শৈত্যপ্রবাহের দাপটে দুর্ভোগে খেটে খাওয়া মানুষ

বয়ে যাওয়া মৃদু শৈত্যপ্রবাহে হিমেল হাওয়া আর কনকনে শীতে কাঁপছে সারা দেশ। টানা কয়েকদিন ধরে দেখা নেই সূর্যের। পৌষের বিদায় লগ্নে উত্তরের শিরশিরে ঠান্ডা বাতাস আর ঘন কুয়াশার হিমেল হাওয়ায় হাড় কাঁপানো শীতে এখন মানিকগঞ্জের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় দুর্ভোগ বেড়েছে এ অঞ্চলের শ্রমজীবী ও দরিদ্র পরিবারের মানুষগুলোর। শীত থেকে বাঁচতে বিভিন্ন স্থানে অনেককে আগুন পোহাতে দেখা গেছে। শিশু ও বৃদ্ধরা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। রোগবালাই বেড়ে যাওয়ায় ভিড় বাড়ছে হাসপাতালে।
জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ঘন কুয়াশায় আবৃত ভোর থেকেই। বৃষ্টির মতো ঝরছে কুয়াশার শিশির। একদিকে প্রচণ্ড শীত, আরেকদিকে ঘন কুয়াশার আধার। তীব্র শীতে বিপাকে পড়েছে নিম্নআয়ের মানুষ থেকে শুরু করে শিশু ও বয়োজ্যেষ্ঠরা।
হরিরামপুর উপজেলার গালা ইউনিয়নের আলমদী গ্রামের দিনমজুর নজরুল ইসলাম জানান, তীব্র শীত ও কুয়াশার কারণে ৩ দিন যাবত কাজ পাচ্ছি না। শীতের কারণে আমাদের আয় রোজগারও কমে গেছে। বউ পোলাপান নিয়ে খুব কষ্টে দিন যাচ্ছে।
এছাড়াও টানা কয়েক দিনের কনকনে শীতে অনেকাংশে বেড়েছে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিরা জ্বর, সর্দি, কাশি, ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন বলে জানা গেছে।
সোমবার সকালে হরিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরি বিভাগে ২ বছর বয়সী এক শিশুকে নিয়ে সেবা নিতে আসেন দিয়াপাড় গ্রামের নূর মোহাম্মদ। তিনি বলেন, সর্দি-জ্বর হওয়ায় হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। এখন ডাক্তার ভর্তি করানোর পরামর্শ দিয়েছেন।
উপজেলার ঝিটকা বাজারের সবজি বিক্রেতা মকবুল হোসেন (৫০) বলেন, কয়েকদিনের শীতে অবস্থা খুবই খারাপ। শীতে কষ্ট হলেও দোকান খুলতে হবে। দোকানে না আসলে কি খামু বাজান।
হাঁড় কাপানো এই শীতে মানুষের পাশাপাশি গবাদিপশু-পাখিরও কাহিল অবস্থা। এবং ঘন কুয়াশার কারণে বিঘ্ন ঘটছে সড়কে যান চলাচলে, ফলে দুর্ভোগে পড়ছেন যাত্রীরা। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়ছেন শ্রমজীবী ও ছিন্নমূল মানুষ। শীতে কাজ না পাওয়ায় মানবেতর জীবনযাপন করছে খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষগুলো।
উপজেলার ঝিটকা বাসস্ট্যান্ড এলাকার অটোরিকশাচালক আরিফ মিয়া বলেন, অন্য বছরের তুলনায় হরিরামপুরে শীত এবার অনেক বেশি, সঙ্গে ঠান্ডা বাতাস। শীতের কারণে যাত্রীও কম হচ্ছে। আয় রোজগারও কম হচ্ছে। ঠান্ডা বাতাস ও কুয়াশার কারণে গাড়ি চালানোও কষ্টকর হয়ে গেছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. মানিকুজ্জামান বলেন, এ বছর আমরা ৫৩৩০টি কম্বল পেয়েছি। সুবিধাভোগীদের তালিকা তৈরি হচ্ছে। তালিকা তৈরি হলেই দিয়ে দিবো। পর্যায়ক্রমে আরও আসবে।
(ঢাকাটাইমস/১৫জানুয়ারি/প্রতিনিধি/জেডএম)

মন্তব্য করুন