দিনাজপুরে হাড় কাঁপানো শীতের সঙ্গে বেড়েছে কুয়াশার দাপট

নিজস্ব প্রতিবেদক, দিনাজপুর
| আপডেট : ১৬ জানুয়ারি ২০২৪, ১৮:৪০ | প্রকাশিত : ১৬ জানুয়ারি ২০২৪, ১১:২৭

দিনাজপুরে হাড় কাঁপানো শীতের সঙ্গে বেড়েছে কুয়াশার দাপট। হিমেল বাতাসে আর শীতে কাবু মানুষ ও প্রাণিকুল। ঘটেছে স্বাভাবিক জীবনের ছন্দ পতন। চরম দুর্ভোগে পড়েছেন শ্রমজীবী মানুষ। কামাই-রোজগার কমে গেছে তাদের। গরম কাপড়ের অভাবে অনেকে খড়কুটো জ্বালিয়ে শরীরে উষ্ণতা নিচ্ছেন।

দিনাজপুর আঞ্চলিক আবহাওয়া দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান আসাদ জানিয়েছেন, আজ মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) জেলার তাপামাত্রা ১১ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়া রেকর্ড করা হয়েছে। তাপমাত্রার ডিগ্রি বাড়লেও হিমেল হাওয়ায় বেড়েছে শীতের তীব্রতা।

শীতের প্রকোপে বেড়েছে শীতজনীত রোগ। হাসপাতালগুলোতে রোগী সামলাতে হিমসিম খাচ্ছেন নার্স এবং চিকিৎসকরা।

দিনাজপুর জেলা সিভিল সার্জন এএইচএম বোরহানুল ইসলাম সিদ্দিকী জানিয়েছেন, তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় শীতজনিত রোগ আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। এ জন্য শিশু ও বয়স্কদের ঠান্ডা থেকে দূরে রাখাসহ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে শিশু ও বয়স্কদের বের না হওয়াই ভালো।

দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. মো. হাবিবুর রহমান বলেন, এই সময়ে ঠাণ্ডাজনিত সমস্যাগুলোই বেশি দেখা যায়। যেমন কাশি, অ্যাজমার প্রকোপ বেড়ে যাওয়া, সাময়িক জ্বর, কোল্ড অ্যালার্জি হয়ে থাকে। এ সময় বাতাসে ধুলাবালি বেশি থাকায় অনেকে অ্যালার্জি বা শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যা দেখা যায়।

বিশেষ করে শিশু ও বয়স্ক মানুষদের কাশি, কোল্ড অ্যালার্জির মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। ঠিক সময়ে শনাক্ত করা না গেলে সেটা অনেক সময় নিউমোনিয়াতেও রূপ নিতে পারে। তাই এই সময়ে অভিভাবকদের সতর্ক থাকতে হবে। প্রয়োজন ছাড়া বয়স্ক এবং শিশুদের বাইরে নেওয়া যাবে না। উষ্ণতায় রাখতে হবে।

দিনাজপুর জেলা ভেটেরিনারি অফিসার ড. আশিকা আকবর তৃষ্ণা জানায়, এ সময় গরু ছাগল, হাঁস-মুরগিসহ অন্যান্য গবাদি পশুপাখির নানা রকমের রোগবালাই হয়ে থাকে। গবাদি পশুপাখির শীতকালীন কিছু কমন রোগ হয়। একটু সাবধানতা অবলম্বন করলে এসব সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়।

এই শীতকালীন সময়ে গরুর এফএমডি ক্ষুরারোগ এবং ছাগলের পিপিআর হয় বেশি। ক্ষুরারোগ একটি ভাইরাসজনিত মারাত্মক সংক্রামক ব্যাধী। দুই ক্ষুরওয়ালা সব প্রাণিই এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। তবে আমাদের দেশে সাধারণত গরু, ছাগল, মহিষ ও ভেড়া এ রোগের শিকার হয় বেশি। বাতাসের সাহায্যে এ রোগের ভাইরাস দূরবর্তী এলাকায় ছড়িয়ে পড়তে পারে।

শীতে আবহাওয়াজনিত এবং ঠান্ডার কারণে আরও অনেক রোগ সমস্যা দেখা দেয়। তাই, গবাদি পশু এবং বাড়ির পোষা প্রাণি কুকুর-বেড়ালের এ সময় যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। ঠান্ডা যাতে না লাগে এজন্য লক্ষ্য রাখতে হবে। ছট, ছালা, মোটা কাপড় দিতে ঢাকিয়ে রাখতে হবে এসব অবলা প্রাণিকূলকে। প্রয়োজনে মাচায় রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।

এদিকে দিনাজপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) দেবাশীষ চৌধুরী জানিয়েছেন, শীত নিবারণে জেলার তেরো উপজেলার ১০৩টি ইউনিয়ন ও নয়টি পৌরসভার মাধ্যমে ইতোমধ্যে ৬২ হাজার ৩৮০ পিস কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। জেলার চাহিদা অনুযায়ী আরও ৫০ হাজার পিস কম্বল এবং শিশুদের গরম কাপড় চেয়ে ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে বিশেষ চাহিদা পাঠানো হয়েছে।

(ঢাকাঢাইমস/১৬জানুয়ারি/প্রতিনিধি/জেডএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :