পুলিশ পরিচয়ে পাসপোর্ট ভেরিফিকেশনের নামে অর্থ আদায়, প্রতারক গ্রেপ্তার
দিনাজপুরে ভুয়া পুলিশ পরিচয়ে পাসপোর্ট ভেরিফিকেশনের নামে দেশব্যাপী সহজ-সরল মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া প্রতারক চক্রের এক সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে দিনাজপুর কোতয়ালী থানার পুলিশ সদস্যবৃন্দ।
বুধবার দুপুর ১টায় দিনাজপুর পুলিশ সুপার কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে সাংবাদিকদের এই তথ্য নিশ্চিত করেন পুলিশ সুপার শাহ্ ইফতেখার আহমেদ, পিপিএম।
এই সময়ে পুলিশ সুপার বলেন যে, দীর্ঘদিন ধরে প্রতারক চক্রটি ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, ফেনী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, রাজশাহী সহ সারা বাংলাদেশে তাদের প্রতারণার জাল বিস্তার করে পাসপোর্ট ভেরিফিকেশনের সেবা প্রত্যাশীদের নিকট ভুয়া স্পেশাল ব্রাঞ্চ (এসবি) পুলিশের পরিচয় দিয়ে পুলিশ ভেরিফিকেশন বাবদ টাকা গ্রহণ করে মানুষের সঙ্গে দীর্ঘদিন থেকে প্রতারণা করে আসছে। তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে দিনাজপুর এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মো. আব্দুল্লাহ্-আল-মাসুমের সমন্বয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) শেখ মো. জিন্নাহ্ আল মামুন এর পরিকল্পনা ও নেতৃত্বে দিনাজপুর কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ মো. তানভিরুল ইসলাম, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. গোলাম মাওলা শাহ্, এসআই (নি.) মো. শামীম হক, এসআই (নি.) ইন্দ্রমোহন রায়, এসআই (নি.) মো. দুলু মিয়াসহ কোতয়ালী থানার অফিসার ও ফোর্সের সহযোগিতায় ধারাবাহিক অভিযানের ভিত্তিতে দিনাজপুর কোতয়ালী থানাধীন হরিহরপুর (কাউয়াপাড়া) গ্রামস্থ মো. মোসলেম উদ্দিনের ছেলে প্রতারক চক্রের সদস্য মো. আসিকুর ইসলাম আশিককে (২৬) গত ২৫ জুলাই রাতে গ্রেপ্তার করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তার থেকে জানা যায় যে, ই-পাসপোর্ট, বাংলাদেশ ভলান্টিয়ার গ্রুপে যুক্ত হয়ে ভেরিফিকেশন সংক্রান্ত পোস্ট বিশ্লেষণ করে কৌশলে পাসপোর্ট সেবা প্রত্যাশীদের ফেসবুক একাউন্ট পাসপোর্ট আবেদনপত্রের কপি থেকে ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করে ভুয়া এসবি বা ডিএসবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে তাদের সঙ্গে মোবাইল ফোন, হোয়াটস্ অ্যাপ, ম্যাসেঞ্জারসহ বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করে ভেরিফিকেশন সংক্রান্ত জটিলতা নিরসন ও পজেটিভ পুলিশ রিপোর্ট দাখিলের কথা বলে বিকাশ, নগদ, রকেট, উপায়, ডাচ বাংলাসহ বিভিন্ন মাধ্যমে টাকা গ্রহণ করে পরবর্তীতে পাসপোর্ট সেবা গ্রহীতাদের নম্বর ব্লক করে দেয়।
গত ৬ মাসে মোবাইল অ্যাকাউন্টে লেনদেনের মাধ্যমে নগদে ১১ লাখ টাকা এবং ডাচ্ বাংলা অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে এক লাখ বাইশ হাজার চুরানব্বই টাকা আত্মসাৎ করার প্রাথমিক তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে। আসামির আসিকুরের নামে বেনামে অসংখ্য সিম থাকার তথ্য পাওয়া যায়।
এ ছাড়াও তার ব্যবহৃত সিমের আইএমই চেক করলে ৩০-৪০টি মোবাইল নম্বর পাওয়া যায়। যা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সিম ব্যবহার করে দিনের পর দিন প্রতারণা চালিয়ে আসছিল। উক্ত বিষয়ে ২৬ জুলাই দিনাজপুর কোতয়ালী থানায় তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ দন্ডবিধি আইনের ১৭০/৪০৬/৪১৯/৩৪ ধারায় একটি মামলা দায়ের হয়। যার মামলা নং-৭৪/৫৯৩।
(ঢাকাটাইমস/২৬জুলাই/এআর)