সাগরের মোহনায় নিত্যপণ্যের ভাসমান দোকান

আবু তাহের, রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী)
 | প্রকাশিত : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ২১:১৩

পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার সোনারচর ও কলাগাছিয়াচরের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া সাগরের মোহনায় গড়ে উঠেছে ভাসমান বাজার। দূর থেকে দেখে মনে হবে ট্রলারগুলো নোঙর করে চলছে যাত্রাবিরতি। কিন্তু কাছে এলেই চোখে পড়বে নোঙর করা ট্রলারগুলো আসলে একেকটি ভাসমান দোকান। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যবোঝাই প্রতিটি ট্রলার। জেলে বা ট্রলারের মাঝিরা টাকা কিংবা মাছের বিনিময়ে কিনছেন চাল, ডাল, আলু, পেঁয়াজু, তেল, শুকনো খাবার থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্য। কী নেই সেখানে আছে জরুরি ওষুধও। এমন ছয়টি ট্রলার নিয়ে সাগর মোহনায় গড়ে উঠছে ভাসমান বাজার। তবে এ ভাসমান বাজারের প্রতি স্থানীয় ব্যবসায়ীদের রয়েছে ক্ষোভ।

জেলেদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাগর মোহনায় গড়ে ওঠা এই ট্রলারে ভেসে ভেসেই ক্রেতা-বিক্রেতারা বেচাকেনা করেন। দিন গড়িয়ে রাত নামলেই বাজার জমে ওঠে। এখানে সব ক্রেতাই সাগরে মাছ ধরা জেলে। ট্রলারে মজুদ রাখা খাবার বা জ্বালানি ফুরালেই এখানে ভিড় জমান তারা। পণ্যের দাম বাজার দামের তুলনায় একটু বেশি। কিন্তু স্থলের রাজার অনেক দূরে এবং যেতে বাড়তি জ্বালানি খরচ হয় আবার সময়ও অপচয় হয়। তাই হাতের নাগালের এসব দোকান থেকেই কেনাকাটা করেন জেলেরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলা সদর থেকে নৌপথে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে সোনারচর ও কলাগাছিয়াচরের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া সাগর মোহনায় রয়েছে অসংখ্য জেলে ট্রলার। তাদের সঙ্গেই বেচাকেনা করছে পণ্যবোঝাই ছয়টি ভাসমান ট্রলারের ব্যবসায়ীরা। ট্রলারগুলোতে রয়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রসহ প্রাথমিক চিকিৎসার ওষুধ।

সমুদ্রগামী মাছ ধরার ট্রলারের জেলে বাদল বলেন, সাগরে মাছ ধরার সময় মালামাল কেনা লাগে। সাগরে থাকতেও অনেক কিছুর প্রয়োজন হয়। হলে আসা সময়ের ব্যাপার। এখানে কয়েকটি দোকান আছে, তাই স্থলে যাওয়া লাগে না। এখানে মালামালের দাম একটু বেশি। তারপরেও সাগরে বিপদের সময় এই দোকানই আমাদের প্রয়োজনে আসে।"

ভাসমান ব্যবসায়ী অভিনাশ বলেন, সাগরে গিয়ে অনেক সময় জেলে ট্রলারে নিত্যপ্রয়োজনীয় মালামাল ফুরিয়ে যায়। তেল শেষ হয়ে যায়। তখন বিপদে পড়েন জেলেরা। তখনই আমাদের কাছ থেকে জিনিসপত্র কেনেন। তারা নগদ টাকার পাশপাশি মাছের বিনিময়েও মালামাল কেনেন। ভাসমান দোকানগুলো না থাকলে অন্তত ২৫ কিলোমিটার দূর থেকে রসদ সংগ্রহ করতে হতো তাদের মালামালের দাম খুব বেশি নেই না। আমাদের সেবায় জেলেরা খুশি।'

এদিকে স্থলভাগের ব্যবসায়ীরা জানান, ভাসমান দোকানগুলো শুধু মৌসুমে ব্যবসা করে চলে যায়। স্থানীয় জেলারা এই সুসময়ে তাদের কাছে আসে না। কিন্তু বেকার সময়ে বাকিতে মালামাল ঠিকই নেয়। এ নিয়ে ক্ষোভ জানান তারা। বন বিভাগের সোনারচর বিট কর্মকর্তা মো. রাজ্জাক বলেন, 'এখন পর্যন্ত সাগর মোহনার ভাসমান দোকানে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। সাগরের মোহনায় মৌসুমভিত্তিক এ বাজারে কোনো ভয় নেই। গভীর সমুদ্রে ভয় থাকে, যার কারণে সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে এখানে কয়েকশ ট্রলার নোঙর করে এবং জেলেরা নিত্যপ্রয়োজনীয় মালামাল সংগ্রহ করে।"

(ঢাকাটাইমস/২৫সেপ্টেম্বর/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :