ভারতে ৯ মাস কারাভোগের পর দেশে ফিরেছে একই পরিবারের ৪ সদস্য

ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
 | প্রকাশিত : ২৭ নভেম্বর ২০২৩, ১৮:১৬

অনুপ্রবেশের দায়ে ভারতে নয় মাস কারাভোগের পর দেশে ফিরেছেন টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার গাবসারা ইউনিয়‌নে‌র রামপুর গ্রা‌মের সুজা মিয়ার পরিবারের ৪ সদস্য।

ভারতের গুয়াহাটিতে অবস্থিত বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনের মাধ্যমে রবিবার দুপুরে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের ডাউকি থেকে বাংলাদেশের তামাবিল সীমান্ত চেকপোস্ট দিয়ে দেশে ফিরেছেন তারা।

এর আগে ভারতে পাচার হওয়া সুজা মিয়ার স্ত্রী দুই মেয়ে ও এক শিশু সন্তানসহ পরিবারের ৪ সদস্যের দেশে ফিরে আসার আকুতি তুলে ধরে সংবাদ প্রচার করা হলে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক মাইগ্রেশন তাদেরকে দেশে ফেরত আনার কাজ শুরু করে। পরে স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং ভারতের হাইকমিশনের সহযোগিতায় তাদের ফিরিয়ে আনা হয়।

ফিরে আসা একই পরিবারের চার সদস্যকে হস্তান্তরের সময় ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের পক্ষ থেকে জরুরি সহায়তা হিসেবে খাবার, জরুরি কাউন্সেলিং সেবা ও অর্থ সহায়তা প্রদান করা হয়।

এসব সহায়তা তুলে দেন সিলেটের তামাবিল ইমিগ্রেশন পুলিশ চেকপোস্টের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রনু মিয়া এবং ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম কর্মকর্তারা।

এসময় ভারতের মেঘালয় রাজ্যের জোয়াই ডিস্ট্রিক্ট জেলের ডেপুটি সুপারিন্টেন্ডেন্ট বাটস্কামেম ননিবারি, ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের উপ-ব্যবস্থাপক শায়লা শারমিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ফেরত আসা মা ও মেয়ে বলেন, চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে দালালরা আমাদের ভারতে পাচার করে দেয়। পরে বিক্রির উদ্দেশ্যে মেঘালয়ের একটি এলাকায় রাখার সময় পুলিশ আমাদের আটক করে।

এরপর সেখানকার আদালত ভারতে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশের দায়ে আমাদের ৯ মাসের কারাদন্ড দিয়ে জোয়াই জেলা কারাগারে পাঠিয়ে দেয়।

২০২২ সালের মার্চ মাসে ভারতের জাওয়াই জেলা কারাগার থেকে এক কর্মকর্তার ফোন থেকে সুজা মিয়ার মেয়ে সুজা মিয়াকে বিষয়টি জানায়।

এ নিয়ে পত্রিকায় সংবাদ প্রচার হলে ব্র্যাক মাইগ্রেশন তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেয়।

এদিকে স্ত্রী সন্তানদের ফিরে পেয়ে আনন্দে কেঁদে ফেলেন সুজা মিয়া। দীর্ঘদিন পর স্ত্রী-সন্তানদের ফেরত পেয়ে খুবই ভালো লাগছে বলে জানান তিনি।

ফেরত আসা দুই মেয়ের একজন বলেন, স্বপন নামে এক যুবকের সঙ্গে আমার কথা হতো। একপর্যায়ে প্রেমের সম্পর্ক হয়। আমার পরিবারের অভাবের কথা জেনে স্বপন আমাকে চাকরির প্রলোভন দেখায়। ব্যাপারটি আমার মাকে বললে তিনিও বিশ্বাস করেন। কিন্তু স্বপন মানবপাচারের দালাল এটি জানা ছিল না।

তামাবিল ইমিগ্রেশন পুলিশ চেকপোস্টের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রনু মিয়া বলেন, আমরা প্রায়ই এই ধরণের ঘটনা দেখতে পাই। এই ধরনের ঘটনা বন্ধ করতে আরও সচেতনতা প্রয়োজন বলে জানান তিনি।

ভারতের মেঘালয় রাজ্যের জোয়াই ডিস্ট্রিক্ট জেলের ডেপুটি সুপারিন্টেন্ডেন্ট বাটস্কামেম ননিবারি বলেন, দুই প্রান্তের দালালদের খপ্পরে পড়ে বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে অনেকে ভারতে অনুপ্রবেশ করে আটক হয়।

ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম ও ইয়ুথ প্ল্যাটফর্মের অ্যাসোসিয়েট ডিরেক্টর শরিফুল হাসান বলেন, ব্র্যাক নিরাপদ অভিবাসন এবং মানবপাচার প্রতিরোধ ও প্রতিকারে কাজ করে যাচ্ছে।

প্রসঙ্গত, হতদরিদ্র সুজা মিয়ার ছোট মেয়ে গার্মেন্টসে কাজ করার সুবাধে সিলেটের স্বপন ও মেসবা উদ্দিনের (মানবপাচারকারী হিসেবে অভিযুক্ত) সঙ্গে পরিচয় হয়। পরে সুজা উদ্দিনের স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক শিশু ছেলেকে ভারতের কাশ্মীরে ভালো বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখায়। দালালদের কথা মতো ২০২১ সালে ঈদ-উল ফিতরের সপ্তাহখানেক ঢাকায় চলে যায় তারা। ঢাকা থেকে সিলেট গেলে স্বপন ও মেসবা উদ্দিন তাদেরকে ভারতে পাচার করে দেয়।

(ঢাকা টাইমস/২৭নভেম্বর/পিএস/এসএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

ফরিদপুরে রিকশা চালকদের মাঝে ছাতা-পানি বিতরণ জেলা প্রশাসনের

এক জমি পরিষ্কারের আগুনে পুড়ল আরও ২৫ বিঘার ভুট্টা

জানাজায় গিয়ে আইফোন হারালেন ধর্মমন্ত্রী

উপজেলা নির্বাচন: নোয়াখালীর সুবর্ণচরে প্রতিপক্ষের কর্মীকে পিটিয়ে জখম করলেন চেয়ারম্যান

ইসলামপুরে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় উপজেলা চেয়ারম্যান হলেন আ. লীগের সালাম

মাছের সঙ্গে এ কেমন শত্রুতা

পাথরঘাটায় সাংবাদিকদের নামে সাইবার মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন 

চুয়াডাঙ্গায় ৬ বছরের শিশু ধর্ষণ মামলায় বৃদ্ধ গ্রেপ্তার

তীব্র গরমে ধান কাটতে গিয়ে কৃষকের মৃত্যু

শিশু ঝুমুরকে ধর্ষণ ও হত্যার বর্ণনা দিতে গিয়ে কাঁদলেন র‌্যাব কর্মকর্তা

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :