পদ্মা সেতুতে রেলপথ

বিমানে উড়ে আসছে স্লিপার, ৭ মিটারের অপেক্ষা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ২৭ মার্চ ২০২৩, ১৭:৫৯
অ- অ+

পদ্মা সেতুতে দেশের প্রথম পাথরবিহীন রেললাইন স্থাপনের কাজ প্রায় শেষের দিকে। নির্মাণযজ্ঞে ৭ মিটারের আর একটি স্লিপার সফলভাবে বসে গেলে শতভাগ কাজ সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন প্রকৌশলীরা।

জানা যায়, সিংহভাগ কাজ শেষ হলেও একটি স্লিপারের অভাবে শেষ অংশটুকু ঢালাই করা সম্ভব হচ্ছে না। পদ্মাসেতুর মাঝামাঝি ৫ নম্বর মুভমেন্ট জয়েন্টের একটি স্লিপার নিয়ে চ্যালেঞ্জের কথা জানিয়েছেন প্রকৌশলী জুহুরুল ইসলাম।

তিনি জানান, চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জরুরি ভিত্তিতে বিমানে করে এই স্লিপারটি নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হয়েছে, আশা করি খুব দ্রুত এটি এসে পৌঁছাবে।

সোমবার সকালে তিনি জানান, স্লিপারটির ছিদ্র ডিজাইন অনুযায়ী মিলছে না। সূক্ষ্ম এই রেললাইন নিখুঁতভাবে নির্মাণ একেবারে শেষ পর্যায়ে। কিন্তু শেষ মুভমেন্ট জয়েন্টের বিশেষ এই স্লিপারটি যথাযথ না হওয়ায় বিলম্ব করতে হচ্ছে।

জুহুরুল ইসলাম বলেন, ‘৬ দশমিক ৬৮ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা রেল সেতুতে মোট আটটি মুভমেন্ট জয়েন্ট রয়েছে। এর সাতটি যথাযথভাবে স্থাপন হয়েছে। বাকি জয়েন্টও স্থাপন হয়েছে তবে রেললাইন ঢালাই করার জন্য এই স্লিপারের বিকল্প নেই।’

মূল সেতুতে ১১ হাজার ১৪০টি স্লিপার স্থাপন হয়েছে। মুভমেন্ট জয়েন্টের স্টিলের স্লিপারগুলো ছাড়া বাকি কংক্রিটের সব স্লিপার চীনা ঠিকাদির প্রতিষ্ঠান ফরিদপুরের ভাঙ্গা পুরনো রেল স্টেশনের পাশে স্লিপার ফ্যাক্টরি স্থাপন করে সেখানেই তৈরি করেছে। শুধু সেতুর স্লিপারই নয়; পদ্মা সেতুর রেল সংযোগ প্রকল্পের ১৭২ কিলোমিটার রেল লাইন তৈরির সব স্লিপার তৈরি হয়েছে সেখানে।

প্রকৌশলী জুহুরুল ইসলাম জানান, বিশেষ তাপমাত্রায় মুভমেন্ট জয়েন্ট এবং স্টিলের স্লিপারগুলো তৈরি করে আনা হয় চীন থেকে। শেষ স্লিপারটি পৌঁছলে বাকি অংশের ঢালাই হবে।

ঢালাইয়ের পর ৭২ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হবে। ৩০ মার্চ মাওয়া থেকে পদ্মা সেতু হয়ে পরীক্ষামূলক রেল চলাচলের আশা করা হচ্ছে। এ সময় উপস্থিত থাকবেন রেলপথমন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজন।

পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের ব্যবস্থাপক-১ বিগ্রেডিয়ার সাঈদ আহমেদ বলেন, পদ্মা নদীতে সেতু নির্মাণ একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ ছিল। আবার সেই সেতুতে রেল সংযোগ করা আরেকটি চ্যালেঞ্জিং কাজ।

“যে কোনো জিনিস তৈরির সময় যেটা টেবিলে করা হয়, সেটা যখন বাস্তবে হয় তখন একইরকম হয়ে ওঠে না। সেটার জন্য আমাদের প্রথমদিকে কিছুটা সমস্যা ছিল। যেটা আমরা সংশোধন করেছি।”

তিনি আরও বলেন, “নির্মাণে আমরা সর্বোচ্চ মান নিশ্চিত করেছি। কংক্রিট আনা থেকে শুরু করে প্রেসিং, প্রতিটা সময় আমরা টেস্ট করছি, তারপর সেটা ব্যবহার করছি। পদ্মা সেতুতে রেললাইন স্থাপনের কাজের অগ্রগতি প্রায় ৯৯ শতাংশ।

“রাজধানী থেকে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার পদ্মা সেতু রেল লিঙ্ক প্রকল্পের মধ্যে মাত্র সাত মিটার বাকি রয়েছে। মজবুত এই রেললাইন দেখলে প্রাণ জুড়িয়ে যায়।”

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ে নেটওয়ার্কে যুক্ত হচ্ছে পদ্মা সেতুর রেলপথ। প্রস্তাবিত পথটি পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারতকে সংযুক্ত করে বেনাপোল-যশোর-নড়াইল-ভাঙ্গা-মাওয়া হয়ে নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা-টঙ্গী-আখাউড়া-চট্টগ্রাম-দোহাজারি-মিয়ানমার সীমান্তের ঘুমধুম সীমান্তে গিয়ে মিশবে।

তারা বলছেন, তাই পদ্মা সেতু দিয়ে রেল চলাচলে নতুন এক অধ্যায় রচনা এখন সময়ের ব্যাপারমাত্র। অর্থনীতিতে যুগান্তকারী এক অধ্যায় রচনা করবে নতুন এই রেল নেটওয়ার্ক।

(ঢাকাটাইমস/২৭মার্চ/এলএম/এসএম)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
দেশে নতুন করে আর যেন কোনো স্বৈরাচারের জন্ম না হয়: নাহিদ ইসলাম
BUBT Bids Farewell to Lecturer Arifa Akther as She Embarks on PhD Journey in the USA
শ্রীলঙ্কাকে ১৫৫ রানের টার্গেট দিল বাংলাদেশ
পরীক্ষায় ফেল করায় শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা