৪৯ বছর পর তিনটি ইউনিট চালু হলো তজুমদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে

ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলার সরকারি হাসপাতাল স্থাপনের ৪৯ বছর পর অবশেষে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চালু হয়েছে আল্ট্রাসনোগ্রাম, প্যাথলজি ও ডেল্টাল সেবা ইউনিট।
সম্প্রতি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নতুন এই তিনটি সেবা ইউনিট চালু হয়। কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন, ভোলা সদর হাসপাতালের সিভিল সার্জন ডা. মো. শফিকুজ্জামান, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. আরিফুল ইসলাম খান।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, তজুমদ্দিনবাসীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ১৯৭৪ সালে তৎকালীন সরকার হাসপাতালটি স্থাপন করেন। প্রথমদিকে ৩১ শয্যাবিশিষ্ট থাকলেও এলাকার মানুষের স্বাস্থ্যসেবাকে আরও বেগবান করার লক্ষ্যে বর্তমান সংসদ সদস্য আলহাজ্ব নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনের সার্বিক সহযোগিতায় সরকার এই হাসপাতালকে ৫০ শয্যায় উন্নতকরণ করেন।
দীর্ঘদিন পর এই সেবা চালু হওয়ায় চরাঞ্চল ও দুর-দুরান্ত থেকে আগত সাধারণ রোগীরা উপকৃত হবেন। এ নিয়ে খুশি উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের মানুষও। সরকার নির্ধারিত ফি প্রদান করে অফিস চলাকালীন সময় যে কেউ এই সেবা গ্রহণ করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আরিফুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে একদল চিকিৎসক রোগীদের বিভিন্ন রোগের পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও অন্যান্য সেবা প্রদান করছেন।
তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এই হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীরা টিসি, ডিসি, ইএসআর, হিমোগ্লোবিন (একত্রে) ১৫০ টাকা ও প্রতিটি আলাদা পরীক্ষার জন্য ৩০ টাকা, এসজিপিটি ৭০ টাকা, ব্লাড সুগার ৬০ টাকা, সিরাম ক্রিয়েটিনিন ৫০ টাকা, লিপিড প্রোফাইল ৩০০টাকা ও আল্ট্রা ২২০ টাকাসহ স্বল্প খরচে বিভিন্ন রোগের পরীক্ষা নিরীক্ষা করা যাবে।
মেডিকেল অফিসার ডা. রোমান মোল্লা জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এসে যে কোনো রোগী সরকারি মূল্যে সপ্তাহের শনি থেকে বুধবার ৫দিন প্যাথলজিক্যাল, সোম থেকে বুধবার ৪দিন আল্ট্রাসনোগ্রাম সেবা গ্রহণ করতে পারবেন। পাশাপাশি প্রতিদিন ডেন্টাল সেবাও গ্রহণ করতে পারবেন।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. তাসমিয়া ইসলাম জানান, আমাদের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত হয়েছে। কিন্তু ডেন্টাল ইউনিটসহ অনেক ক্ষেত্রে লোকবল কম রয়েছে। তারপরও নতুন কয়েকটি সেবা ইউনিট চালু হওয়ায় রোগীর চাপ অনেক বেশি। আমাদের কয়েকজন ডায়নামিক ডাক্তাররা দিন-রাত নিরসলস প্রচেষ্টা চালিয়ে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আরিফুল ইসলাম খান বলেন, উপজেলা পর্যায়ে মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের অঙ্গীকার বাস্তবায়নে আমাদের জন্য এটি একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। আমরা আশাবাদী যে, আমাদের একঝাঁক তরুণ চিকিৎসকের আন্তরিক প্রচেষ্টায় প্রান্তিক পর্যায়ে সর্বোচ্চ স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে পারবো। স্থানীয় সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. সামিউল ইসলাম সাদী এবং মহাপরিচালক এবিএম খুরশিদ আলমের এই ভূমিকার জন্যই এই তিনটি সেবা ইউনিট চালু করা সম্ভব হয়েছে।
(ঢাকাটাইমস/১৭ অক্টোবর/ইএইচ)

মন্তব্য করুন