‘বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমের ভূমিকা অবিস্মরণীয়’

বাঙালি জাতির মুক্তির প্রশ্নে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রচেষ্টাকে জয়যুক্ত করতে ভারতীয় গণমাধ্যমের ভূমিকাকে ‘অবিস্মরণীয়’ বলে আখ্যায়িত করেছেন বিশিষ্টজনরা। বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে বৃহস্পতিবার রাজধানীর বাংলামোটরে বাংলাদেশ-ভারত ইতিহাস ও ঐতিহ্য পরিষদ আয়োজিত ‘ভারতীয় গণমাধ্যমে বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক সেমিনারে যোগ দিয়ে এসব কথা বলেন বক্তারা।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা উন্নয়ন সমন্বয়ের ‘অর্থনীতিবিদ ইব্রাহীম খালেদ সভাকক্ষে’ এই সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ইনস্টিটিউট ফর পিস অ্যান্ড লিবার্টি’র পরিচালক অধ্যাপক ড. ফকরুল আলম।
বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও উন্নয়ন সমন্বয়ের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আতিউর রহমানের সভাপতিত্বে সেমিনারের নির্বাচিত বিষয়ের ওপর মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন বাংলাদেশ-ভারত ইতিহাস ও ঐতিহ্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম।
পঠিত প্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. এমরান জাহান ও বাংলাদেশ-ভারত ইতিহাস ও ঐতিহ্য পরিষদের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি অধ্যাপক ড. উত্তম কুমার বড়ুয়া।
এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন ফ্রান্স সরকারের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘নাইট অব দ্য ন্যাশনাল অর্ডার অব মেরিট’এ ভূষিত বিশিষ্ট ব্যাংকার দিলীপ দাশগুপ্ত।
সেমিনারে উপস্থাপিত প্রবন্ধে পরিষদ সম্পাদক ও নিউজপোর্টাল বহুমাত্রিক.কম সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময়কার ভারতীয় দৈনিকগুলোর শীর্ষ খবরে যেভাবে ঠাঁই পেয়েছিলেন বাংলাদেশের জনক- তাতে প্রতিয়মান হয়নি তিনি অন্যদেশের একজন নেতা। কেবল স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের সময়েই নয়, স্বাধীনতাপূর্ব ও পরবর্তী সময়গুলোতেও শেখ মুজিবুর রহমান হয়ে উঠেন ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রধান শিরোনামের বিষয়। অবিস্মরণীয় ইতিহাসের অংশ হয়ে উঠা সেসব প্রতিবেদন বাঙালি জাতির জনককে প্রজন্মের কাছে নতুনরূপে মূল্যায়নের সুযোগ করে দেবে।’
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি অধ্যাপক ড. ফকরুল আলম বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে বন্ধুপ্রতীম ভারত ও বাংলাদেশের জনগণের মাঝে অনেক পরস্পরবিরোধী দৃষ্টিভঙ্গির বিকাশ ঘটেছে কোভিডের পূর্বে আমি শিলং সফরে গিয়ে স্থানীয়দের কারো কারো মাঝে বাঙালি বিদ্বেষ লক্ষ্য করি। একইভাবে বাংলাদেশেও অনেকের মাঝে ভারতবিরোধী দৃষ্টিভঙ্গি দেখা যাবে। এমন বাস্তবতায় মুক্তিযুদ্ধের সময়কার ভারতীয় গণমাধ্যমের ইতিবাচক মূল্যায়ন তরুণদের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া জরুরি।’
সেমিনার সভাপতি অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান বলেন, ‘একাত্তরে পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতের বিভিন্ন প্রদেশের গণমাধ্যমসমূহ যে অবিস্মরণীয় ভূমিকা রাখে ইতিহাসে তার যথাযথ স্থান হয়নি আজও। আমি মনে করি, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চ শিক্ষার স্তরে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে বহু গবেষণা হওয়া উচিত। তরুণ প্রজন্ম এতে ইতিহাসের অনেক সত্য নতুন করে জানার সুযোগ পাবে।’
বাংলাদেশ-ভারত ইতিহাস ও ঐতিহ্য পরিষদের দপ্তর সম্পাদক ও আবৃত্তি শিল্পী রুপশ্রী চক্রবর্তীর শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন পরিষদের উপদেষ্টা যুদ্ধাহত বীরমুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন পাহাড়ী বীরপ্রতীক, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক প্রদীপ কুমার দাশ, বাংলাদেশ পথনাটক পরিষদের সভাপতি মিজানুর রহমান, আয়োজক সংগঠনের শিল্প-সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক ও বিশিষ্ট নাট্যকর্মী মিল্টন আহমেদ প্রমুখ। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বাংলাদেশ-ভারত ইতিহাস ও ঐতিহ্য পরিষদের সভাপতি তাপস হোড়।
(ঢাকাটাইমস/১৬মার্চ/এলএ)

মন্তব্য করুন