রাজবাড়ীতে টনসিল অপারেশনে শিশুর মৃত্যু, দুই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা

রাজবাড়ী প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১০:৫৮| আপডেট : ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১১:৪৫
অ- অ+

রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে টনসিল অপারেশনে মোস্তাকিম (৮) নামে এক শিশু মৃত্যুর ঘটনায় দুই চিকিৎসকসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। রবিবার দুপুরে রাজবাড়ীর ১ নং আমলি আদালতে শিশু মোস্তাকিমের মা কাকলী খাতুন বাদী হয়ে মামলাটি করেন।

মামলার প্রেক্ষিতে ১ নং আমলি আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. সুমন হোসেন মামলাটি তদন্তে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার আসামিরা হলেন- রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের নাক, কান ও গলা বিভাগের জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. তাপস চন্দ্র মণ্ডল, অ্যানেসথেশিয়া বিভাগের জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. ইকরামুল করিম উল্লাস ও রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল সংলগ্ন ডিজিটাল ক্লিনিকের ম্যানেজার চরনারায়ণপুর এলাকার মো. আতাউর মণ্ডল।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ আগস্ট বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে কাকলী খাতুন তার ৮ বছর বয়সী ছেলের টনসিলের সমস্যা নিয়ে রাজবাড়ী মেডিকেল সেন্টারে নাক, কান ও গলা রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. তাপস মণ্ডলের কাছে যান। তিনি রোগীর স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর অপারেশন করার পরামর্শ দেন এবং বেশ কিছু পরীক্ষা করতে বলেন। এ সময় সদর হাসপাতাল সংলগ্ন ডিজিটাল ক্লিনিকের ম্যানেজার আতাউর মণ্ডল কাকলী খাতুনকে তার ক্লিনিকে নিয়ে যান এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষার পাশাপাশি কম খরচে ওই ডাক্তারকে দিয়ে অপারেশন করিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেন। এজন্য আতাউর মণ্ডল ওই শিশুর মায়ের কাছ থেকে অপারেশনের খরচ বাবদ সাড়ে ৬ হাজার টাকাও গ্রহণ করেন।

অভিযোগ রয়েছে, আতাউরের কথা মতো কাকলী খাতুন তার ছেলেকে নিয়ে ২৮ আগস্ট রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে আসেন এবং জরুরি বিভাগ থেকে টিকেট নিয়ে বহির্বিভাগে ডা. তাপস মণ্ডলকে দেখান। ডা. তাপস রোগীর অপারেশনের জন্য হাসপাতালে ভর্তি হতে বলেন। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী রোগী পরদিন ২৯ আগস্ট হাসপাতালে ভর্তি হয়। ওইদিন বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে শিশু মোস্তাকিমের টনসিল অপারেশন করা হয়।

অপারেশনের আগে ডা. রোগীর মাকে বলেন, ৩০-৩৫ মিনিটের মধ্যেই অপারেশন শেষ হবে এবং তার ছেলেকে বেডে দেওয়া হবে। এরপর ৩-৪ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও রোগীর জ্ঞান না ফেরায় ডাক্তাররা অপারেশন থিয়েটারে কালক্ষেপণ করতে থাকেন। একপর্যায়ে রাত ৯টার দিকে রোগীকে অজ্ঞান অবস্থায় অপারেশন থিয়েটার থেকে বের করা হয়। পরে তাকে ফরিদপুরে রেফার্ড করা হয়। তাৎক্ষণিক রোগীর আত্মীয়স্বজন রোগীকে নিয়ে প্রথমে ফরিদপুর ডায়াবেটিক হাসপাতালে গেলে তারা রোগী গ্রহণ না করে ফেরত পাঠায়। এরপর ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক রোগীর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। এরপর অ্যাম্বুলেন্সযোগে ফরিদপুর থেকে ঢাকা নেওয়ার পথে রাজবাড়ীর বসন্তপুর এলাকায় রোগী মোস্তাকিম মারা যায়।

রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. এস এম এ হান্নান বলেন, টনসিলের সমস্যা নিয়ে ভর্তি হওয়া শিশুটিকে ফরিদপুরে রেফার্ড করা হয়েছিল। তবে শিশুটির মৃত্যুর খবর আমার জানা নেই।

(ঢাকাটাইমস/০৪ সেপ্টেম্বর/ইএইচ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা