শিক্ষককে লাঞ্ছিত: যুব মহিলা লীগ নেত্রী রানু গ্রেপ্তার

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ০৮ জুন ২০২৩, ১৩:৫০ | প্রকাশিত : ০৮ জুন ২০২৩, ১৩:৪২

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা সরকারি বহুমুখী মডেল পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় করা মামলায় যুব মহিলা লীগ নেত্রী সামশাদ রানুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

বুধবার রাতে পৌরসভার এরশাদপুর চাতাল মোড় এলাকার বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেন আলমডাঙ্গা থানার ওসি বিপ্লব কুমার নাথ।

সামশাদ রানু ওরফে রাঙা ভাবি (৪৫) আলমডাঙ্গা পৌর এলাকার এরশাদপুর গ্রামের জাহিদুল হায়দারের স্ত্রী। তিনি চুয়াডাঙ্গা জেলা যুব মহিলা লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও আলমডাঙ্গা পৌরসভার সাবেক মহিলা প্যানেল মেয়র।

ভুক্তভোগী প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম খান বলেন, বিদ্যালয়ের মধ্যেই সবার সামনে সামশাদ রানু আমাকে লাঞ্ছিত করেছেন।

তিনি বলেন, বিদ্যালয়ের অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের অর্ধবার্ষিকী পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছিল। একই দিন ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সামষ্টিক মূল্যায়ন পরীক্ষার দিন ছিল। অর্ধবার্ষিকী পরীক্ষার জন্য সামষ্টিক মূল্যায়ন পরীক্ষা নিতে দেরি হচ্ছিল। সেই শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের মাঠে অবস্থান করছিল। এর মধ্যে সামশাদ রানুর ছেলে সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী অর্ক ছিল। তার গায়ে রোদ লাগার কারণে আমি বিদ্যালয়ে আসতেই আমাকে কলার চেপে ধরে টানতে টানতে বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষের দিকে নিয়ে যান। আমাকে কিল-ঘুষি মারতে থাকেন। তার পায়ের জুতা খুলেও মারধর করতে যান।

বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক ইলিয়াস হোসেন বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত ন্যক্কারজনক। অর্ধবার্ষিকী পরীক্ষার কারণে সামষ্টিক মূল্যায়ন পরীক্ষা নিতে দেরি হওয়ায় সেই শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের মাঠে অবস্থান করছিল। সেই সময় বিদ্যুৎ ছিল না যে, ক্লাস রুমে থাকবে। অর্ধবার্ষিকী পরীক্ষার্থীদের বসানোর পরই তাদেরকে বসানো হতো। এ জন্য দেরি হয়েছে।

তিনি বলেন, মহিলা লীগ নেত্রী সামশাদ রানু সকাল ৯টার পর বিদ্যালয়ে এসেছেন। সোয়া ১০টার পর প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে আসেন। শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের মাঠে থাকা নিয়ে প্রধান শিক্ষককে জামার কলার চেপে ধরে ধাক্কা দিতে দিতে বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষের দিকে নিয়ে আসেন। জুতা খুলে মারতে উদ্যোগ নিলে আমরা ঠেকাই।

অভিযুক্ত সামশাদ রানু বলেন, বিদ্যালয়ের কক্ষ না খোলায় আমার ছেলেসহ প্রায় ৮০০ শিক্ষার্থী সকাল ৯টা থেকে ১০টা পর্যন্ত বিদ্যালয়ের মাঠে অবস্থান করছিল। সোয়া ১০টার পর প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে এলে আমি তার নিকট গিয়ে কক্ষের তালা খোলার কথা বলি। তিনি জানান, এই দায়িত্ব আমার না, সহকারী প্রধান শিক্ষক ইলিয়াস ও কর্মচারী সিদ্দীকের। তিনি আমাকে উলটো বলেন, সহকারী প্রধান শিক্ষকসহ অন্যরা আপনাকে আমার পেছনে লেলিয়ে দিয়েছে। আমি তার জবাবে বললাম আমি এখানে কোনো নেত্রী হিসেবে না, আমি অভিভাবক হিসেবে এসেছি। এরপরই আমি তার জামার কলার চেপে ধরে টেনে নিয়ে কক্ষের তালা খুলিয়েছি। তখন শিক্ষার্থীরা ক্লাসে বসে।

এদিকে এ ঘটনার পর প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম খান বাদী হয়ে বুধবার সন্ধ্যায় আলমডাঙ্গা থানায় সামশাদ বেগমকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।

আরও পড়ুন: কালিয়াকৈর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স: সকাল ৮টা থেকে রোগীর দীর্ঘ লাইন, ডাক্তার বসেন ১০টায়

আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিপ্লব কুমার নাথ বলেন, প্রধান শিক্ষকের মামলায় সামশাদ বেগমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে নেওয়া হবে।

(ঢাকাটাইমস/০৮জুন/এসএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :