চাঁদপুর মাছঘাটে প্রতিদিন বিক্রি হচ্ছে টনে টনে ইলিশ

চাঁদপুর শহরের বড় স্টেশন মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে দক্ষিণাঞ্চলের আমদানি করা ইলিশ বিক্রি হলেও স্থানীয় আড়ৎগুলোতে বিক্রি হয় পদ্মা-মেঘনার ইলিশ। এসব ইলিশ জেলেরা সরাসরি নদী উপকূলীয় ছোট আড়ৎগুলোতে এনে বিক্রি করেন। এর মধ্যে সদর উপজেলার হরিণা ফেরিঘাটে ইলশের ভর মৌসুমে প্রতিদিন গড়ে দেড় থেকে দুই টন (৫০ মণ) ইলিশ বিক্রি হচ্ছে। তবে এসব ইলিশের খুচরা ক্রেতাই বেশি।
সোমবার দুপুরে হরিণা ফেরিঘাটের মৎস্য আড়তে গিয়ে দেখা গেছে বেশিরভাগই খুচরা ক্রেতা। এছাড়া অল্প কয়েকজন মৎস্য ব্যবসায়ী রয়েছেন যারা জেলেদের কাছ থেকে ইলিশ ক্রয় করে শহরের বাজারগুলোতে এবং পরিচিতি আত্মীয়-স্বজনের জন্য দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠান।
ঘাটে ইলিশ বিক্রি করতে আসা সদরের লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের দোকানঘর এলাকার জেলে লোকমান ও বারেক খান জানান, তারা সকালে ছোট নৌকা নিয়ে মেঘনায় ইলিশ আহরণে নেমেছেন। দুপুর পর্যন্ত যে কয়টি ইলিশ পেয়েছেন বিক্রি করেছেন ১৫০০ টাকা। খরচ গিয়ে তাদের দু’জনের থাকবে ১১শ’ টাকা।
একই ইউনিয়নের বহরিয়া এলাকার জেলে আমিনুল ইসলাম ও আবদুল জলিল জানান, তারাও সকাল থেকে পাওয়া ইলিশ বিক্রি করেছেন ১৩০০ টাকা। এক সপ্তাহ আগে তেমন ইলিশ পাওয়া যায়নি। তবে এখন ছোট-বড় মিলিয়ে কিছু ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। যারা বড় নৌকা নিয়ে ইলিশ ধরতে সাগর এলাকায় যান তারা পরিমাণে বেশি পান। ওই সব নৌকায় জেলে থাকে ১০-১৫ জন।
ফরিদগঞ্জ উপজেলার নয়া হাট থেকে এই আড়তে ইলিশ ক্রয় করতে আসা তসলিম হোসেন বলেন, এখানে আসলে জেলেদের ধরে আনা তাজা ইলিশ ক্রয় করা যায়। দাম বেশী হলেও ভেজাল নেই। এক কেজি ওজনের ইলিশ আজকে ক্রয় করেছি ১৭০০ টাকা করে। ছোট সাইজের ইলিশ প্রতি হালি বিক্রি হয় ৫৫০-৭০০টাকা। সাইজ অনুসারী প্রতি হালি ইলিশের দাম উঠে।
হরিণা আড়তের প্রবীণ মৎস্য ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম সৈয়াল জানান, ইলিশ মৌসুমে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনার দুই পাড়ে কমপক্ষে ২০০ ছোট বড় আড়তে ইলিশ বিক্রি হয়। এখন ইলিশ কম-বেশি পাওয়া যাচ্ছে। তবে নদীতে পানি কমে যাচ্ছে। এরপর আগামী মাসের শুরুর দিকে শুরু হবে মা ইলিশ রক্ষায় অভিযান। তখন জেলের অবসর হয়ে পড়বে। যদি ভাগ্য ভালো হয় আরো ২০-২৫ দিন জেলেরা ইশিল ধরতে পারবে।
অপর আড়তদার মোক্তার হোসেন বলেন, এই আড়তে প্রতিদিন গড়ে দেড় থেকে দুই টন ইলিশ বিক্রি হয়। অর্থাৎ ৩৭-৫০মণ। গড়ে ১ হাজার টাকা কেজি মূল্য হলে ৫০ মণের আনুমানিক মূল্য দাঁড়ায় ২০ লাখ টাকা। ক্রেতাদের মধ্যে খুচরা ক্রেতার সংখ্যাই বেশি। এখানে জেলেরা ইলিশ নিয়ে আসলে হাঁকডাক দিয়ে মুহূর্তের মধ্যে বিক্রি হয়ে যায়। ইলিশে জমিয়ে রাখার কোন সুযোগ থাকে না। যে কারণে আমাদেরকে ইলিশ বরফ দিয়ে রাখতে হয় না। তাজা ইলিশ ক্রয় করার জন্য জেলা সদর, শাহরাস্তি, হাজীগঞ্জ, ফরিদগঞ্জ উপজেলা থেকে অনেক ক্রেতা আসে।
তিনি আরো বলেন, আমাদের আড়তে আজকে ১ কেজি ১০০-২০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৬৫০ থেকে ১৭০০টাকা। আর ৭০০ গ্রাম থেকে ৯০০ গ্রাম পর্যন্ত ইলিশ প্রতিকেজি ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকা। ছোট সাইজের ইলিশ প্রতি হালি বিক্রি হয় ৫৫০-৭০০ টাকা।
চাঁদপুর সদর উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মো. তানজিমুল ইসলাম বলেন, জেলেদের সাথে কথা বলে জেনেছি তারা এখন কম-বেশি ইলিশ পাচ্ছে। যাদের ইলিশ ধরার জালের ফাঁদ বড় তারা বড় সাইজের ইলিশ পায়। আর যারা কারেন্টজাল অথবা অন্য জাল দিয়ে মাছ ধরে তারা ছোট ইলিশ পায়। তবে অনেকে জেলে ইলিশ পেলেও বলতে চায় না পেয়েছি। চাঁদপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে সাগরের ইলিশ আসলে স্থানীয় আড়তগুলোর ইলিশ সব পদ্মা-মেঘনার। এসব ইলিশের স্বাদ বেশী হওয়ায় চাহিদাও বেশী।
সংবাদটি শেয়ার করুন
বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

সিদ্ধিরগঞ্জে ভাগিনার মরদেহ দেখে মামার মৃত্যু

প্রধানমন্ত্রী জন্মদিনে গাজীপুরে বঙ্গবন্ধু গবেষণা পরিষদের দোয়া আয়োজন

ঈদে মিলাদুন্নবি উপলক্ষে কিশোরগঞ্জে ইফার দোয়া মাহফিল

স্কুলছাত্রীকে অপহরণের পর ধর্ষণ, আ.লীগ নেত্রীর ছেলে গ্রেপ্তার

মাদারীপুরে বাসের ধাক্কায় প্রাণ গেল বৃদ্ধের

সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীর বাল্যবিয়ে ঠেকালেন এসিল্যান্ড

প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারীর অনুষ্ঠানে হামলায় আহত ৭

শরীয়তপুরে আ.লীগ নেতার উদ্যোগে প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উদযাপন

যশোর তরুণ লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আলোচনা সভা
