ঢাবির আবাসিক হলে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, রাতভর উত্তেজনা
আবাসিক হলের সিট দখলকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক হলে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে রাতভর সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার রাত ১টার দিকে ঘটনার সূত্রপাত হয়। বিভিন্ন হলে থাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন এবং সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের অনুসারীদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
মাস্টার দা সূর্যসেন হলে প্রথমে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে দুগ্রুপের অন্তত ১০ জন আহত হয়। এর মধ্যে অন্তত চারজন গুরুতর আহত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি হন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, রাত ১১টা থেকে শয়নের অনুসারীরা রুম দখল নিয়ে মহড়া দিচ্ছিল। এ সময় তারা ২০৪ নম্বর কক্ষে থাকা সৈকতের এক অনুসারী দুই শিক্ষার্থীকে কক্ষ থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। এরই জেরে দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়। সৈকতের অনুসারীরা দলবদ্ধ হয়ে গিয়ে ওই রুমটির নিয়ন্ত্রণ নেয়ার চেষ্টা করে। এ সময় শয়নের গ্রুপের ৩০-৪০ জন নেতাকর্মী লাঠিসোঁটা ও স্টাম্প নিয়ে সৈকতের অনুসারীদের উপর অতর্কিত আক্রমণ করে। এতে দুই পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়।
রাত ১টার পর সৈকত গ্রুপের আরিফুর রহমান যুবরাজ, আব্দুল্লাহ খান শৈশব ও ফয়সালের নেতৃত্বে বিষয়টি মিমাংসা করতে গেলে শয়নের অনুসারীরা তাদের উপর চড়াও হয়। এ সময় তারা সৈকতের অনুসারীদের হল থেকে বের করে দিয়ে হলের গেটে তালা মেরে দেয়।
উল্লেখ্য, সূর্যসেন হলে শয়নের গ্রুপের নেতৃত্ব দেন, মনির হোসেন, তুষার হোসেন, ওমর ফারুক। অন্যদিকে সৈকতের গ্রুপের নেতৃত্ব দেন আব্দুল্লাহ খান শৈশব ও যুবরাজ।
এদিকে সূর্যসেন হলের ঘটনার জেরে ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ্ হলে সৈকতের অনুসারীরা শয়নের অনুসারীদের উপর হামলা চালায়। এসময় শয়নের অনুসারী বেশ কয়েকজন আহত হয়।
অপরাপর উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য হলগুলোতেও। বঙ্গবন্ধু হল, জিয়া হল, একাত্তর হল, মহসিন হল, জহুরুল হক হলে দুই নেতার অনুসারীরা গভীর রাতে রুম থেকে বের হয়ে মুখোমুখি হয়। এ সময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতসহ বিভিন্ন হলের নেতাকর্মীরা সূর্যসেন হলে এসে উপস্থিত হন। দুই নেতার উপস্থিতিতে বিষয়টি সমঝোতার মাধ্যমে সবাইকে রুমে ফিরে যেতে বলা হয়।
এদিকে ছাত্রলীগের সংঘর্ষের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন তানভীর হাসান সৈকত। তিনি বলেন, ছাত্রদের মধ্যে ভুল বুঝাবুঝি হয়েছিল। পরে আমরা ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ এবং হল প্রশাসন বিষয়টি মিমাংসা করে দিয়েছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাকসুদুর রহমান বলেন, ঘটনাটি সম্পর্কে আমি অবগত। ঘটনার বিস্তারিত জেনে আমরা এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেবো।
(ঢাকাটাইমস/১৮জুন/এসকে/কেএম)