ভোট ঘিরে জঙ্গিতে চোখ এটিইউর

হাসান মেহেদী, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ০৫ জানুয়ারি ২০২৪, ০৮:৩০ | প্রকাশিত : ০৫ জানুয়ারি ২০২৪, ০৮:২৩

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে ঢাকাসহ গোটা দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ব্যস্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটের সদস্যরা। এই সুযোগে জঙ্গিরা যেন মাথাচাড়া দিতে না পারে সেদিকে চোখ রাখছে জঙ্গি দমনে গঠিত পুলিশের বিশেষায়িত দল এন্টি টেররিজম ইউনিটÑ এটিইউ।

ভোট ঘিরে জঙ্গি হামলার আশঙ্কা আছে নাকি নেই- সে প্রশ্নের চেয়েও বড় বিষয় হচ্ছে জঙ্গিরা যাতে নির্বাচন ঘিরে সহিংস হয়ে উঠতে না পারে, তা নিশ্চিত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ইউনিটটি।

এটিইউর একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ঢাকা টাইমসকে বলেন, ভোট ঘিরে তাদের ৪৫১ জন সদস্য মাঠপর্যায়ে কাজ করছেন। কোথাও কোনো জঙ্গি তৎপরতা কিংবা জঙ্গি হামলার আশঙ্কা আছে কিনা- সেদিকেই নজরদারি করা হচ্ছে। চোখ রাখা হচ্ছে আত্মসমর্পনকারী জঙ্গি এবং জেল থেকে ছাড়া পাওয়া জঙ্গিদের গতিবিধির ওপর।

প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ২০১৬ সাল থেকে পর্যন্ত গত আট বছরে ৩১ জন জঙ্গি আত্মসমর্পণ করেছে। আত্মসমর্পণের পর তাদের অপরাধ অনুযায়ী আইন মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আত্মসমর্পণের পরও তাদের জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়া ঠেকাতে নজরদারি রাখা হয়েছে।

অন্যদিকে জেল থেকে ছাড়া পাওয়া জঙ্গিদের দ্বারা নতুন কোনো হামলার আশঙ্কা রয়েছে কিনা সেসব বিষয়ে এটিউর গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া নতুন কোন জঙ্গি কোনো ধরনের তৎপরতা চালানোর চেষ্টা করছে কিনা তা শনাক্তে এটিউ ইন্টিলিজেন্স (গোয়েন্দা) কাজ করছে। জেলে থাকা জঙ্গিদের সঙ্গে কার কার যোগাযোগ হচ্ছে- সে বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। এছাড়াও অনলাইন মাধ্যমে বর্তমানে জঙ্গিদের তৎপরতা বেশি থাকায় এটিউ সদস্যরা অনলাইন মাধ্যমগুলোতে মনিটরিং বাড়িয়েছে।

এন্টি টেরোরিজম ইউনিটের পুলিশ সুপার (মিডিয়া এন্ড অ্যাওয়ারনেস) ব্যারিস্টার মাহফুজুল আলম রাসেল ঢাকা টাইমসকে বলেন, নির্বাচন ঘিরে দেশে জঙ্গি হামলার কোনো আশঙ্কা বা হুমকি আমরা এই মুহূর্তে দেখছি না। ভোটের মাঠে জঙ্গি তৎপরতা নিয়ে আমাদের ইন্টেলিজেন্স কাজ করছে। জঙ্গি তৎপরতা রোধে সারাদেশে নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় এন্টি টেরোরিজম ইউনিট প্রস্তুত রয়েছে।

গত ২৯ ডিসেম্বর রাজধানীর ডেমরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে নব্য জেএমবির নেতাসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করে ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেনÑ মো. ইউসুফ জহিরুল ইসলাম ওরফে জহির।

সিটিটিসি সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের অক্টোবর মাস থেকে ২৮ ডিসেম্বর দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে সিটিটিসি নব্য জেএমবির ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা পুলিশকে জানিয়েছে, নব্য জেএমবির শীর্ষ নেতা ইউসুফ এবং অপারেশনাল কমান্ডার হিসেবে কাজ করে আবু বকর। এরপর ইউসুফ হুজুর আবু বকরকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর আবু বকর পুলিশকে জানিয়েছে, গত দুর্গাপূজায় পূজামণ্ডপে হামলার পরিকল্পনা ছিল। পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা বিভিন্ন পূজামণ্ডপ রেকি করেন এবং বোমা তৈরির সরঞ্জাম সংগ্রহ করেন। কিন্তু ক্রমাগত গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত থাকার কারণে তাদের পরিকল্পনা সফল হয়নি।

এর আগে ২৮ ডিসেম্বর খুলনায় অভিযান চালিয়ে জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ্যাব। তারা হলেনÑ ঠাকুরগাঁওয়ের ইলিয়াস দাস আব্দুল, পাবনার খয়েরসুতি গ্রামের সাব্বিরুল ইসলাম সাব্বির গোপালগঞ্জের কুরপালা গ্রামের শামীম লস্কর।

্যাব সূত্রে জানা গেছে, ওই অভিযানে অজ্ঞাতনামা আরও তিন-চারজন সদস্য পালিয়ে যায়। তারা দীর্ঘদিন দেশের বিভিন্ন স্থানে জঙ্গি তৎপরতা চালিয়ে আসছে। বিভিন্ন সময় স্থান পরিবর্তন করে আত্মগোপনে ছিলেন গ্রেপ্তারকৃতরা।

(ঢাকাটাইমস/০৫ জানুয়ারি/এইচএম/আরআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিশেষ প্রতিবেদন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :