কেরাণীগঞ্জে অটোচালক হত্যা: তিন আসামি গ্রেপ্তার, রহস্য উদঘাটনের দাবি পিবিআইয়ের

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
 | প্রকাশিত : ১৯ জুন ২০২৩, ১৮:১০

তিনদিনের মধ্যে ঢাকার কেরাণীগঞ্জের অটোরিকশা চালক মো. আব্দুল হক আকনের হত্যার রহস্য উন্মোচনের দাবি করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেটিগেশন (পিবিআই)। এ ঘটনায় জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়। গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন- মো. মোরশেদ আলম, মাসুদ ও দেলুয়ার। সোমবার দুপুরে ঢাকা জেলা পিআইয়ের সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পিবিআইয়ের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. কুদরত-ই-খুদা।

নিহত আব্দুল হক আকন মাদারীপুর জেলার ডাসার থানার মাইঝপাড়া গ্রামের আব্দুর রশিদ আকনের ছেলে।

পিবিআই জানায়, ভুক্তভোগী আব্দুল হক আকন ঢাকার মোহাম্মদপুর থানার রায়ের বাজার (বাগানবাড়ী) এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। তিনি পেশায় অটোরিকশার চালক ছিলেন। গত ১৩ জুন দিবাগত রাতে আব্দুল হক আকন জীবিকার তাগিদে অটোরিকশা নিয়ে বের হন। পরের দিন সকাল ৭টার দিকে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার কলাতিয়া নিমতলী ব্রিজের পাশে তার লাশ পাওয়া যায়।

গত ১৪ জুন ভোর সোয়া ৪টা থেকে সাড়ে ৬টার মধ্যে যেকোন সময় অজ্ঞাতনামা আসামিরা আব্দুল হক আকনকে হত্যা করে তার অটোরিকশা ছিনতাই করে নিয়ে যায়। এই ঘটনায় নিহত আব্দুল হক আকনের বড় ভাই আব্দুর রব আকন বাদী হয়ে ঢাকার কেরাণীগঞ্জ মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে পিবিআইয়ের বিশেষ পুলিশ সুপার বলেন, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকার কেরানীগঞ্জে অটোরিকশা আব্দুর হক আকনকে খুন করে অটোরিকশা ছিনতাইয়ের ঘটনায় মূল হোতা আসামি মো. মোরশেদ আলমকে রবিবার সন্ধ্যায় মোহাম্মদপুর থানার রায়েরবাজারের বাগানবাড়ি এলাকায় তার বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্য মতে ছিনতাই হওয়া অটোরিকশা মোটর, রিকশা প্যাডেল এবং চারটি ব্যাটারি উদ্ধার সহ হত্যাকান্ডে সহযোগী অপর দুই আসামি মাসুদ এবং দেলুয়ারকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে পিবিআই জানায়, আব্দুল হক আকনের হত্যা মামলার তদন্ত শুরু করে কেরানীগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ তদন্ত শুরু করে। থানা পুলিশের পাশাপাশি পিবিআই ঢাকা জেলা ঘটনার বিষয়ে ছায়া তদন্ত শুরু করে। পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদারের সঠিক তত্বাবধান ও দিক নির্দেশনায় এবং পিবিআই ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার জনাব মো. কুদরত-ই-খুদার সার্বিক সহযোগিতায় পিবিআই ঢাকা জেলার পুলিশ পরিদর্শক মো. মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে উপপরিদর্শক (এসআই) মো. খোন্দকার মনিরুজ্জামান, এসআই আনিসুর রহমান, এসআই মো. ইমরান আহমেদ, এসআই মো. শহিদুল ইসলাম সহ পিবিআই ঢাকার চৌকস তদন্ত টিম ঘটনার বিষয়ে ছায়া অব্যাহত রাখে। ছায়া তদন্তের এক পর্যায়ে পিবিআই ওই তদন্ত টিম তথ্য প্রযুক্তি ও গোয়েন্দাবৃত্তির মাধ্যমে ঘটনার মাত্র ৭২ ঘন্টার মধ্যে অটোরিকশা চালক নিহত আব্দুল হক আকনকে খুন সহ অটোরিকশা ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত আসামি মোরশেদ আলমকে গ্রেপ্তার করে।

সংবাদ সম্মেলনে পিবিআইয়ের বিশেষ পুলিশ সুপার বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃত মোরশেদ আলম জানায় যে, সে ব্যাটারী চালিত অটোরিকশা ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে ভুক্তভোগী অটোরিকশা নিয়ে রবিবার ভোর সাড়ে চারটার দিকে কলাতিয়া নিমতলা ব্রীজের অনুমান ১০০ গজ পশ্চিম পাশে পাকা রাস্তার পাশে যায়। নির্জন জায়গা দেখে সে ভুক্তভোগীকে রড ও ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যা করে তার অটোরিকশা নিয়ে পালিয়ে যায়। তার দেয়া তথ্য মতে লালবাগ থানার আজিমপুর বড় দায়রা শরীফের মালিক দেলোয়ার হোসেনের হেফাজত থেকে ছিনতাই হওয়া অটোরিকশা মোটর সহ দুইটি প্যাডেল এবং হাজারীবাগ থানার শিকারীটোলা এশিয়ান মার্কেটের এ এম এন্টারপ্রাইজের মালিক মাসুদের হেফাজত থেকে ওই অটোরিকশা চারটি ব্যাটারী উদ্ধার মুলে জব্দ করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ভুকক্তভোগী আব্দুল হক আকনের হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ওই সন্ধ্যা সাতটার দিকে আজিমপুর বড় দায়রা শরীফের মালিক দেলোয়ার হোসেনকে আজিমপুর ষাষাববাড়ি বটতলা এলাকা থেকে এবং হাজারীবাগ থানার শিকারীটোলা এশিয়ান মার্কেটের এ এম এন্টারপ্রাইজের মালিক মাসুদকে গ্রেপ্তার করা হয়। থানা পুলিশ থেকে পিবিআই ঢাকা জেলা স্ব-উদ্দোগে মামলাটি অধিগ্রহণ করে তদন্ত করেছে। গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।

এ বিষয়ে পিবিআই ঢাকা জেলার এসপি মো. কুদরত-ই-খুদা বলেন, গ্রেপ্তারকৃত মো. মোরশেদ আলম সংঘবদ্ধ ব্যাটারী চালিত অটোরিকশা ছিনতাই চক্রের সক্রিয় সদস্য। আমরা তথ্য প্রযুক্তি ও গোয়েন্দাবৃত্তির মাধ্যমে ভুক্তভোগী আব্দুল হক আকনকে খুন সহ অটোরিকশা ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আসামি মোরশেদ আলমকে গ্রেপ্তার করি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি মোরশেদ আলম ঘটনার সাথে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করে। তার দেয়া তথ্য মতে এ ঘটনায় ছিনতাই হওয়া অটোরিকশার মোটর সহ প্যাডেল এবং চারটি ব্যাটারী উদ্ধার করা সহ সহযোগী অপর দুই আসামি দেলোয়ার এবং মাসুদকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃত মোরশেদ আলম নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ী থানার মুকিল্লা গ্রামের মৃত হাসমত আলীর ছেলে, দেলোয়ার হোসেন হবিগঞ্জ জেলার লাখাইদ থানার মশাদিয়া গ্রামের শাহাজান মিয়ার ছেলে এবং মাসুদ ভোলা জেলার লালমোহন থানার করছিবা গ্রামের মৃত খলিলের ছেলে।

(ঢাকাটাইমস/১৯জুন/এএ/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

অপরাধ ও দুর্নীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

অপরাধ ও দুর্নীতি এর সর্বশেষ

হেফাজতে নারীর মৃত্যু: র‌্যাব-১৪ অধিনায়ককে সরানো হচ্ছে?

পাবজি খেলার লোভ দেখিয়ে ৩০ শিশুকে বলাৎকার, যুব অধিকার পরিষদ নেতা গ্রেপ্তার

রাজধানীতে সাড়ে ৮ হাজার লিটার বিদেশি মদসহ গ্রেপ্তার ৩

সংসদ ভবন এলাকায় ছাত্রলীগ কর্মী খুন

বিদেশ ভ্রমণের প্রলোভনে নারী খেলোয়াড়দের ধর্ষণ করতেন নিউটন: র‌্যাব

হেফাজতে নারীর মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত করবে র‍্যাব: মুখপাত্র

নারী ক্রীড়াবিদকে ধর্ষণ, জুজুৎসু অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক নিউটন গ্রেপ্তার

ফরিদপুরে স্কুলছাত্র অন্তর হত্যা: কাঠমিস্ত্রির ছদ্মবেশে থাকা যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার

মেডিকেল সামগ্রী ক্রয় প্রক্রিয়ায় জালিয়াতি, গ্রেপ্তার ২

পোশাক পরে ভাইয়ের পক্ষে মনোনয়ন উত্তোলন, পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ইসির নির্দেশ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :