যে কমপক্ষে ১ হাজার সদস্য সংগ্রহ করতে হবে। সরকার তাদের জন্য নিয়ম শিথিল করেছে কারণ তারা দেশব্যাপী নির্বাচনে ইউএসডিপির জন্য হুমকি সৃষ্টি করে না বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন।

ইতোমধ্যে জান্তার পরিকল্পিত নির্বাচনকে প্রতারণা বলে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে নিন্দা করা হয়েছে। বর্তমানে দেশটিতে ৯১টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল রয়েছে এবং নতুন আইন কার্যকরভাবে তাদের মধ্য থেকে অনেক দলকেই বিলুপ্ত করে দিবে।

(ঢাকাটাইমস/২৭জানুয়ারি/এসএটি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

আন্তর্জাতিক বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :